বাংলাদেশের সবচেয়ে দুর্বল সরকার বর্তমান আওয়ামী লীগ সরকার বলে মন্তব্য করে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায় বলেন, একটা ঘর নষ্ট হলে চারদিক থেকে খরকুড়া এনে ঠেকা দেয়। এ সরকার টিকে আছে কয়েকটা দেশ টাকা দেয় বলে। এদিকে চীন আছে আর ওইদিকে ভারত আছে, তারাই টিকিয়ে রেখেছে। কতদিন তারা টিকিয়ে রাখতে পারবে তা নিয়েও সন্দেহ আছে।
বৃহস্পতিবার (২০ এপ্রিল) নয়াপল্টন বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের নিচে আলোচনা সভা ও ঈদ উপহার বিতরণ অনুষ্ঠানে এসব কথা বলেন তিনি। অনুষ্ঠানের আয়োজন করে জাসাস ঢাকা মহানগর দক্ষিণ।
গয়েশ্বর বলেন, আমাদের সামর্থ্য সীমিত, ১৫ বছর ধরে বিরোধী আছি। তারপরও যতটুকু সামর্থ্য আছে আমাদের নেতার নির্দেশ আছে মানুষের পাশে দাঁড়ানোর।
সাবেক এ মন্ত্রী বলেন, শেখ হাসিনার পররাষ্ট্রমন্ত্রী ভারতে গিয়ে বলেছেন, আওয়ামী লীগ সরকারকে যেন আবার ক্ষমতায় রাখে। ভারত কীভাবে এ সরকারকে ক্ষমতায় রাখে? ভারতে তো আর নির্বাচন হচ্ছে না! সেখানে এখন ক্ষমতায় আছেন নরেন্দ্র মোদি। পশ্চিমবঙ্গের নির্বাচনে কত বড় আছাড় খেয়েছেন তিনি। তারই দেশের অঙ্গরাজ্যে কে সরকারে থাকবে সেটা তিনি নির্ধারণ করতে পারেন না, অথচ বাংলাদেশে কে ক্ষমতায় থাকবে সেটা নির্ধারণ করবেন তিনি?
সরকার বিএনপিকে ভয় পায় বলে দাবি করে গয়েশ্বর বলেন, এ কারণে ভয় পায়, কারণ বিএনপির জনসমর্থন এত বেশি যে একটা সুষ্ঠু নির্বাচন হলে তারা ক্ষমতায় থাকতে পারবে না। যেখানে গণতন্ত্র সেখানে আওয়ামী লীগ থাকতে পারে না। আর আওয়ামী লীগ যেখানে থাকে সেখানে গণতন্ত্র গুম হয়।
তিনি আরও বলেন, গত ১৫ বছররে ইউনিয়ন পরিষদ থেকে জাতীয় নির্বাচন কোথাও মানুষ ভোট দিতে পারেনি। মানুষ ঘুম থেকে উঠেই দেখে তার ভোট হয়ে গেছে। যেসব পুলিশের মানুষের ভোট রক্ষা করার কথা, তারাই অন্যের ভোট দিয়ে দেয়। পুলিশের পক্ষ থেকে কখনো এটা অস্বীকার করা হয়নি। কেন তারা ভোট দিয়ে দেয়? তাদের চাকরি বাঁচানোর জন্য? আসলে তাদের এটা করার জন্য বাধ্য করা হচ্ছে।
এ দেশের লুটেরাগোষ্টী চায় শেখ হাসিনা আজীবন ক্ষমতা থাকুক বলে উল্লেখ করে বিএনপির এ নেতা বলেন, তারা যে লুটপাটের টাকা বিদেশে পাচার করেছে, তার বিচার হবে না।
সরকার দেশের মানুষকে জঙ্গি বানানোর চেষ্টা করছে বলে দাবি করে গয়েশ্বর বলেন, এ জঙ্গিবাদ রুখতে হলে তাদের বিকল্প নেই। তাই মাঝে-মাঝে তারা জঙ্গি ধরে। দুই-তিন মাস অন্ধকারে রাখে। দাড়ি, চুল কাটাঁ নেই। এরপর একটি বাড়িতে নিয়ে যাওয়া হয়, ওই বাড়ির লোকেরা জানতে না যে তারা এ বাড়িতে থাকত। অর্থাৎ এ নাটকের মধ্যে দিয়ে তারা এতদিন টিকে ছিল, এখন বহির্বিশ্ব বোঝতে পেরেছে, এসব ধোঁকাবাজি ও নাটক। এ কারণে গণতান্ত্রিক বিশ্ব এ সরকারের কর্মকাণ্ডের ওপর নজরদারি রাখছে। মাঝে-মাঝে মন্তব্য করছে। তারা কিন্তু আমাদের (বিএনপির) পক্ষে কথা বলছে না। তারা গণতন্ত্রের নিয়ম অনুযায়ী, মানবাধিকার যে লঙ্ঘন হচ্ছে সেই দৃষ্টিভঙ্গি থেকে বাংলাদেশ কোন পর্যায়ে তা নিয়ে মন্তব্য করছেন। এখানে আমরা কারো কাছে বিচার দিতে যাইনি, কেউ আমাদের ক্ষমতায় এনে দেক সেটাও আমরা চাই না।
এসময় আরও উপস্থিত ছিলেন জাসাদের নেতা মো. লিয়াকত আলী, মো. জাকির হোসেন, জাবেদ আহমেদ কিসলু, মো. ইব্রাহিম খলিল প্রমুখ।