ট্রেনে ঈদযাত্রা : কমলাপুরে যাত্রীদের উপচেপড়া ভিড়

মত ও পথ ডেস্ক

ঈদযাত্রা
ফাইল ছবি

এবার ট্রেনযোগে ঈদযাত্রা শুরু হয় ১৭ এপ্রিল থেকে। এরপর প্রথম তিনদিন (সোম, মঙ্গল ও বুধবার) যাত্রীর তেমন ভিড় দেখা যায়নি। তবে ভিড় বেড়েছে বৃহস্পতিবার (২০ এপ্রিল) থেকে। আর শুক্রবার (২১ এপ্রিল) ভোর থেকেই সেই ভিড় আরও বাড়ে। এমনকি ট্রেনের ছাদেও দেখা গেছে শত শত যাত্রী।

ঈদযাত্রার শেষদিন হওয়ায় এদিন ভোরেই যাত্রীর চাপ তৈরি হয় কমলাপুর রেল স্টেশনে। যাত্রীর চাপ বাড়লেও টিকিট দেখিয়ে তবে স্টেশনে প্রবেশ করতে হচ্ছে। যারা অনলাইনে টিকিট সংগ্রহ করতে পারেননি, তারা তাৎক্ষণিকভাবে স্ট্যান্ডিং টিকিট নিয়ে স্টেশনে প্রবেশ করছেন। এরমধ্যে ধূমকেতু ও নীলসাগর এক্সপ্রেসের ছাদে দেখা গেছে যাত্রীদের। অন্যদিকে যাত্রীর নিরাপত্তায় র‌্যাব-পুলিশের সঙ্গে রয়েছেন অন্যান্য আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা।

কমলাপুর স্টেশনে কথা হয় সজন আহমেদ নামে এক যাত্রীর সঙ্গে। ধূমকেতু ট্রেনে গ্রামের বাড়ি রাজশাহী যাবেন তিনি। বলেন, অনলাইনে শেষদিনের টিকিট পেয়েছি। আজ গ্রামে যাবো এটা ভাবতে ভালো লাগছে। গ্রামে পরিবারের সঙ্গে ঈদ করা মানে ঈদের খুশি কয়েকগুণ বেড়ে যাওয়া।

একই অনুভূতির কথা জানান তালেব আলী। তিনি বলেন, ঘরে ফেরার পথে ভোগান্তি না হলে খুব ভালো লাগে। সড়কে ইতোমধ্যে যানজট শুরু হয়েছে। এজন্য ট্রেন যাত্রা ভালো, দ্রুত সময়ে পরিবারের কাছে যাওয়া যায়।

কথা হয় সুন্দরবন এক্সপ্রেসের যাত্রী ইয়াছিন জব্বারের সঙ্গে। তিনি সেহরি খেয়েই স্টেশনে এসেছেন। অথচ তার ট্রেন সকাল সোয়া ৮টায়। ইয়াছিন জব্বার বলেন, সেহরির পর ঘুমিয়ে গেলে আর বাড়ি যাওয়া হবে না। তাই সেহরির পরই স্টেশনে এসেছি।

কমলাপুর স্টেশন ঘুরে দেখা যায়, এদিন টিকিট থাকা সাপেক্ষ যাত্রীদের স্টেশনে প্রবেশের অনুমতি দেওয়া হচ্ছে। আর যারা অনলাইনে টিকিট সংগ্রহ করতে পারেননি, তারা ট্রেন ছাড়ার আগ মুহূর্তে কাউন্টার থেকে স্ট্যান্ডিং টিকিট সংগ্রহ করছেন। যদিও স্ট্যান্ডিং টিকিট নির্দিষ্ট হওয়ায় অনেকেই সংগ্রহ করতে পারছেন না। ফলে তাদের ট্রেনযোগে এবার গ্রামে যাওয়া হচ্ছে না। অন্য কোনো বাহনে তাদের নিজ নিজ গ্রামে যেতে হবে।

ট্রেন যাত্রার দুই ঘণ্টা আগে স্ট্যান্ডিং টিকিট দেওয়া হয়। তবে নিদিষ্ট আসনের শতকরা ২৫ ভাগ টিকিটের বেশি বিক্রি করা হয় না। এতে অনেকেই টিকিট কাটতে না পেরে স্টেশন ত্যাগ করছেন।

কমলাপুর রেলওয়ে স্টেশন ম্যানেজার মাসুদ সারওয়ার বলেন, আজ শেষদিন হওয়ায় যাত্রীর চাপ বেশি। তবে চাপ থাকলে শৃঙ্খলার মধ্যদিয়ে সবাই স্টেশনে প্রবেশ করছেন। এখন পর্যন্ত আমাদের ট্রেন সময়মতো ছেড়েছে। এতে খুশি যাত্রীরাও।

এবারের ঈদযাত্রায় উত্তরাঞ্চল থেকে ছেড়ে আসা সাতটি ট্রেন রাজধানীর বিমানবন্দর রেলস্টেশনে থামছে না। ট্রেনগুলো সরাসরি কমলাপুর চলে আসছে। ট্রেনের শিডিউল বিপর্যয় ঠেকাতে এমন উদ্যোগ। ঈদযাত্রা শুরুর দিন অর্থাৎ ১৭ এপ্রিল থেকে ঈদের আগের দিন শুক্রবার পর্যন্ত ঢাকাগামী একতা এক্সপ্রেস, দ্রুতযান, পঞ্চগড়, নীলসাগর, কুড়িগ্রাম, লালমনি ও রংপুর এক্সপ্রেস ট্রেন ঢাকা বিমানবন্দর স্টেশনে যাত্রাবিরতি করবে না।

এছাড়া ঈদুল ফিতর উপলক্ষে আন্তঃদেশীয় মিতালী এক্সপ্রেস ট্রেন ১৮ থেকে ২৭ এপ্রিল পর্যন্ত এবং মৈত্রী এক্সপ্রেস ট্রেন ২০ থেকে ২৭ এপ্রিল পর্যন্ত চলাচল বন্ধ থাকবে। তবে আন্তঃদেশীয় বন্ধন এক্সপ্রেস যথারীতি চলবে।

এবার ঈদযাত্রার জন্য ৭ এপ্রিল থেকে অনলাইনে ট্রেনের অগ্রিম টিকিট বিক্রি শুরু হয়। ওইদিন বিক্রি হয় ১৭ এপ্রিলের টিকিট। এরপর ৮ এপ্রিল দেওয়া হয় ১৮ এপ্রিলের টিকিট। ৯ এপ্রিল পাওয়া যায় ১৯ এপ্রিলের, ১০ এপ্রিল দেওয়া হয় ২০ এপ্রিলের এবং ১১ এপ্রিল বিক্রি হয় ২১ এপ্রিলের টিকিট।

আর ঈদের ফিরতি যাত্রার টিকিট বিক্রি শুরু হয় ১৫ এপ্রিল থেকে। এদিন বিক্রি করা হয় ২৫ এপ্রিলের টিকিট। এরপর ১৬ এপ্রিল দেওয়া হয় ২৬ এপ্রিলের, ১৭ এপ্রিল পাওয়া যায় ২৭ এপ্রিলের টিকিট, ১৮ এপ্রিল দেওয়া হয় ২৮ এপ্রিলের টিকিট, ১৯ এপ্রিল ২৯ এপ্রিলের এবং ২০ এপ্রিল বিক্রি করা হয় ৩০ এপ্রিলের টিকিট।

শেয়ার করুন