মহামারির আড়াই বছর পেরিয়ে গেলেও শ্বাসতন্ত্রের প্রাণঘাতী রোগ করোনায় বিশ্বজুড়ে অব্যাহত আছে দৈনিক সংক্রমণ-মৃত্যু। তবে প্রথম দুই বছর, অর্থাৎ ২০২০ ও ’২১ সালের তুলনায় চলতি বছর অনেক কমে এসেছে এ রোগে আক্রান্ত হওয়া ও প্রাণহানির হার।
মহামারি শুরুর পর থেকে এ রোগে আক্রান্ত, মৃত্যু ও সুস্থতার হালনাগাদ সংখ্যা প্রকাশকারী ওয়েবসাইট ওয়ার্ল্ডোমিটার্সের তথ্য অনুযায়ী, বৃহস্পতিবার বিশ্বে করোনা পজিটিভ হিসেবে শনাক্ত হয়েছেন ৮২ হাজার ৭৬৫ জন এবং কোভিডজনিত অসুস্থতায় ভুগে মৃত্যু হয়েছে ৩৯২ জনের। এর বাইরে করোনা থেকে সুস্থ হয়ে উঠেছেন ১ লাথ ৪ হাজার ৪ জন।
ওয়েবসাইটির তথ্য বলছে, বৃহস্পতিবার বিশ্বে করোনায় দৈনিক মৃত্যুর হিসেবে শীর্ষে ছিল জার্মানি, আর এদিন একক দেশ হিসেবে এই রোগে সবচেয়ে বেশি সংখ্যক মানুষ আক্রান্ত হয়েছেন দক্ষিণ কোরিয়ায়।
বৃহস্পতিবার জার্মানিতে কোভিডজনিত অসুস্থতায় মৃত্যু হয়েছে ১০৪ জনের এবং করোনা পজিটিভ হিসেবে শনাক্ত হয়েছেন ২ হাজার ২৩৭ জন।
একই দিন ১৬ হাজার ৫০৮ জন নতুন আক্রান্ত রোগী নিয়ে দৈনিক আক্রান্তের হিসেবে শীর্ষে অবস্থান নিয়েছে দক্ষিণ কোরিয়া। পাশাপাশি, এদিন দেশটিতে করোনায় মৃত্যু হয়েছে ৬ জনের।
জার্মানি এবং ভারত ব্যতীত বিশ্বের আরও যেসব দেশে শুক্রবার মৃত্যু ও সংক্রমণের উচ্চহার দেখা গেছে, সেসব হলো— যুক্তরাষ্ট্র (মৃত ৭৮ জন, নতুন আক্রান্ত ৮ হাজার ৬১২ জন), ভারত (মৃত ৪০ জন, নতুন আক্রান্ত ১২ হাজার ৫৯১ জন) রাশিয়া (মৃত ৩৮ জন, নতুন আক্রান্ত ৬ হাজার ৩০৫ জন) এবং জাপান (মৃত ২২ জন, নতুন আক্রান্ত ১২ হাজার।
বিশ্বে বর্তমানে সক্রিয় করোনা রোগীর সংখ্যা ২ কোটি ৪ লাখ ৯২ হাজার ৬৬৬ জন। এদের মধ্যে করোনার মৃদু উপসর্গ বহন করছেন ২ কোটি ৪ লাখ ৫৩ হাজার ১৫৮ জন এবং গুরুতর অসুস্থ অবস্থায় আছেন ৩৯ হাজার ৫০৮ জন।
২০১৯ সালের ডিসেম্বরে চীনের হুবেই প্রদেশের উহান শহরে বিশ্বের প্রথম করোনায় আক্রান্ত রোগী শনাক্ত হয়। করোনায় প্রথম মৃত্যুর ঘটনাটিও ঘটেছিল চীনে।
তারপর অত্যন্ত দ্রুতগতিতে বিশ্বের বিভিন্ন দেশে ছড়িয়ে পড়তে শুরু করে প্রাণঘাতী এই ভাইরাসটি। পরিস্থিতি সামাল দিতে ২০২০ সালের ২০ জানুয়ারি বিশ্বজুড়ে জরুরি অবস্থা জারি করে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও)।
কিন্তু তাতেও অবস্থার উন্নতি না হওয়ায় অবশেষে ওই বছরের ১১ মার্চ করোনাকে মহামারি হিসেবে ঘোষণা করে ডব্লিউএইচও।
আন্তর্জাতিক বিভিন্ন সংস্থার তথ্য অনুযায়ী, মহামারি শুরুর পর থেকে এ পর্যন্ত বিশ্বে করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন মোট ৬৮ কোটি ৬০ লাখ ৭১ হাজার ৩৫৩ জন এবং এ রোগে মৃত্যু হয়েছে মোট ৬৮ লাখ ৪৫ হাজার ৫৬৪ জনের।
এছাড়া গত প্রায় তিন বছরে করোনায় আক্রান্ত হওয়ার পর সুস্থ হয়ে উঠেছেন মোট ৬৫ কোটি ৮৭ লাখ ৩৩ হাজার ১২৩ জন।