আইপিএলের ১৬তম আসর মোটেও ভালো যাচ্ছিল না দিল্লি ক্যাপিটালসের। টানা পাঁচ হারের পর প্রথম জয়ের দেখা পায় তারকা-মহাতারকাতে পূর্ণ দলটি। এবার অল্প পুঁজি নিয়ে সানরাইজার্স হায়দরাবাদকেও হারিয়ে দিল দিল্লি। এদিকে, টানা দুই ম্যাচে একাদশে থাকলেও কাজে লাগাতে ব্যর্থ হন টাইগার পেসার মুস্তাফিজুর রহমান। ফলে তাকে ছাড়াই এই ম্যাচেও একাদশ সাজায় দিল্লি।
পয়েন্ট টেবিলের তলানিতে থাকা দুই দলের দ্বৈরথে আগে ব্যাট করতে নেমে মনীশ পান্ডে ও অক্ষর প্যাটেলের অবদানে খুঁড়িয়ে খুঁড়িয়ে ১৪৪ রান পর্যন্ত যায় আগে ব্যাটিং করা দিল্লি। সে সম্বল নিয়েই সানরাইজার্স হায়দরাবাদকে তারা হারিয়েছে ৭ রানে। এ নিয়ে টানা তিন ম্যাচে হারল হায়দরাবাদ, আর টানা দুই ম্যাচ জিতল প্রথম ৫ ম্যাচে হারা দিল্লি। অবশ্য নেট-রানরেটের কারণে পয়েন্ট টেবিলে এখনো তলানিতেই আছে দিল্লি।
সোমবার (২৪ এপ্রিল) টস জিতে আগে ব্যাট করার সিদ্ধান্ত নেন দিল্লি অধিনায়ক ডেভিড ওয়ার্নার। অস্ট্রেলিয়ান এই ব্যাটারকে হায়দরাবাদের দর্শকরা অনেক আগে থেকেই চেনেন। এই দলকে আইপিএল ট্রফি জিতিয়েছেন তিনি। একটা সময় কাঁড়ি কাঁড়ি রানও করেছেন তাদের হয়ে। সেই ওয়ার্নার এদিন দিল্লির জার্সিতে অধিনায়ক হয়ে নেমেছিলেন। হায়দরাবাদে ফেরা সুখকর হল না তার। ২০ বলে মাত্র ২১ রান করে ফিরলেন তিনি।
ম্যাচের প্রথম ওভারেই ধাক্কা খায় দিল্লি। তৃতীয় বলে ভুবনেশ্বর কুমার ফেরান ফিল সল্টকে। এরপর ওয়ার্নার এবং মিচেল মার্শ মিলে কিছুটা পরিস্থিতি সামাল দেন। মার্কো জানসেনের প্রথম ওভারেই তাকে চারটি চার মারেন মার্শ। কিন্তু আইপিএলে এই অজি অলরাউন্ডারের ব্যাটেও এবার ছন্দ নেই। নাতারাজনের বলে এলবিডব্লিউ হওয়ার আগে তিনি ১৫ বলে ২৫ রান করেন।
এই ম্যাচে দুর্দান্ত বল করেছেন ওয়াশিংটন সুন্দর। এক ওভারে তিনি ৩ ব্যাটারকে ফিরিয়েছেন। সেখানেই মূলত ভেঙে পড়ে দিল্লি ব্যাটিং লাইনআপ। অষ্টম ওভারের দ্বিতীয় বলে ওয়ার্নার, চতুর্থ বলে সরফরাজ খান এবং ষষ্ঠ বলে তিনি আমান খানকে ফেরান। তাদের হয়ে একমাত্র অক্ষর প্যাটেল (৩৪ বলে ৩৪) ছাড়া আর কেউই থিতু হতে পারেননি। তবে অক্ষরের ইনিংসও খুব ধীরগতির ছিল। স্বাভাবিকভাবে দলের দ্রুত উইকেটের পতনে চাপে ছিলেন তিনি। শেষ পর্যন্ত ৯ উইকেট হারিয়ে ১৪৪ রানে থামে দিল্লির ইনিংস।
রান তাড়ায় পাওয়ার প্লের শেষ ওভারে হ্যারি ব্রুককে হারায় হায়দরাবাদ। এনরিখ নর্কিয়াকে স্কুপ করতে গিয়ে বোল্ড হন ব্রুক। আউট হওয়ার আগে করেন ১৪ বলে ৭ রান। এ মৌসুমে সেঞ্চুরির ঝলক বাদ দিলে নিজেকে সেভাবে মেলে ধরতে পারেননি এই ইংলিশ ব্যাটার।
দিল্লির মতো ব্যর্থ হন হায়দরাবাদের ব্যাটাররাও। রানের গতি না বাড়লেও নিয়মিত উইকেট হারায় তারা। আগারওয়াল ও রাহুল ত্রিপাঠির জুটি ৩৮ রান তুলতেই খেলে ফেলে ৩৯ বল। দুজন ফেরেন পরপর দুই ওভারে-অক্ষরের শিকার ২১ বলে ১৫ রান করা ত্রিপাঠি, ইশান্ত শর্মা বোল্ড করেন ৩৯ বলে ৪৯ রান করা আগারওয়ালকে।
আইপিএলে খেলতে আসার আগে দারুণ ছন্দে ছিলেন এইডেন মার্করাম। কিন্তু টুর্নামেন্টটিতে খেলতে নেমে যেন ব্যাটিংটাই ভুলতে বসেছেন। ধারাবাহিকভাবে রান পাচ্ছেন না। শেষ ৪ ওভারে হায়দরাবাদের প্রয়োজন ছিল ৫১ রান। হেনরিখ ক্লাসেন ও বল হাতে সাফল্য পাওয়া ওয়াশিংটন সুন্দর হায়দরাবাদকে আশা দেন ভালোভাবেই।
নর্কিয়া ও মুকেশ কুমারের পরের ২ ওভারে আসে ২৮ রান। নর্কিয়ার পরের ওভারে আকাশে তুলেছিলেন ক্লাসেন, তবে বেশ খানিকটা পেছনে দৌড়ে নাগাল পেলেও সেটি রাখতে পারেননি মার্শ। ঠিক পরের বলেই অবশ্য ডিপ পয়েন্টে ক্যাচ তোলেন ক্লাসেন, ১৯ বলে ৩১ রান করেই থামতে হয় তাকে।
শেষ ওভারে প্রয়োজন ছিল ১৩ রান। প্রথম ৩ বলে ৩ রান নিতে পারেন সুন্দররা। পরের ২ বলে দুটি সিঙ্গেলের বেশি দেননি মুকেশ, শেষ বলে দেন ডট। তাতেই নিশ্চিত হয় দিল্লির অবিশ্বাস্য জয়।