ঋণের শর্ত হিসেবে জুড়ে দেওয়া সংস্কারের অগ্রগতি দাতা সংস্থা আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল- আইএমএফের প্রতিনিধি দলের কাছে তুলে ধরেছে বাংলাদেশ ব্যাংক। সংস্থাটির দেওয়া শর্ত বিপিএম৬ এর আওতায় নেট ইন্টারন্যাশনাল রিজার্ভ (এনআইআর) গণনা পদ্ধতি ছাড়া অন্যসব শর্ত আগামী জুনের মধ্যে বাস্তবায়ন করবে বাংলাদেশ ব্যাংক।
২৫ এপ্রিল (মঙ্গলবার) আইএমএফের প্রতিনিধি দলের সঙ্গে বৈঠককালে এই অঙ্গীকার ব্যক্ত করেন বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর আব্দুর রউফ তালুকদার। বৈঠকে সংস্কার সম্পর্কিত বিভিন্ন প্রশ্নের জবাব দেন বাংলাদেশ ব্যাংকের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা।
বৈঠক সূত্র জানায়, আইএমএফের সংস্কার প্রস্তাবের মধ্যে রয়েছে- ডলারের একক রেট নির্ধারণ, মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে মুদ্রানীতির ভূমিকা, অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি, জ্বালানিতে ভর্তুকি কমানো, ব্যাংক ঋণের সুদহারের সীমা তুলে দেওয়া, ঋণের যথাযথ ব্যবহার, খেলাপি হ্রাস, ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠান পরিদর্শনে কার্যকরী পরিবর্তন এবং এসব প্রতিষ্ঠানের পর্ষদের ক্ষমতার অপব্যবহার রোধ।
ব্যাংক কোম্পানি আইন সংস্কার প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী নির্ধারিত সময়ের মধ্যেই এসব প্রস্তাব বাস্তবায়নে অঙ্গীকার ব্যক্ত করেন গভর্নর। একই সঙ্গে আন্তর্জাতিক পদ্ধতিতে রিজার্ভ গণনা (এনআইআর) প্রক্রিয়াধীন বলে জানান তিনি। তবে এনআইআর পুরোপুরি বাস্তবায়নে অতিরিক্ত সময় লাগতে পারে বলে প্রতিনিধি দলটিকে জানানো হয়েছে। বৈঠকে আইএমএফের ৪৭০ কোটি ডলার ঋণের ১ম কিস্তির ঋণের অর্থের ব্যবহার, জিডিপি, অর্থনীতির ব্যবস্থাপনা বিষয়ে অগ্রগতি তুলে ধরা হয়।
বৈঠকের বিষয়ে বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্বাহী পরিচালক ও মুখপাত্র মো. মেজবাউল হক বলেন, আমরা আমাদের নিজস্ব প্রয়োজনে কিছু রিফর্ম (সংস্কার) নিয়ে কাজ করছি। বৈদেশিক মুদ্রার বিনিময় (ডলার) হার এক রেটে নিয়ে আসা, সুদহার বাজারমুখী করা ও রিজার্ভ হিসাব আইএমএফের বিপিএম৬ পদ্ধতিতে করার বিষয়ে সিদ্ধান্ত জানিয়ে দিয়েছি। পাশাপাশি রিজার্ভ হিসাবে আমাদের গ্রস হিসাবটিও থাকবে।
মুখপাত্র আরও বলেন, আইএমএফের ‘স্টাফ ভিজিট’ একটি নিয়মিত কাজ। সংস্থাটি সদস্য সব রাষ্ট্রের সঙ্গে চুক্তির আলোকে সংস্কার নিয়ে নিয়মিত তদারকি করে থাকে। বাংলাদেশ ব্যাংকের সঙ্গে আজকের বৈঠকে অর্থনৈতিক সূচকগুলোর হালনাগাদ তথ্য নিয়ে আলোচনা হয়েছে। বাংলাদেশ ব্যাংকের পক্ষ থেকে আইএমএফকে জানানো হয়েছে যে, অগ্রগতি অর্জন সম্ভব হবে।