বাংলাদেশ কী পরিমাণ বৈদেশিক ঋণ নিয়েছে তার ডাটাবেইজের তথ্য চেয়েছে আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল (আইএমএফ)। এছাড়া ডাটাবেইজে কোন পদ্ধতি ব্যবহার করা হয় সেটিও জানতে চেয়েছে বাংলাদেশ সফরে আসা এ প্রতিনিধি দল।
২৭ এপ্রিল (বৃহস্পতিবার) অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগের (ইআরডি) সঙ্গে এক বৈঠকে এসব তথ্য জানতে চেয়েছে আইএমএফের সদস্যরা।
এ প্রসঙ্গে ইআরডি সচিব শরিফা খান সাংবাদিকদের বলেন, আইএমএফ আমাদের কাছে ঋণ সংক্রান্ত ডাটাবেইজ নিয়ে জানতে চেয়েছে। আমরা তা নিয়েই আলোচনা করেছি।
রিপেন্ট নিয়ে কোনো আলোচনা হয়েছে কি না? এমন প্রশ্নের জবাবে শরিফা খান বলেন, আমাদের রিপেমেন্ট এখনো পর্যন্ত ক্লিয়ার। এ নিয়ে কোনো আলোচনাই হয়নি।
তিনি জানান, তারা আমাদের কাছে জানতে চেয়েছে ডাটাবেইজের কোন পদ্ধতি ব্যবহার করি। আমরা বলেছি, বাংলাদেশ আংকটাডের পদ্ধতি অনুসরণ করে থাকে।
অবশ্য ইআরডির আরেক ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে জানান, এ প্রতিনিধি দল রাশিয়ার সঙ্গে এডজাস্টমেন্ট অ্যাকাউন্ট খোলা হয়েছে কি না তাও জানতে চেয়েছে। আমরা বলেছি, সেটি খোলা হয়েছে। আর সংশোধিত উন্নয়ন বাজেট নিয়ে জানতে চেয়েছে তারা।
এ কর্মকর্তা জানান, প্রতিনিধি দলটির সঙ্গে খুব বেশি আলোচনা হয়নি। তবে আগামী অক্টোবরে সংস্থাটির ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা বাংলাদেশে আসবেন। তখন নীতিগত সিদ্ধান্ত নেবন তারা। এর আগে কিছুই বলা যাচ্ছে না।
জানা গেছে, আইএমএফের ঋণ নিতে ছোট-বড় ৩৮টি শর্ত পূরণ করতে হবে বাংলাদেশকে। শর্তগুলোর মধ্যে বেশির ভাগই আর্থিক খাতের সঙ্গে সম্পর্কযুক্ত। আর্থিক খাতের মধ্যে আবার বড় অংশজুড়ে রয়েছে ব্যাংক খাত। যার মধ্যে উল্লেখযোগ্য অংশ রয়েছে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের দায়িত্বে। এর মধ্যে গত মার্চ পর্যন্ত অর্জন এবং আগামী জুন ও সেপ্টেম্বরের মধ্যে যেগুলো বাস্তবায়ন করতে হবে সেগুলোর বাস্তবায়ন পরিস্থিতি যাচাই করছে এবারের মিশন।
এছাড়া ২০২৪ সালের জুনের মধ্যে যেসব শর্ত বাস্তবায়নের অঙ্গীকার করেছে সরকার সেগুলো বাস্তবায়নের জন্য আসছে বাজেটে কী কী উদ্যোগ থাকছে, তাও পর্যালোচনা করা হবে।
আইএমএফ গত ৩০ জানুয়ারি বাংলাদেশের জন্য ৪৭০ কোটি ডলার ঋণ প্রস্তাব অনুমোদন করে। এর মধ্যে এক্সটেনডেড ক্রেডিট ফ্যাসিলিটি (ইসিএফ) বা বর্ধিত ঋণসুবিধা ও এক্সটেনডেড ফান্ড ফ্যাসিলিটি (ইএএফএফ) বা বর্ধিত তহবিল সুবিধার আওতায় ৩৩০ কোটি ডলার এবং নতুন গঠিত তহবিল রেজিলিয়েন্স অ্যান্ড সাসটেইনেবিলিটি ফ্যাসিলিটির (আরএসএফ) আওতায় আরও ১৪০ কোটি ডলারের ঋণ অনুমোদন করা হয়েছে। ঋণ প্রস্তাব অনুমোদনের তিনদিন পরই প্রথম কিস্তিতে ছাড় করে ৪৭ কোটি ৬২ লাখ ৭০ হাজার ডলার। ২০২৬ সাল পর্যন্ত সাড়ে তিন বছরে মোট সাত কিস্তিতে ঋণের পুরো অর্থ দেবে আইএমএফ।