এবার খুবই কঠিন নির্বাচন হবে: মোকতাদির চৌধুরী

মোহাম্মদ সজিবুল হুদা

আগামী নির্বাচন ২০১৪ বা ১৮ সালের মতো সহজ হবে না জানিয়ে বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি এবং ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর-৩ (সদর ও বিজয়নগর) আসনের সংসদ সদস্য যুদ্ধাহত বীর মুক্তিযোদ্ধা র আ ম উবায়দুল মোকতাদির চৌধুরী বলেছেন, এবার খুবই কঠিন নির্বাচন হবে। আমার উপনির্বাচনের সময়ে যে জোয়ার ছিল সেটি এখন নাও পেতে পারেন। আবার পেতে পারেন যদি সবাই ঐক্যবদ্ধ থাকেন। আমাদেরকে টানা চতুর্থ বারের মত প্রধানমন্ত্রীকে (শেখ হাসিনা) ক্ষমতায় রাখতে হবে। সেজন্য আমাদের সবাইকে এখন থেকেই ঐক্যবদ্ধ হয়ে কাজ করতে হবে।

শনিবার (২৯ এপ্রিল) দুপুরে যুবলীগের ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর ও পৌর শাখার ত্রিবার্ষিকী সম্মেলনে অংশ নিয়ে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন তিনি। শহরের বঙ্গবন্ধু স্কয়ারে এই সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়।

universel cardiac hospital

পঁচাত্তর পরবর্তী কারানির্যাতিত প্রবীণ আওয়ামী লীগ নেতা মোকতাদির চৌধুরী বলেন, ত্যাগ কী সেটি বুঝতে হলে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের রাজনৈতিক কর্মকাণ্ড ও পথচলা সম্পর্কে জানতে হবে। তিনি আওয়ামী লীগকে শক্তিশালী করার জন্য মন্ত্রিত্ব ত্যাগ করে দলের সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্ব গ্রহণ করেছিলেন, তিনি এদেশের জনগণের মুক্তির জন্য দুইবার ফাঁসির মুখোমুখি হয়েছিলেন, বছরের পর বছর জেলে কাটিয়েছেন, এটিই হচ্ছে ত্যাগ। আর বর্তমান অনেকেই আছেন নির্বাচন আসলে দলীয় মনোনয়ন চান, মনোনয়ন না পেলে বিদ্রোহী প্রার্থী হিসেবে নির্বাচন করেন, নির্বাচন শেষ নিজেকে ত্যাগী নেতা হিসেবে দাবি করেন! মাদকের মামলায়, অস্ত্র মামলায় কারাগারে গিয়েও কেউ কেউ কারানির্যাতিত নেতা দাবি করেন!

জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি বলেন, পঁচাত্তরের ১৫ আগস্টের পরে ঢাকায় আমরা যারা চতুর্থ সারির ছাত্র ও যুব নেতা ছিলাম তারাই রাজপথে ও গোপনে মিটিং মিছিলে নেতৃত্ব দিয়েছি। ঐ সময় ছাত্রলীগ ও যুবলীগের নেতা কর্মীরাই মাঠে ছিল। আর আমাদের সঙ্গে ছিলেন পেশাজীবী সংগঠনের কিছু নেতা। তখন আওয়ামী লীগকে খুঁজে পাওয়া যায়নি।

তিনি বলেন, যেকোনো সংগঠনের সফলতার মূল শর্ত হলো শৃঙ্খলা। যুবলীগকে আরও শক্তিশালী ও সুসংগঠিত হতে হলে তাদেরকে আরও সুশৃঙ্খল হতে হবে।

অনুষ্ঠানে সম্মানিত অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ আওয়ামী যুবলীগের কেন্দ্রীয় কমিটির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক শেখ ফজলে নাঈম।

তিনি বলেন, আর মাত্র ৭-৮ মাস পর জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। নির্বাচনের হাওয়া এখন শুরু হয়ে গেছে। ষড়যন্ত্রও শুরু হয়ে গেছে। বিএনপি-জামায়াত কখনও ভোটে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগকে হারাতে পারবে না। তারা সারাজীবন পেছনের দরজা দিয়ে ক্ষমতায় এসেছে। আমরা যদি সবাই ঐক্যবদ্ধ থাকি তাহলে আমাদের কেউ দমিয়ে রাখতে পারবে না।

শেখ নাঈম আরও বলেন, আপনাদেরকে বুঝতে হবে জামায়াত-হেফাজতের তেমন কোনো কর্মী নেই। তাদের যে কয়েকজন কর্মী আছে তাদের বিরুদ্ধে আমরা লাখ লাখ কর্মী মাঠে নামলে বিএনপি-জামায়াত দাঁড়িয়ে থাকতে পারবে না। সামনের ৫ বছর যদি আমরা আরামে ঘুমাতে চাই তাহলে সামনের ৮ মাস আমাদের কষ্ট করতে হবে। বিএনপি-জামায়াতের এখন কিছু নতুন বন্ধু হয়েছে, কিছু প্রভু হয়েছে। তারা আওয়ামী লীগকে নির্বাচন শিখাতে চায়। বাংলাদেশের নির্বাচন ব্যবস্থাকে সমৃদ্ধ করেছে আওয়ামী লীগ। আপনারা আমাদেরকে শিখাতে আসবেন না। আমাদের নিয়ে চিন্তা করবেন না। কারণ বাংলাদেশের মানুষ এখন অনেক সজাগ রয়েছে।

ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা যুবলীগের সভাপতি অ্যাডভোকেট শাহানূর ইসলামের সভাপতিত্ব সম্মেলনে আরও উপস্থিত ছিলেন ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আল মামুন সরকার, জ্যেষ্ঠ সহসভাপতি মোঃ হেলাল উদ্দিন, সহসভাপতি হেলাল উদ্দিন, যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক মাহবুবুল বারী চৌধুরী মন্টু, জেলা যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক সিরাজুল ইসলাম ফেরদৌসসহ যুবলীগের নেতাকর্মীরা।

এদিকে সম্মেলনকে কেন্দ্র করে সকাল থেকেই খণ্ড খণ্ড মিছিল নিয়ে নেতাকর্মীরা সম্মেলন স্থলে আসতে শুরু করেন। পরে সমাবেশস্থল জনসমাবেশে পরিণত হয়।

শেয়ার করুন