আগামী মাস অর্থাৎ জুনের প্রথম সপ্তাহ থেকেই দুবাই প্রবাসীরা বাংলাদেশ দূতাবাসের মাধ্যমে স্মার্টকার্ড নিতে পারবেন। ১৮ মে ইসির ১১ সদস্যের একটি টিম আবুধাবিতে গিয়ে দূতাবাসের সংশ্লিষ্টদের এ বিষয়ে প্রশিক্ষণ দিয়ে কার্যক্রম শুরু করবে।
ইসির আইডেন্টিফিকেশন সিস্টেম ফর এনহ্যান্সিং এক্সেস টু সার্ভিসেস-আইডিইএ-২ (স্মার্ট এনআইডি) প্রকল্পের উপ-প্রকল্প পরিচালক স্কোয়াড্রন লিডার শাহরিয়ার আলম বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
তিনি বলেন, সংযুক্ত আরব আমিরাতের আবুধাবিতে গিয়ে এ মাসের শেষার্ধেই প্রশিক্ষণসহ অন্যান্য কার্যক্রম হাতে নেওয়া হয়েছে। এ ক্ষেত্রে জুনের প্রথম থেকেই দেশটিতে অবস্থানরত প্রবাসী বাংলাদেশিরা স্মার্টকার্ড পাবেন।
সম্প্রতি ইসি সচিব মো. জাহাঙ্গীর আলম বলেছিলেন, প্রবাসীদের ভোটার করার ক্ষেত্রে সংযুক্ত আবর আমিরাতের রাজধানী আবুধাবিতে টিম প্রেরণ করে কার্যক্রম শুরু করবো। সেক্ষেত্রে প্রত্যেক ব্যক্তি দূতাবাসে সেখানে আউটসোর্সিংয়ের লোকবলের কাছে এসে তথ্য দেবেন। তথ্যটা অনলাইনে আমাদের সংশ্লিষ্ট এলাকায়, সেখানে উপজেলা বা থানা অফিসারের কাছে চলে যাবে। সেখানে তারা যাচাই-বাছাই করে সত্যতা পেলে তখন তারা কনফার্ম করবেন। এরপর ফিঙ্গার প্রিন্ট এবং অন্যান্য জিনিস নেওয়া হবে। এরপরে এখান থেকে স্মার্টকার্ড তৈরি করে সেটা আমরা পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমে সংশ্লিষ্ট দূতাবাসে পাঠাব।
ইসি যে টিমটি আবুধাবিতে পাঠাচ্ছে সেই টিমের নেতৃত্ব দেবেন আইডিইএ-২ প্রকল্পের পরিচালক (আইডি) স্কোয়াড্রন লিডার সাদ ওয়াইজ তানভীর। আগামী ১৮ থেকে ৩১ মে পর্যন্ত ১১ সদস্যের ওই টিম আবুধাবিতে অবস্থান করবে।
প্রথমবার কোনো ফি নাগরিকদের না দিতে হলেও দূতাবাসকে এনআইডি প্রতি ৫০ দিরহাম (প্রতিবেদন প্রকাশের দিনে ১ দিরহাম) সার্ভিস চার্জ দিতে হবে। আবেদনকারীর নাম হতে হবে জন্ম নিবন্ধন অথবা শিক্ষা সনদ অনুযায়ী। সংযুক্ত আরব আমিরাতে এ কার্যক্রমের অভিজ্ঞতা নিয়ে পরবর্তীতে রেমিট্যান্স প্রবাহের আধিক্য বিবেচনায় অন্যান্য দেশেও এ সংক্রান্ত কার্যক্রম হাতে নেবে ইসি।
প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের নির্দেশনা পেয়ে কেএম নূরুল হুদার নেতৃত্বাধীন কমিশন ২০১৯ সালে এই উদ্যোগটি হাতে নেয়। ২০২০ সালের ১২ ফেব্রুয়ারি যুক্তরাজ্য প্রবাসীদের অনলাইনের ভোটার করে নেওয়ার কার্যক্রম উদ্বোধন করে ইসি। এর আগে ২০১৯ সালের ১৮ নভেম্বর ইউএই প্রবাসীদের মাঝে এ কার্যক্রম শুরু করা হয়। তার আগে একই বছর ৫ নভেম্বর মালয়েশিয়ায় অবস্থারত বাংলাদেশিদের ভোটার তালিকায় অন্তর্ভুক্তি এবং স্মার্ট জাতীয় পরিচয়পত্র দেওয়ার অংশ হিসেবে অনলাইনে আবেদন নেওয়ার কার্যক্রম উদ্বোধন করা হয়। এরপর সৌদি আবর, সিঙ্গাপুর ও মালদ্বীপে থাকা বাংলাদেশিদের জন্যও এ সুযোগ চালু করা হয়। সে সময় অনলাইনে আবেদন নিয়ে সেই আবেদন সংশ্লিষ্ট ব্যক্তির উপজেলা থেকে যাচাই করে সত্যতা পেলে সংশ্লিষ্ট দেশে দূতাবাস থেকে এনআইডি সরবরাহের পরিকল্পনা ছিল। এরপর করোনা মহামারির কারণে থমকে যায় দূতাবাসের মাধ্যমে এ কার্যক্রম শুরুর পরিকল্পনা।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে অনলাইনে কার্যক্রম শুরু হওয়া ছয়টি দেশ থেকে ভোটার হয়ে এনআইডি পেতে গত মার্চ পর্যন্ত আবেদন করেছেন পাঁচ হাজার ১৩৮ জন। এদের মধ্যে চার হাজার ৬১০ জনের আবেদন এখন পর্যন্ত তদন্তই করেনি ইসি। তদন্ত সম্পন্ন হয়েছে মাত্র ৪৭৫ জনের, এর মধ্যেও আবার নানা কারণ দেখিয়ে ২০৩ জন প্রবাসীর আবেদন বাতিল করা হয়েছে। এছাড়া তদন্তাধীন রয়েছে ৫৩ জনের আবেদন। অর্থাৎ তিন বছরে তদন্ত সম্পন্ন করে ২৭২ জনের আবেদন অনুমোদিত হয়েছে, যারা পাচ্ছেন এনআইডি। গত তিন বছরে ইউএই থেকে আবেদন এসেছে এক হাজার ৩৭৫টি, এরমধ্যে তদন্ত হয়নি এক হাজার ২৫৪টির, আর অনুমোদন হয়েছে মাত্র ৬৩ জনের আবেদন।