পাহাড়ি অঞ্চলের নিরাপত্তায় যাত্রা শুরু করতে যাচ্ছে মাউন্টেন পুলিশ

মত ও পথ ডেস্ক

দেশের তিন পার্বত্য জেলা রাঙ্গামাটি, বান্দরবান ও খাগড়াছড়িতে অভ্যন্তরীণ আইন-শৃঙ্খলা ও নিরাপত্তা ব্যবস্থা রক্ষায় আর্মড পুলিশের মাউন্টেন ব্যাটালিয়নের যাত্রা শুরু হতে যাচ্ছে। এরই মধ্যে পুলিশের মাউন্টেন ব্যাটালিয়নের কার্যক্রম শুরুর জন্য স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের প্রশাসনিক অনুমোদন মিলেছে।

স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ও পুলিশ সদর দপ্তর সূত্রে জানা গেছে, শান্তি চুক্তি অনুযায়ী, গহিন পাহাড় থেকে প্রত্যাহার হওয়া সেনা ক্যাম্প এলাকায় আইন-শৃঙ্খলা, শান্তি ও নিরাপত্তা রক্ষায় মাউন্টেন পুলিশ সদস্যরা দায়িত্ব পালন করবেন।

universel cardiac hospital

পুলিশ কর্মকর্তারা বলছেন, আর্মড পুলিশ মাউন্টেন ব্যাটালিয়নে একজন উপ-মহাপরিদর্শক (ডিআইজি) প্রধান থাকবেন। ডিআইজি কার্যালয়ে দুজন অতিরিক্ত ডিআইজি ও পৃথক তিন জেলা ব্যাটালিয়নে একজন করে মোট তিনজন অতিরিক্ত ডিআইজি থাকবেন।

এরই মধ্যে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় থেকে একজন ডিআইজিসহ ২ হাজার ২৬০ পদ সৃষ্টির সম্মতি মিলেছে। সবকিছু ঠিক থাকলে চলতি বছরই মাউন্টেন পুলিশ যাত্রা শুরু করবে বলে আশা করা হচ্ছে।

পুলিশ সদর দপ্তর সূত্র জানায়, যাত্রা শুরুর পর রাঙ্গামাটি পার্বত্য এলাকায় ১৮ আর্মড পুলিশ মাউন্টেন ব্যাটালিয়ন, বান্দরবানে ১৯ আর্মড পুলিশ মাউন্টেন ব্যাটালিয়ন এবং খাগড়াছড়িতে ২০ আর্মড পুলিশ মাউন্টেন ব্যাটালিয়ন দায়িত্ব পালন করবে।

এই তিনটি ব্যাটালিয়নে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় থেকে অনুমোদন দেওয়া ২ হাজার ২৬০টি পদের মধ্যে একজন ডিআইজি, পাঁচজন অতিরিক্ত ডিআইজি, ১১ জন পুলিশ সুপার, ২১ জন অতিরিক্ত পুলিশ সুপার, ২১ জন সহকারী পুলিশ সুপার (এএসপি), চারজন মেডিকেল অফিসার, ২৩ জন নিরস্ত্র পরিদর্শক, ৪৮ জন সশস্ত্র পরিদর্শক, ৪০ জন নিরস্ত্র উপপরিদর্শক (এসআই), ২০৭ জন সশস্ত্র উপপরিদর্শক (এসআই), ৫১ জন নিরস্ত্র সহকারী উপপরিদর্শক (এএসআই), ২০৭ জন সশস্ত্র সহকারী উপপরিদর্শক (এএসআই), ৩৯৬ জন নায়েক ও ১ হাজার ২২৫ জন কনস্টেবল রয়েছেন।

এসব জনবলের মধ্যে ডিআইজির কার্যালয়ে দুজন অতিরিক্ত ডিআইজি ছাড়াও দুজন পুলিশ সুপার, তিনজন করে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার ও সহকারী পুলিশ সুপার, পাঁচজন পরিদর্শক, ১০ জন উপপরিদর্শক, ১২ জন সহকারী উপপরিদর্শক ৬ জন নায়েক এবং ২৫ জন কনস্টেবলসহ মোট ৭০ জনের জনবলের কথা রয়েছে প্রস্তাবনায়। বাকি জনবলের মধ্যে প্রতিটি ব্যাটালিয়নে একজন অতিরিক্ত ডিআইজির নেতৃত্বে তিনজন পুলিশ সুপারসহ মোট ৭৩০ জন করে জনবল থাকবে।

পুলিশ সদর দপ্তরের দায়িত্বশীল এক কর্মকর্তা বলেন, মাউন্টেন পুলিশ ব্যাটালিয়নের কার্যক্রম শুরুর আগে এসব ব্যাটালিয়নে নিয়োগ দেওয়া পুলিশ সদস্যদের সময়োপযোগী প্রশিক্ষণ দেওয়ার ব্যবস্থা করা হবে। তারা যাতে পাহাড়ে নানা প্রতিকূল পরিবেশে নিজ নিজ দায়িত্ব পালন করতে পারে।

পুলিশ সদর দপ্তরের অতিরিক্ত ডিআইজি (সংগঠন ও ব্যবস্থাপনা) ফারুক আহমেদ বলেন, আর্মড পুলিশ মাউন্টেন ব্যাটালিয়ন গঠনের প্রস্তাবটি পুলিশ সদর দপ্তর থেকে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়। সেটি যাচাই-বাছাই শেষে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় থেকে ২ হাজার ২৬০টি পদ সৃজনে সম্মতি দেওয়া হয়েছে। প্রস্তাবটি এখন অর্থ মন্ত্রণালয়ে রয়েছে।

পুলিশের এই কর্মকর্তা বলেন, প্রস্তাবটি অর্থ মন্ত্রণালয় থেকে যাচাই-বাছাই শেষে ছাড় পাওয়ার পর নিয়ম অনুযায়ী সচিব কমিটিতে যাবে। সেখান থেকে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের চূড়ান্ত অনুমোদন পাওয়ার পর পৃথক তিনটি আর্মড পুলিশ মাউন্টেন ব্যাটালিয়নের যাত্রা শুরু হবে।

শেয়ার করুন