শুভ বুদ্ধপূর্ণিমা: জগতের সব প্রাণী সুখী হোক

সম্পাদকীয়

আজ শুভ বুদ্ধপূর্ণিমা। বৌদ্ধ ধর্মের অনুসারীদের প্রধান ধর্মীয় উৎসব। ‘জগতের সব প্রাণী সুখী হোক’- এ অহিংস বাণীর প্রচারক গৌতম বুদ্ধের আবির্ভাব, বোধিপ্রাপ্তি ও মহাপরিনির্বাণের (মৃত্যু)- স্মৃতি বিজড়িত দিনটিকে বুদ্ধ ভক্তরা বুদ্ধপূর্ণিমা হিসেবে পালন করেন। মানুষের কল্যাণে এবং শান্তি প্রতিষ্ঠায় অহিংসা, সাম্য ও মৈত্রীর বাণী আজীবন প্রচার করেছেন মহামতি গৌতম বুদ্ধ। শান্তি ও সম্প্রীতির মাধ্যমে আদর্শ সমাজ গঠনই ছিল তাঁর একমাত্র লক্ষ্য। তাঁর কাছে জাতি, শ্রেণি ও গোত্রের কোনো ভেদাভেদ ছিল না। তিনি মানুষকে মানুষ ও প্রাণীকে প্রাণিরূপেই জানতেন। এর প্রাণসত্তার মধ্যে যে কষ্টবোধ আছে, তা তিনি মর্মে মর্মে উপলব্ধি করতেন। তাই তিনি বলেছিলেন, ‘সবেব সত্তা ভবন্তু সুখীতত্তা’- জগতের সব প্রাণী সুখী হোক। ‘অহিংস পরম ধর্ম’―বুদ্ধের এই অমিয় বাণী আজও সমাজে শান্তির জন্য সমভাবে প্রযোজ্য। কাজেই আজকের এই অশান্ত ও অসহিষ্ণু বিশ্বে মূল্যবোধের অবক্ষয় রোধ, যুদ্ধবিগ্রহ, ধর্ম-বর্ণ-জাতিগত হানাহানি রোধসহ সমাজে শান্তি প্রতিষ্ঠায় মহামতি বুদ্ধের দর্শন ও জীবনাদর্শ গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করতে পারে বলে আমরা মনে করি।

বাংলাদেশ অসাম্প্রদায়িক চেতনার; সহস্র বছর ধরে এ ভূখণ্ডে উৎসবমুখর পরিবেশে নিজ নিজ ধর্ম নির্বিঘ্নে পালন করে আসছেন সব ধর্মের মানুষ। আমাদের সংবিধানেও সবার সমঅধিকার নিশ্চিত করা হয়েছে। এই দেশে ধর্ম যার যার, উৎসব সবার। সব ধর্মের মানুষ একত্রিত হয়ে বিভিন্ন ধর্মীয় উৎসবগুলো অত্যন্ত আনন্দঘন পরিবেশে উদযাপন করে থাকেন। এটি বাঙালি জাতির সম্প্রীতির চর্চা সহজাত ও স্বাতন্ত্র্য প্রবৃত্তি। এই প্রবৃত্তিকে সুদৃঢ় করে আমাদের সমৃদ্ধির পথকে আরও মসৃণ ও মজবুত করতে হবে।

universel cardiac hospital

সবশেষে মহামতি গৌতম বুদ্ধের জন্ম, মৃত্যু ও বোধিজ্ঞান লাভের স্মৃতিবিজড়িত বুদ্ধপূর্ণিমায় বৌদ্ধ সম্প্রদায়সহ সবাইকে জানাই আন্তরিক শুভেচ্ছা।

শেয়ার করুন