সাংহাই সহযোগিতা সংস্থার (এসসিও) বৈঠকে যোগ দিতে শুক্রবার (৫ মে) ভারতে গিয়েছেন পাকিস্তানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী বিলাওয়াল ভুট্টো। সেই উপলক্ষ্যে ভারতের সঙ্গে শুভেচ্ছা বিনিময়ের জন্য পাকিস্তান তাদের জেলে থাকা ৬০০ ভারতীয় মৎস্যজীবীকে মুক্তি দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। তাদের সমুদ্রসীমা লঙ্ঘন করার অভিযোগে আটক করা হয়েছে।
রিপোর্ট অনুযায়ী, ২০০ মৎস্যজীবীকে প্রথমে মুক্তি দেওয়া হবে। প্রথম পর্যায়ের মৎস্যজীবীরা মুক্তি পাবে আগামী ১২ মে। বাকি ৪০০ মৎস্যজীবীকে মুক্তি দেওয়া হবে আগামী ১৪ মে। পাকিস্তানের এ পদক্ষেপ দুই দেশের মধ্যে শত্রুতা কমাতে পারে বলেও মনে করছেন বিশ্লেষকরা।
ভারত-পাকিস্তানের মধ্যে সীমান্ত নিয়ে দীর্ঘদিনের বিরোধ রয়েছে। পাকিস্তান সমস্যা সমাধানে নারাজ। তারা পুরো বিষয়টিকে আন্তর্জাতিক স্তরে নিয়ে যেতে চায় কিন্তু ভারত তা চায় না।
ভারত বা পাকিস্তান– দুই দেশেরই বিদেশি বন্দিদের মুক্তি দেওয়ার বিষয়ে কোনো সুস্পষ্ট নীতি নেই। যার কারণে সাজার মেয়াদ শেষ হওয়ার পরও অনেকেরই বন্দিদশা থেকে মুক্তি মেলে না। বর্তমানে ৭০৫ জন ভারতীয় নাগরিক পাকিস্তানের জেলে বন্দি রয়েছে। যার মধ্যে অধিকাংশই মৎস্যজীবী। অন্যদিকে, ভারতের জেলে ৪৩৪ জন পাকিস্তানি বন্দি রয়েছে। যাদের মধ্যে মাত্র ৯৫ জন মৎস্যজীবী।
পাকিস্তানের জেলে বন্দি ভারতীয় মৎস্যজীবীদের দুর্দশার কথা তুলে গত ১ মে পাকিস্তানের জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের চেয়ারম্যান রাবিয়া জাভেরি আগা কারাবন্দিদের মুক্তির জন্য অভিযান শুরু করেছিলেন। মানবাধিকার কমিশন প্রচারের সময় জাতীয় ও আন্তর্জাতিক চুক্তির কথা উল্লেখ করেছে। দাবি করেছে, দুই দেশ এই অভিবাসীদের মুক্তির জন্য আলোচনা করতে পারে। সেজন্য একটি কর্মসূচি গ্রহণের কথাও বলেছে তারা। দুই দেশের মানবাধিকার সংগঠনগুলো বারবার সরকারের কাছে মৎস্যজীবীদের জন্য নো-অ্যারেস্ট নীতির দাবি জানিয়েছে। এই মৎস্যজীবীদের মুক্তির ফলে উভয় দেশই কারাগারের ভিড় কমাতে পারে। এর ফলে বন্দিদের পরিবারও স্বস্তি পাবে বলে আশা করা হচ্ছে।
সূত্রের খবর, মুক্তিপ্রাপ্ত মৎস্যজীবীদের ওয়াঘা সীমান্ত দিয়ে ভারতীয় কর্মকর্তাদের হাতে তুলে দেওয়া হবে। ইধি ফাউন্ডেশন মুক্তিপ্রাপ্ত ২০০ মৎস্যজীবীকে সড়কপথে লাহোরে নিয়ে যাবে। সিন্ধু প্রদেশের সরকার প্রত্যেক ভারতীয়কে ৫ হাজার টাকা, খাদ্য সামগ্রী ও উপহার দেবে।
মানবাধিকার সংগঠনগুলো দীর্ঘদিন ধরে এ পদক্ষেপ নেওয়ার দাবি জানিয়ে আসছিল। পাকিস্তান সরকারের সবুজ সংকেতের পর তাদের এমন পদক্ষেপ নেওয়ার প্রশংসা করা হচ্ছে। এবার সংগঠনগুলো মৎস্যজীবীদের আটকের সমস্যার স্থায়ী সমাধানের দিকে জোর দেবে বলে ধারণা করা হচ্ছে।