ভারতের কর্ণাটক রাজ্যে শনিবার সকাল ৮টা থেকে বিধানসভার ভোট গণনা শুরু হয়েছে। রাজ্যের ৩৬টি গণনাকেন্দ্রে ভোট গণনা চলছে। গত বুধবার বিধানসভা ভোটে মোট ৭৩.২ শতাংশ ভোট পড়েছিল। ২০১৮ সালেও ভোটের হার ছিল প্রায় একই। গত আড়াই দশক ধরেই ত্রিমুখী প্রতিদ্বন্দ্বিতা দেখতে চলেছে কর্নাটক।
এদিকে কর্ণাটকে সংখ্যাগরিষ্ঠতা নিয়ে সরকার গড়বে কংগ্রেসই। এমন আত্মবিশ্বাসের সুর শোনা গেল কংগ্রেস মুখপাত্র পবন খেরার গলায়। তিনি বলেন, বিপুল সংখ্যাগরিষ্ঠতা নিয়ে আমরাই সরকার গড়ব। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির নেতিবাচক প্রচার কাজ করেনি।
গত ১০ তারিখ কর্ণাটকের ২২৪টি বিধানসভা আসনে ভোট অনুষ্ঠিত হয়। ভোটগ্রহণ পর্ব শেষ হতেই প্রায় সব বুথফেরত সমীক্ষা কংগ্রেসকে নির্বাচনে এগিয়ে রেখেছিল। তবে ত্রিশঙ্কু বিধানসভার আভাসও মিলেছে ওই সমীক্ষায়।
কর্ণাটকে সার্বিকভাবে পিছিয়ে পড়লেও বেঙ্গালুরু এলাকায় এগিয়ে আছে বিজেপি। ওই অঞ্চলের ১৯টি আসনে এগিয়ে গেরুয়া শিবির। আটটি আসনে এগিয়ে কংগ্রেস। জেডিএস এগিয়ে মাত্র ১টি আসনে।
দক্ষিণ কর্ণাটক বা মাইসোর এলাকায় বিজেপি সেভাবে ছাপ ফেলতে পারেনি। এই অঞ্চলে মাত্র ৪টি আসনে এগিয়ে গেরুয়া শিবির। কংগ্রেস এই অঞ্চলে এগিয়ে ৩২টি আসনে। এদিকে দক্ষিণ কর্ণাটক জেডিএস-এর গড় হিসেবে পরিচিত। তবে জেডিএস সেখানে ভোট হারিয়েছে। তারা ওই অঞ্চলে মাত্র ২১টি আসনে এগিয়ে আছে।
এখনও পর্যন্ত কর্ণাটকে কংগ্রেস পেয়েছে প্রায় ৪৩ শতাংশ ভোট। বিজপির ঝুলিতে গেছে ৩৬.৫ শতাংশ ভোট। নির্বাচন কমিশনের তথ্য অনুযায়ী, কংগ্রেস এগিয়ে ১১০টি আসনে। ২৩টিতে এগিয়ে জেডিএস।
ভোটগণনা শুরু হওয়ার পর প্রথম আধা ঘণ্টায় পোস্টাল ব্যালটে এগিয়ে থাকতে দেখা যায় বিজেপিকে। কিন্তু পরবর্তীতে এই চিত্র বদলে গেছে। আজ ২৬১৫ জন প্রার্থীর ভাগ্য নির্ধারণ হবে দক্ষিণী এই রাজ্যে।
এদিকে কংগ্রেস নেতা তথা প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী সিদ্দারামাইয়ার ছেলে যথিন্দ্র সিদ্দারামাইয়া বলেন, কংগ্রেস নিরঙ্কুশ সংখ্যাগরিষ্ঠতা পাবে এবং কর্ণাটকে সরকার গঠন করবে। আমরা আত্মবিশ্বাসী যে আমরা নিজেরাই সরকার গঠন করব।
১৯৮৫ সাল থেকে কখনও কোনও দলকে পরপর দুবার ক্ষমতায় ধরে রাখেনি কর্ণাটক। এবার সেই রীতি কি ভাঙবে, উত্তর মিলবে আর কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই। গতবার জেডিএসের সঙ্গে হাত মিলিয়ে সরকার গড়তে মরিয়া ছিল কংগ্রেস। তবে তার আগেই সরকার গঠনের দাবি জানিয়েছিল বিজেপি এবং সরকার গঠন করে ফেলেছিল। মুখ্যমন্ত্রী হয়েছিলেন বিএস ইয়েদুরাপ্পা। কিন্তু মাত্র তিনদিন টিকেছিল বিজেপি সরকার। তারপর জেডিএসের সঙ্গে হাত মিলিয়ে সরকার গঠন করেছিল কংগ্রেস। মুখ্যমন্ত্রী হয়েছিলেন কুমারস্বামী। কিন্তু সেই জোট সরকারও বেশিদিন টেকেনি। ১৪ মাসের মধ্যে পড়ে গিয়েছিল।
এর আগে ২০১৮ সালের বিধানসভা নির্বাচনে একক বৃহত্তম দল হয়েছিল বিজেপি। জিতেছিল ১০৪ টি আসনে। কংগ্রেসের ঝুলিতে ৮০টি আসন গিয়েছিল। জেডিএস জিতেছিল ৩৭টি আসনে। একটি করে আসনে জিতেছিল নির্দল, বিএসপি এবং কর্ণাটক প্রজ্ঞাবন্ত জনতা পার্টি। অর্থাৎ কোনও দলই ম্যাজিক ফিগার (১১৩) পার করতে পারেনি।