নগদ টাকার পরিবর্তে ক্যাশলেস লেনদেনে ঝুঁকছে মানুষ। ফলে দিন দিন ব্যাংকের কার্ড ব্যবহারের সংখ্যা বাড়ছে। পাশাপাশি রেকর্ড লেনদেনও হচ্ছে।
চলতি বছরের মার্চে ব্যাংকগুলোর কার্ডে ৪৫ হাজার ৪১২ কোটি টাকার লেনদেন হয়েছে। এ লেনদেন যেকোনো সময়ের তুলনায় সর্বোচ্চ।
বাংলাদেশ ব্যাংকের হালনাগাদ প্রতিবেদন থেকে এ তথ্য জানা গেছে।
ব্যাংকাররা জানান, সঙ্গে করে নগদ টাকা বহনের ঝুঁকি বিবেচনায় গ্রাহকদের অনেকে কার্ড ব্যবহারে স্বাচ্ছন্দ্য বোধ করেন। আবার শাখায় গিয়ে লাইন ধরে লেনদেন করতে বাড়তি সময় লাগে। এছাড়া ব্যাংকিং সময়ের বাইরে যেকোনো লেনদেনের সুবিধার কারণে এখন কার্ড লেনদেনে মানুষের আগ্রহ বাড়ছে। এখনো দেশের মানুষের বড় অংশের ব্যক্তিগত লেনদেন নগদ টাকায় সম্পন্ন হচ্ছে। পাশাপাশি কার্ডের মাধ্যমেও প্রতি মাসে প্রায় ৪০ হাজার কোটি টাকা লেনদেন হয়, যা আর্থিক খাতের মোট লেনদেনের তুলনায় হয়ত সামান্যই। তবে দিন দিন কার্ডে লেনদেন বাড়ছে।
বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, গত মার্চ শেষে দেশে ডেবিট কার্ডের সংখ্যা বেড়ে হয়েছে ৩ কোটি ৯ লাখ ৯৭ হাজার ৩৩৫। ২০২২ সাল শেষে ব্যাংক খাতে ডেবিট কার্ডের সংখ্যা ছিল ২ কোটি ৯৮ লাখ ৪৯ হাজার ১৩৬। সেই হিসাবে ৩ মাসে ১১ লাখ ৪৮ হাজার ১৯৯টি কার্ড বেড়েছে। একইভাবে মার্চ শেষে ক্রেডিট কার্ডের সংখ্যা বেড়ে হয়েছে ২১ লাখ ৭৮ হাজার ৪৬। ২০২২ সালের ডিসেম্বর শেষে ক্রেডিট কার্ডের সংখ্যা ছিল ২১ লাখ ১৫ হাজার ৮৬১। ফলে ৩ মাসে ক্রেডিট কার্ড বেড়েছে ৬২ হাজার ১৮৫।
বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, সর্বশেষ গত মার্চ মাসে ডেবিট কার্ডে লেনদেন হয়েছে ৪২ হাজার ২৫৯ কোটি টাকা। এর আগে কখনো ডেবিট কার্ডে এক মাসে এতো লেনদেন হয়নি। গত ফেব্রুয়ারি মাসে কার্ডে ৩৬ হাজার ৬৯০ কোটি টাকা লেনদেন হয়েছিল। ডেবিট কার্ডের পাশাপাশি ক্রেডিট কার্ডেও মার্চে রেকর্ড লেনদেন হয়। মার্চ মাসে লেনদেন হয় ২ হাজার ৬৫২ কোটি টাকা, যা এখন পর্যন্ত একক মাস হিসেবে সর্বোচ্চ। গত মার্চে কার্ডে যে পরিমাণ লেনদেন হয়েছে তার মধ্যে দেশীয় মুদ্রায় ৪৪ হাজার ৮০১ কোটি টাকা ও বৈদেশিক মুদ্রায় ৬১০ কোটি টাকার লেনদেন হয়েছে।
কার্ড দিয়ে এটিএম থেকে গত মার্চে ৩২ হাজার ৬১৫ কোটি টাকা উত্তোলন করা হয়, যা নতুন রেকর্ড। একইভাবে পিওএসের মাধ্যমে মার্চে ২ হাজার ৭৯১ কোটি টাকার লেনদেন হয়। পিওএস সাধারণত কেনাকাটা, বিমানের টিকিট ক্রয়, হোটেলের ভাড়া দেওয়ার সময় ব্যবহার করা হয়।