ফাঁদে ফেলে বিয়ে, চেতনানাশক খাইয়ে যৌনপল্লিতে বিক্রি

নিজস্ব প্রতিবেদক

নারী নির্যাতন
নারী নির্যাতন। প্রতীকী ছবি

প্রেমের ফাঁদে ফেলে এক নারীকে (৩০) বিয়ে করেন চুয়াডাঙ্গার এক ব্যক্তি (৩৪)। এরপর স্ত্রীকে ঢাকায় নেওয়ার পথে চেতনানাশক খাইয়ে রাজবাড়ীর দৌলতদিয়া যৌনপল্লিতে বিক্রি করে দেন। বাসের মধ্যে চেতনানাশক খাইয়ে অজ্ঞান করা হয়। তার যখন জ্ঞান ফেরে, দেখতে পান তিনি অন্ধকার একটি ঘরে বন্দী। আড়াই মাস পর কৌশলে যৌনপল্লি থেকে পালিয়ে আসতে সক্ষম হন ওই নারী।

একটি নালিশি অভিযোগের তদন্ত শেষে আদালতে জমা দেওয়া পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনের (পিবিআই) প্রতিবেদনে এসব তথ্য রয়েছে। গত ১৩ ফেব্রুয়ারি চুয়াডাঙ্গার আমলি আদালতে প্রতিবেদনটি জমা দেওয়া হয়েছে। নিখোঁজের এক মাস ১২ দিন পর আদালতে এই নালিশি দরখাস্ত করেছিলেন ভুক্তভোগী নারীর মা।

পিবিআইয়ের প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, অভিযোগ ওঠা ব্যক্তি ও ভুক্তভোগী নারী একই সঙ্গে কাজ করতেন। সেখানেই তাদের পরিচয় হয়। ওই ব্যক্তি তার প্রথম বিয়ের কথা গোপন করে নারীর সঙ্গে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে তোলেন। তবে ওই নারীর যে আগে বিয়ে হয়েছিল, তা তিনি জানতেন। গত বছরের মে মাসে বিয়ে করেন তারা। বিয়ের পর ওই ব্যক্তি শ্বশুরবাড়িতেই থাকতেন। দেড় মাস পর নারী জানতে পারেন, তার স্বামীর আগের স্ত্রী ও সন্তান রয়েছে। এ নিয়ে তাদের মধ্যে ঝগড়া হয়।

পিবিআইয়ের তদন্তসংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, এ অবস্থায় প্রতারণার ফাঁদ পাতেন ওই ব্যক্তি। প্রথম স্ত্রী তালাক দেওয়ার কথা বলে ভুক্তভোগী তরুণীর কাছ থেকে ৩০ হাজার টাকা নেন। এক মাস পর ওই যুবক জানান, প্রথম স্ত্রী মামলা করেছেন। মামলার নিষ্পত্তির জন্য অনেক টাকার প্রয়োজন। এ জন্য তিনি ভুক্তভোগী নারীকে নিয়ে ঢাকায় এসে পোশাক কারখানায় কাজ নেবেন। গত বছরের আগস্টের শেষের দিকে তারা বাসে করে ঢাকার উদ্দেশ্যে রওনা দেন। বাসের মধ্যে চেতনানাশক খাইয়ে যৌনপল্লিতে বিক্রি করে পালিয়ে যান ওই ব্যক্তি।

নালিশি অভিযোগের তদন্ত করেছেন চুয়াডাঙ্গা জেলা পিবিআইয়ের পরিদর্শক সরদার বাবর আলী। তিনি বলেন, ভুক্তভোগী নারীকে যিনি যৌনপল্লিতে বিক্রি করেছেন, তিনি পলাতক। এ কারণে যাদের কাছে ওই নারীকে বিক্রি করা হয়েছিল, তাদের শনাক্ত করা যায়নি। আর ভুক্তভোগী নারী কোথায় ছিলেন, কাদের কাছে ছিলেন, তার বিস্তারিত তথ্য দিতে পারেননি। এ কারণে ভুক্তভোগী নারীর স্বামীকে অভিযুক্ত করে আদালতে প্রতিবেদন দেওয়া হয়েছে।

শেয়ার করুন