প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা শিশুদের জঙ্গিবাদ ও সন্ত্রাসবাদ থেকে দূরে রেখে আধুনিক ও জ্ঞানভিত্তিক উন্নত জাতি গঠনে অবদান রাখতে হজযাত্রী, আলেম-ওলামাদের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন। তিনি বলেন, আমাদের শিশুরা যেন এসব থেকে দূরে থাকতে পারে। উন্নত দেশ গড়তে আধুনিক প্রযুক্তিতে যেন তারা প্রস্তুত হতে পারে।
রাজধানীর আশকোনা এলাকায় আজ শুক্রবার হজ অফিসে হজ কর্মসূচি উদ্বোধনকালে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ আহ্বান জানান। অনুষ্ঠানের শুরুতে হজ ব্যবস্থাপনার ওপর একটি ভিডিও প্রামাণ্য চিত্র প্রদর্শন করা হয়। প্রধানমন্ত্রী বলেন, ইসলাম শান্তির ধর্ম। এর নামে জঙ্গিবাদ ও সন্ত্রাসবাদ করে বলে কিছু লোকের কারণে ইসলামের নিন্দা করা হচ্ছে। জঙ্গিবাদ ও সন্ত্রাস সৃষ্টিকারীদের কোনো ধর্ম নেই।
শেখ হাসিনা বলেন, জঙ্গিবাদ ও সন্ত্রাসবাদ সৃষ্টিকারীরা সব ধর্মেই আছে। যদি কেউ মনে করে যে তারা নিরপরাধ মানুষকে হত্যা করে বেহেশতে যাবে, তা কখনোই হবে না। সর্বশক্তিমান আল্লাহ তা বলেননি। আমাদের নবি হজরত মুহাম্মদও (সা.) তা বলেননি।
শেখ হাসিনা আরও বলেন, ইসলাম পৃথিবীর শ্রেষ্ঠ ধর্ম। এই অল্প কিছু মানুষই ইসলামের নিন্দার কারণ হয়ে উঠছে। এই জঘন্য কাজটি থেকে এই লোকদের থামাতে সবাইকে উদ্যোগ নিতে হবে। সবাইকে শিশুদের সম্পর্কে সচেতন হতে হবে।
প্রধানমন্ত্রী তাঁর ছোট বোন শেখ রেহানা ও পরিবারের অন্যান্য সদস্যদের জন্য হজযাত্রীদের কাছে দোয়া চেয়েছেন। প্রধানমন্ত্রী বলেন, আপনাদের (হজযাত্রীদের) কাছে আমার সবচেয়ে বড় দাবি হলো, দেশের জনগণের জন্য দোয়া করবেন। যেন তাদের ভাগ্য নিয়ে কেউ ছিনিমিনি খেলতে না পারে।
তিনি হজযাত্রীদের বাংলাদেশ ও এর জনগণকে মানবসৃষ্ট বা প্রাকৃতিক দুর্যোগ থেকে রক্ষার জন্য প্রার্থনার আহ্বান জানান। প্রধানমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশে প্রাকৃতিক দুর্যোগের পাশাপাশি মানবসৃষ্ট বিপর্যয় ঘটে। এখানে অগ্নিসংযোগ, সহিংসতা ও পরিবহনে আগুন দিয়ে মানুষ হত্যা করা হয়। তিনি হজযাত্রীদের দোয়া করতে বলেন, যেন ভবিষ্যতে দেশের উন্নয়ন ও বর্তমান অগ্রগতি অব্যাহত থাকে।
সরকারপ্রধান বলেন, তাঁর সরকার দিনরাত অক্লান্ত পরিশ্রম করে আজ দেশকে এমন একটি অবস্থানে নিয়ে আসতে সক্ষম হয়েছে। যেখান মানুষ অন্তত খাবার খেতে পারছে। দেশের একজন মানুষও গৃহহীন, ভূমিহীন থাকবে না উল্লেখ করে তিনি বলেন, আমি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের স্বপ্ন বাস্তবায়ন করছি।
হজের সময় হাজীদের সুস্বাস্থ্য কামনা করেন শেখ হাসিনা। তিনি বলেন, হজযাত্রীদের দুর্ভোগ কমাতে সরকার ‘ই-হজ ব্যবস্থাপনা’ চালু করেছে। হজের যাবতীয় কার্যক্রম যেমন প্রাক-নিবন্ধন, নিবন্ধন, ফেরত, মক্কা রোড সার্ভিস, ই-হেলথ, ই-ভিসা, ফ্লাইট, হেল্প ডেস্ক, কল সেন্টার, এজেন্সি প্রোফাইল ম্যানেজমেন্ট- এসব ই-হজ ব্যবস্থাপনার অধীনে করা হচ্ছে।
সরকারপ্রধান বলেন, ১৬১৩৬ নম্বরের কল সেন্টারের পাশাপাশি প্রতি হজযাত্রীকে এসএমএসের মাধ্যমে হজ সংক্রান্ত বিজ্ঞপ্তি দেওয়া হচ্ছে। হজযাত্রীরা ডায়াল কলের মাধ্যমে সব জানতে পারছেন। সরকার হজ ও ওমরাহ ব্যবস্থাপনা আইন-২০২১ প্রণয়ন করেছে। যা হজ ব্যবস্থাপনাকে আরও সহজ করেছে।