‘কাতারের কাছে আরও জ্বালানি চায় বাংলাদেশ’

নিজস্ব প্রতিবেদক

এ কে আবদুল মোমেন
পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আবদুল মোমেন। ফাইল ছবি

পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন জানিয়েছেন, বাংলাদেশকে আরও বেশি জ্বালানি দেওয়ার জন্য কাতার সরকারকে অনুরোধ করা হয়েছে।

তিনি বলেছেন, কাতার বিশ্বের সর্ববৃহৎ জ্বালানি রপ্তানিকারক দেশ। আমরা তাদের কাছে আরও জ্বালানি চেয়েছি। কিন্তু ইউরোপের দেশগুলো বেশি চাচ্ছে। জ্বালানির ক্ষেত্রে বিভিন্ন দেশ লং টার্ম কনট্রাক্টে যাচ্ছে।

universel cardiac hospital

আজ সোমবার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি এসব কথা জানান।

গত দুই মাসের মধ্যে দ্বিতীয়বারের মতো কাতার যাচ্ছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তরলীকৃত প্রাকৃতিক গ্যাস (এলএনজি) রপ্তানির বিষয়ে সরকারপ্রধান কাতারকে একটি প্রস্তাবও দিয়েছিলেন। হয়তো এ নিয়ে আলোচনা চলছে। প্রস্তাবটির বিষয়ে আপনারা কতটুকু আশাবাদী- জানতে চাইলে পররাষ্ট্রমন্ত্রী সাংবাদিকদের বলেন, আপনারা জানেন, আমরা জ্বালানি নির্ভরশীল দেশ। ইউক্রেন যুদ্ধের কারণে বিশ্ব জ্বালানি সংকটে পড়েছে। আর কাতার হচ্ছে বিশ্বের সবচেয়ে বৃহৎ জ্বালানি রপ্তানিকারক দেশ। আমরা সবশেষ যখন তাদের সঙ্গে আলাপ করেছি, তখন তাদের কাছ থেকে কোটাভিত্তিক জ্বালানি সংগ্রহের কথা বলেছি। আমরা তাদের কাছে আরও জ্বালানি চেয়েছি। কিন্তু ইউরোপের দেশগুলো বেশি চাচ্ছে। জ্বালানির ক্ষেত্রে তারা লং টার্ম কনট্রাক্টে যাচ্ছে। যেটা জ্বালানি প্রতিমন্ত্রী ভালো বলতে পারবেন।

ড. মোমেন আরও বলেন, জ্বালানির ক্ষেত্রে দীর্ঘ মেয়াদি রাষ্ট্রীয় চুক্তি হয়। আমাদের অনুরোধের পরিপ্রেক্ষিতে কাতার বলেছিল, তারা বিষয়টি নিয়ে চিন্তাভাবনা করবে। তাদের কাছ থেকে যেন আরও জ্বালানি পাই, সেজন্য অনুরোধ করেছি। তারা যে আমাদের সঙ্গে আলাপ করতে রাজি হয়েছে, এটি একটি ভালো দিক।

এছাড়া ব্রুনাইসহ বিভিন্ন দেশ থেকে জ্বালানি সংগ্রহের চেষ্টা করা হচ্ছে জানিয়ে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, কিন্তু তাদের সরবরাহ কম। আর একবার যদি কাতারের সঙ্গে সম্পর্ক হয়েই যায়…আমরা তাদের কাছ থেকে আরও জ্বালানি পাবো। কাতার খুবই প্রভাবশালী একটি দেশ। তাদের সঙ্গে সম্পর্ক ভালো থাকলে আমাদের প্রবাসীদেরও উপকার হবে। আমরা কাতারের সঙ্গে সম্পর্ক গভীর করতে চাই।

তিনি বলেন, আমরা খুবই খুশি যে কাতারের আমির শেখ তামিম বিন হামাদ আল থানি খুবই সম্মানের সঙ্গে আমাদের দাওয়া দিয়েছেন।

কাতারের সঙ্গে গেল মার্চে একটি প্রতিরক্ষা চুক্তি হয়েছে বাংলাদেশের। সে চুক্তির অধীন ১ হাজার ১২৯ জন সেনাসদস্য কাজ করবেন। কাতারের আমিরের সঙ্গে যে দ্বিপাক্ষিক বৈঠক হবে; সেখানে এ বিষয়ে আলোচনা করা যাবে কি না- জানতে চাইলে তিনি বলেন, এটি অবশ্যই ভালো সুযোগ। এরই মধ্যে কুয়েতে আমাদের কয়েক হাজার সেনাসদস্য রয়েছেন। এসব দেশে প্রতিরক্ষা বাহিনীর সদস্যরা থাকলে এর বিনিময়ে পয়সা-টয়সা দেবে। আমাদের মধ্যে সম্পর্কও বাড়বে। আমাদের এক্সপার্টিজ আছে, রিসোর্স আছে, চাইলে সেগুলো আমরা শেয়ার করতে পারি। সম্পর্ক ভালো হওয়ার নতুন নতুন সুযোগ আসছে।

নিষেধাজ্ঞা দেওয়া দেশ থেকে কোনো পণ্য না কেনার ঘোষণা দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী। কেন তিনি এ ঘোষণা দিলেন- জানতে চাইলে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, রাজনীতিবিদেরা অনেক কথা বলেন। যেন অন্যদের জন্য সতর্ককবাণী থাকে। আক্ষরিক অর্থে সেটিকে কীভাবে নেবেন, তা আমি বলতে পারবো না। আমরা এখন ফেলে দেওয়ার দেশ না, আগের মতো দারিদ্র্যক্লিষ্ট না। আমরা বিজয়ী জাতি। কাজেই কেউ চোখ রাঙিয়ে তাকালে আমরা যে ভড়কে যাবো, তা কিন্তু না।

শেয়ার করুন