রাশিয়ার সীমান্ত নিরাপত্তা জোরদারের নির্দেশ দিয়েছেন প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন। ইউক্রেনের ভেতর থেকে সশস্ত্র দল রাশিয়ার বেলগোরদ অঞ্চলে ঢুকে হামলা চালানোর পর এ নির্দেশনা সামনে এলো।
রোববার (২৮ মে) এক প্রতিবেদনে এসব তথ্য জানায় ব্রিটিশ বার্তাসংস্থা রয়টার্স।
রয়টার্সের প্রতিবেদনে বলা হয়, মস্কোর নিয়ন্ত্রণাধীন ইউক্রেনীয় অঞ্চলে দ্রুত রুশ সামরিক ও বেসামরিক চলাচল নিশ্চিত করতে রোববার রাশিয়ার সীমান্ত নিরাপত্তা জোরদার করার নির্দেশ দিয়েছেন প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন।
বর্ডার গার্ড দিবস উপলক্ষে এদিন রাশিয়ার ফেডারেল সিকিউরিটি সার্ভিসের (এফএসবি) অধীনস্ত সীমান্তরক্ষায় নিয়োজিত সরকারি প্রতিষ্ঠানকে অভিনন্দন বার্তা দেন পুতিন। সেখানে তিনি বলেন, তাদের কাজ হচ্ছে, যুদ্ধ চলছে এমন অঞ্চলগুলোর আশপাশের সীমানা সুরক্ষিত রাখা।
সাম্প্রতিক সপ্তাহগুলোতে রাশিয়ার অভ্যন্তরে আক্রমণের তীব্রতা বৃদ্ধি পেয়েছে। প্রধানত রুশ সীমান্ত বরাবর অঞ্চলগুলোতে ড্রোন হামলার পাশাপাশি দেশের বেশ গভীর এলাকাতেও বেশ কয়েকটি হামলা হয়েছে। এছাড়া শনিবার (২৭ মে) মস্কোর উত্তর-পশ্চিমে একটি তেল পাইপলাইন নিয়ন্ত্রণকারী স্থাপনায় হামলার ঘটনা ঘটেছে।
ক্রেমলিনের টেলিগ্রাম মেসেজিং চ্যানেলে পোস্ট করা এক বার্তায় প্রেসিডেন্ট পুতিন বলেছেন, রুশ ফেডারেশনের নতুন এলাকাগুলোতে পাঠানো খাদ্য, মানবিক সহায়তার নির্মাণ সামগ্রীসহ সামরিক-বেসামরিক যানবাহন ও কার্গো যানবাহন উভয়ের দ্রুত চলাচল নিশ্চিত করা প্রয়োজন।
গত বছর রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন ইউক্রেনের খেরসন, জাপোরিঝিয়া, লুহানস্ক ও দোনেৎস্ক অঞ্চল অধিগ্রহণ করেন। মূলত গণভোটের পর এসব অঞ্চল অধিগ্রহণের ঘোষণা দেন তিনি।
শনিবার রুশ কর্মকর্তারা জানান, বেলগোরোদে ইউক্রেনের গোলাবর্ষণে তিনজন আহত হয়েছেন। এর আগে চলতি সপ্তাহে এ অঞ্চলটি হামলার লক্ষ্যবস্তুতে পরিণত হয়। আর এটিই রাশিয়ার প্রতিরক্ষা ও সামরিক সক্ষমতা নিয়ে সন্দেহের জন্ম দিয়েছে।
রয়টার্স বলছে, ইউক্রেন সীমান্তবর্তী রাশিয়ান অঞ্চলগুলোর মধ্যে কুরস্ক ও বেলগোরোদ সবচেয়ে বেশিবার হামলার লক্ষ্যবস্তুতে পরিণত হয়েছে। এসব হামলায় বিদ্যুৎ, রেল ও সামরিক অবকাঠামো ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এর জন্য স্থানীয় কর্মকর্তারা ইউক্রেনকে দায়ী করেছেন।
এদিকে কিয়েভ খুব কম সময়ই প্রকাশ্যে রাশিয়ার অভ্যন্তরে ও ইউক্রেনের রুশ-নিয়ন্ত্রিত অঞ্চলে হামলার দায় স্বীকার করেছে। তবে দেশটি বলেছে, রুশ অবকাঠামো ধ্বংস করা তাদের পরিকল্পিত স্থল হামলার প্রস্তুতির অংশ।
এদিকে, দখলকৃত অঞ্চলগুলো থেকে রুশ সেনাদের হটিয়ে দিতে পাল্টা আক্রমণ শুরুর জন্য ইউক্রেন প্রস্তুত রয়েছে বলে জানান ইউক্রেনের উচ্চপদস্থ কর্মকর্তা ওলেকসি দানিলভ। কিন্তু কখন কোন সময় এ পাল্টা আক্রমণ শুরু হবে সেটির কোনও নির্দিষ্ট তারিখ জানাননি তিনি। তবে নিজেদের ভূখণ্ড ফিরিয়ে নিতে কাল, পরশু বা এক সপ্তাহের মধ্যে আমাদের অভিযান শুরু হতে পারে বলে জানান তিনি।
রুশ বাহিনীর বিরুদ্ধে পাল্টা-আক্রমণ করার পরিকল্পনার কথা ইউক্রেন কয়েক মাস ধরেই বলে আসছে। কিন্তু সেনাদের প্রশিক্ষণ ও পশ্চিমা মিত্রদের কাছ থেকে পর্যাপ্ত সরঞ্জাম পেতে দেরি হওয়ায়, এখন পর্যন্ত সে আক্রমণ দেখা যায়নি। অনেকের দাবি, এ সময়ের মধ্যে রাশিয়াও তাদের প্রতিরক্ষা প্রস্তুতি সেরে নিয়েছে।
সূত্র: রয়টার্স