আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) প্রেসক্রিপশনে বাজেট করেননি বলে জানিয়েছেন অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল। তিনি বলেন, প্রেসক্রিপশনে বাজেট করিনি। তাদের পরামর্শের যেটুকু গ্রহণ করা যায়, সেটুকু করব। সেখানে আমাদের কোনো আপত্তি নেই। আইএমএফ শুধু ঋণ দেয় না, পরামর্শও দেয়। তারা শুধু অর্থ দিয়ে সাহায্য করে না, অর্থনৈতিক বিভিন্ন সংস্কারেও সহায়তা করে। তাদের কাছ থেকে অনেক কিছু শেখারও থাকে।
অর্থমন্ত্রী আজ শুক্রবার বিকেলে বাজেটোত্তর সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা বলেন। অর্থ মন্ত্রণালয় রাজধানীর বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে এ সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করে। তিনি গতকাল বৃহস্পতিবার জাতীয় সংসদে ২০২৩-২৪ অর্থবছরের বাজেট উপস্থাপন করেন।
এদিকে মূল্যস্ফীতি নিয়ে শঙ্কিত থাকলেও তা নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা করছেন বলে জানান অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল। তিনি বলেন, মূল্যস্ফীতি নিয়ে আমরা নিজেরাও শঙ্কিত। সারাবিশ্বেই এখন উচ্চ মূল্যস্ফীতি। তবে আমরা খাবার তো বন্ধ করতে পারব না। আমরা একটা নমনীয় পথে এগোচ্ছি। যেসব কারণে এটি হয়, সেটি নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা করছি। প্রয়োজন অনুযায়ী ছাড় দিচ্ছি।
সংবাদ সম্মেলনে অর্থমন্ত্রী ২০০৯ সালে আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসার সময়কার মূল্যস্ফীতির কথা উল্লেখ করেন। তিনি বলেন, যখন আমরা ক্ষমতায় আসি, তখন মূল্যস্ফীতি ছিল ১২ শতাংশ। পরের ১০ বছরে তা ৬ শতাংশে নেমে আসে। সারা বিশ্বে মূল্যস্ফীতি অনেক বেড়েছে। এখন খুব খারাপ সময়। প্রধানমন্ত্রীর নেতৃত্বে আমরা ভালো আছি। এবারও যেসব প্রাক্কলন আমাদের আছে, সবই আমরা বাস্তবায়ন করতে পারব। সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচির মাধ্যমে প্রচুর খাদ্য সরবরাহ করা হচ্ছে বলেও মন্তব্য করেন অর্থমন্ত্রী।
সূচনা বক্তব্যে প্রস্তাবিত বাজেট দেশের মানুষের কল্যাণে ব্যবহৃত হবে বলে মনে করেন অর্থমন্ত্রী। তিনি বলেন, বাজেটে দেওয়া প্রতিশ্রুতির কতটা বাস্তবায়ন হচ্ছে, পাঁচ বছর ধরেই তা জানিয়ে আসছি। আমরা ব্যর্থ হইনি। ভবিষ্যতেও ব্যর্থ হব না।
প্রস্তাবিত বাজেটে কর শনাক্তকরণ নম্বরধারীদের (টিআইএন) রিটার্ন দাখিল করা এবং রিটার্ন দাখিল করলে দুই হাজার টাকা কর দেওয়া বাধ্যতামূলক করা হয়েছে।
সংবাদ সম্মেলনে আয়কর প্রসঙ্গে কথা বলেন জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) চেয়ারম্যান আবু হেনা মো. রহমাতুল মুনিম। তিনি বলেন, ন্যূনতম আয়কর হিসেবে দুই হাজার টাকা সরকারের কোষাগারে দিয়ে উন্নয়নে শামিল হওয়া গর্বের ব্যাপার। তিনি আরও বলেন, দেখে নিতে অনুরোধ করব কাদের টিআইএন আছে। টিআইএন বাধ্যতামূলক হবে আমদানিকারক প্রতিষ্ঠানের জন্য, গাড়িসহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে। গরিব মানুষের জন্য তো টিআইএন বাধ্যতামূলক নয়। তাই আমি মনে করি, তাদের দুই হাজার টাকা সরকারের কোষাগারে দিয়ে উন্নয়নে শামিল হওয়া গর্বের ব্যাপার।