২০২৩-২৪ অর্থবছরের জন্য প্রস্তাবিত বাজেটে টেক্সটাইল, রপ্তানি খাত ও এসএমই খাতের জন্য তেমন কিছু দেখা যায়নি বলে জানিয়েছেন ব্যবসায়ীদের শীর্ষ সংগঠন এফবিসিসিআই সভাপতি মো. জসিম উদ্দিন। তিনি বলেন, টেক্সটাইল খাতের উন্নয়নে ম্যান মেড ফাইবার থেকে ভ্যাটসহ সব ধরনের কর প্রত্যাহার এবং রপ্তানির উৎসে কর ১ শতাংশ থেকে কমিয়ে ০.৫ শতাংশ করার জন্য আবারও সুপারিশ করছি।
শনিবার (৩ জুন) রাজধানীর মতিঝিলের এফবিসিসিআই আইকনে ২০২৩-২৪ অর্থবছরের প্রস্তাবিত জাতীয় বাজেট নিয়ে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ কথা বলেন।
সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে মো. জসিম উদ্দিন বলেন, প্রস্তাবিত বাজেটে জমি ও অ্যাপার্টমেন্টের রেজিস্টেশনকালে উৎসে আয়কর বৃদ্ধির কথা বলা হয়েছে। এছাড়া সিমেন্ট, পাথর, টাইলস, লিফট, সিরামিক, গ্লাস, সুইচ-সকেট, কিচেনওয়্যারসহ ১০-১২টি পণ্যের ওপর অতিরিক্ত শুল্ক আরোপ করা হয়েছে। এর ফলে নির্মাণখাত ক্ষতিগ্রস্ত হবে। তাই জমির রেজিস্ট্রেশনকালে উৎসে আয়কর পূর্বের অবস্থায় রাখার জন্য প্রস্তাব করছি।
তিনি বলেন, যথাযথ বিনিয়ােগ ও শিল্পোন্নয়ন ছাড়া অর্থনৈতিক উন্নয়নের গতিধারাকে অব্যাহতে রাখা সম্ভব নয়। রাজস্ব নীতিতে ধারাবাহিকতা বজায় রাখা জরুরি, যাতে বিনিয়ােগকারীরা আস্থার সঙ্গে বাবসা-বাণিজ্য চালিয়ে যেতে পারেন। এজন্য মুদ্রানীতি ও রাজস্ব নীতির মধ্যে সুসমন্বয় রাখা জরুরি বলে আমরা মনে করি। বাজেটের আকার বিবেচনায় নিয়ে অভ্যন্তরীণ রাজস্ব আহরণের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণের পরিবর্তে বাজেট বক্তৃতায় অনুচ্ছদ ২২০-এ উল্লিখিত দিকনির্দেশনা অনুসার করা সমীচীন।
এফবিসিসিআই সভাপতি, অনুচ্ছেদ ২২৩ এর উল্লিখিত ‘কর-জিডিপি অনুপাতের উন্নতি সাধনের ক্ষেত্রে কর অব্যাহতি অন্যতম প্রতিবন্ধকতা’ বলে উল্লেখ করা হয়েছে, যা যথাযথ নয়। প্রকৃতপক্ষে কর-জিডিপি হার টেকসই প্রবৃদ্ধির জন্য অনুচ্ছেদ ২২৫ এর উল্লিখিত জাতীয় রাজস্ব বাের্ডের বাস্তব পদক্ষেপ গ্রহণে দীর্ঘসূত্রিতা এবং শীথিলতার কারণে কর-জিডিপি প্রবৃদ্ধির হার কার্যক্রম বাড়ানাোর ক্ষত্রে প্রতিবন্ধকতার সৃষ্টি হয়েছে। সময়বদ্ধ কর্মপরিকল্পনার মাধ্যমে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের উল্লিখিত সংস্কার কর্মসূচি যথাযথভাবে বাস্তবায়ন করতে হবে।
তিনি বলেন, বাজেট বক্তব্যের ১৭৭ নম্বর অনুচ্ছেদে পর্যটন শিল্পের বিকাশে পর্যটন মহাপরিকল্পনার কথা বলা হয়েছে। অন্যদিকে আন্তর্জাতিক মানসম্পন্ন আবাসিক হাটেল কর্তৃক মূলধনী যন্ত্রপাতি ও উপকরণ আমদানিতে রেয়াতি সুবিধা সংক্রান্ত এসআরও বাতিল করা হয়েছে। এ ধরনের সিদ্ধান্ত পর্যটন শিল্পের বিকাশে অন্তরায় হিসেবে কাজ করবে। তাই এ রেয়াতি সুবিধা পর্যটন শিল্পের বিকাশে অব্যাহত রাখার প্রস্তাব করছি।
জসিম উদ্দিন আরও বলেন, প্রস্তাবিত বাজেটে ২৪৮, ২৪৯ এবং ২৫০ নং অনুচ্ছেদে উল্লিখিত কয়েকটি পণ্যে ১৫ শতাংশ, ৫ শতাংশ, ৭.৫ শতাংশ, ২ শতাংশ হারে মূসক আরোপ করা হয়েছে, যা মূসক আইনের মৌলিক নীতিমালার সঙ্গে সংগতিপূর্ণ নয়। পণ্য এবং সেবা খাতে মল্য সংযােজন ভিত্তিক একক ১৫ শতাংশ হারে মূসক আরাোপ করা হলে খাত নির্বিশষে সব পণ্য এবং সেবা খাত বিভিন্ন এস আর ও ভিত্তিক অসম করহার এবং জটিলতা থেকে রেহাই পাবে এবং কর ব্যবস্থা সহজ ও সরল হবে।
এসময় ঢাকা চেম্বার সভাপতি ব্যারিস্টার সমীর সাত্তার, এফবিসিসিআই সহ-সভাপতি আমিন হেলালী, হাবিবুল্লাহ ডন, পরিচালক দিলিপ কুমার আগরওয়ালা প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।