নতুন অর্থবছরের বাজেট ঘোষণার সপ্তাহ ইতিবাচক ধারায় দেশের পুঁজিবাজারে লেনদেন হয়েছে। ফলে লেনদেন, সূচক ও দাম কমার বিপরীতে অধিকাংশ শেয়ারের দাম বেড়েছে। তাতে নতুন করে বিনিয়োগকারীরা প্রায় ২ হাজার কোটি টাকার মূলধন ফিরে পেয়েছে।
২০২৩-২৪ অর্থবছরের বাজেট ঘোষণা করা হয় বৃহস্পতিবার (১ জুন)। গেল এ সপ্তাহে দেশের পুঁজিবাজারে মোট পাঁচ কর্মদিবস লেনদেন হয়েছে। এর মধ্যে তিন কর্মদিবস উত্থান আর দুই কর্মদিবস সূচক পতনের মাধ্যমে লেনদেন হয়েছে।
বেশির ভাগ দিন সূচকের উত্থান হওয়ায় মে মাসের শেষ সপ্তাহে দেশের প্রধান পুঁজিবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) বিনিয়োগকারীদের বাজার মূলধন (পুঁজি) ফিরেছে ১ হাজার ৭২১ কোটি টাকার বেশি।
সাপ্তাহিক বাজার বিশ্লেষণে এ চিত্র দেখা গেছে। প্রায় একই চিত্র দেশের অপর পুঁজিবাজার চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জেও (সিএসই)।
রোববার (২৮ মে) সপ্তাহের প্রথম কর্মদিবসে লেনদেনের শুরুতে ডিএসইর মূলধন ছিল ৭ লাখ ৭২ হাজার ৫৫৯ কোটি ৯৬ লাখ ১ হাজার ৬৪৭ টাকা। আর শেষ দিন বৃহস্পতিবার (১ জুন) লেনদেন শেষে মূলধন দাঁড়ায় ৭ লাখ ৭৪ হাজার ২৮১ কোটি ২৬ লাখ ৪৪ হাজার ৪৮০ টাকা। অর্থাৎ টাকার অঙ্কে পুঁজি বেড়েছে ১ হাজার ৭২১ কোটি ৩০ লাখ ৪২ হাজার ৮৩৩ টাকা। এর আগের সপ্তাহে মূলধন ফিরেছিল ১ হাজার ৯২২ কোটি ৯ লাখ ৪৩ হাজার ৩৯১ টাকা। দুই সপ্তাহে প্রায় ৪ হাজার কোটি টাকার মূলধন ফিরেছে বিনিয়োগকারীদের।
বিদায়ী সপ্তাহে ডিএসইতে মোট ৩৯২টি প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিটের লেনদেন হয়েছে। এর মধ্যে ১৮৮টি কোম্পানির শেয়ারের দাম বেড়েছে, কমেছে ৮১টির আর অপরিবর্তিত ছিল ২০৩টির। এর আগের সপ্তাহে লেনদেন হওয়া কোম্পানিগুলোর মধ্যে দাম বেড়েছিল ১১৮টির, কমেছিল ৬৯টির আর অপরিবর্তিত ছিল ২০২টি কোম্পানির শেয়ারের দাম।
বিদায়ী সপ্তাহে ডিএসইর প্রধান সূচক আগের সপ্তাহের চেয়ে ২৯ দশমিক ৮২ পয়েন্ট বেড়ে ৬ হাজার ৩৫৫ পয়েন্টে দাঁড়িয়েছে। ডিএসইর অপর দুই সূচকের মধ্যে ডিএসইএস সূচক ৮ দশমিক ৭৯ পয়েন্ট বেড়ে ১ হাজার ৩৭৯ পয়েন্টে ও ডিএস-৩০ সূচক আগের সপ্তাহের চেয়ে ২ দশমিক ৮৩ পয়েন্ট বেড়ে ২ হাজার ২০১ পয়েন্টে দাঁড়িয়েছে।
এ সপ্তাহে ফ্লোর প্রাইসের কারণে শেয়ার লেনদেন হয়নি দেড় শতাধিক কোম্পানির। তারপরও বিদায়ী সপ্তাহে ডিএসইতে মোট লেনদেন হয়েছে ৫ হাজার ৫২১ কোটি ৬৪ লাখ ১০ হাজার ৫৮০ টাকা। এর আগের সপ্তাহে লেনদেন হয়েছিল ৪ হাজার ৫৮৫ কোটি ৮৬ লাখ ৬১ হাজার ৮৪৮ টাকা। অর্থাৎ ৯৩৫ কোটি ৭৭ লাখ ৪৮ হাজার ৭৩২ টাকার শেয়ার লেনদেন বেড়েছে, শতাংশের হিসাবে যা ২০ দশমিক ৪১ শতাংশ।
গত সপ্তাহে সবচেয়ে বেশি লেনদেন হয়েছে ইন্ট্রাকো রিফুয়েলিং স্টেশনের শেয়ার। এরপর যথাক্রমে লেনদেন হয়েছে নাভানা ফার্মাসিটিউক্যালসের শেয়ার, লাফার্জহোলসিম, ইউনিটক হোটেল, বসুন্ধরা পেপার, রূপালী লাইফ ইনস্যুরেন্স, মেঘনা লাইফ ইন্স্যুরেন্স, জেমিনি সি ফুড, ইস্টার্ন হাউজিং এবং রয়েল টিউলিপ সি পার্ল বিচ রিসোর্ট অ্যান্ড স্পার শেয়ার।
দেশের অপর পুঁজিবাজার সিএসইতে লেনদেনেও প্রায় একই চিত্র ছিল। বিদায়ী সপ্তাহে সিএসইর সার্বিক সূচক ১১৮ পয়েন্ট বেড়ে ১৮ হাজার ৭৫৫ পয়েন্টে দাঁড়িয়েছে।
এসময়ে লেনদেন হয়েছে ৮১ কোটি ৮৩ লাখ ৮৭ হাজার ৯৬৮ টাকা। এর আগের সপ্তাহে লেনদেন হয়েছিল ৯৫ কোটি ৬৫ লাখ ৬৯ হাজার ৫২৬ টাকা।
লেনদেন হওয়া কোম্পানিগুলোর মধ্যে দাম বেড়েছে ১০০টির, কমেছে ৭১টির আর অপরিবর্তিত রয়েছে ১৬৫টি প্রতিষ্ঠানের শেয়ারের দাম।