মহান মুক্তিযুদ্ধের অন্যতম সংগঠক, রাজনীতির ‘রহস্য পুরুষ’ বীর মুক্তিযোদ্ধা সিরাজুল আলম খানের মৃত্যুতে গভীর শোক ও দুঃখ প্রকাশ করেছে ঢাকায় বসবাসরত ব্রাহ্মণবাড়িয়াবাসীদের সংগঠন ‘ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা সমিতি, ঢাকা’।
শুক্রবার (৯ জুন) বিকেলে ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা সমিতি ঢাকা’র সহ সভাপতি ও সাবেক সাধারণ সম্পাদক, বীর মুক্তিযোদ্ধা মো. মাহবুবর রহমানের স্মরণে আয়োজিত আলোচনা সভায় সিরাজুল আলম খানের মৃত্যুতে শোক প্রস্তাব উত্থাপন করেন সমিতির সভাপতি এবং মত ও পথ সম্পাদক যুদ্ধাহত বীর মুক্তিযোদ্ধা র আ ম উবায়দুল মোকতাদির চৌধুরী এমপি। শোক প্রস্তাবটি সর্বসম্মতিক্রমে গৃহীত হয়। এছাড়া স্বাধীনতা যুদ্ধের অন্যতম সংগঠক, স্বাধীন বাংলা কেন্দ্রীয় ছাত্র সংগ্রাম পরিষদের আহ্বায়ক ও ছাত্রলীগের সভাপতি নূরে আলম সিদ্দিকীর মৃত্যুতে শোক প্রস্তাব গৃহীত হয়।
রাজধানীর তোপখানা রোডের মাহবুব প্লাজায় অবস্থিত ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা সমিতি ঢাকা’র নিজস্ব কার্যালয়ে এই আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়।
এসময় মোকতাদির চৌধুরী বলেন, সিরাজুল আলম খানের কাছে সমগ্র দেশবাসীর মতো আমিও অনেক ঋণী, কারণ তিনি আমাদেরকে মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণ করার ব্যাপারে উদ্বুদ্ধ করেছিলেন।
তিনি বলেন, বঙ্গবন্ধুর পরে আমার ব্যক্তি জীবনে যাদের অবদান সবচেয়ে বেশি, চার যুবনেতা (সিরাজুল আলম খান, ফজলুল হক মনি, আব্দুর রাজ্জাক,তোফায়েল আহমেদ) তাদের অন্যতম ছিলেন সিরাজুল আলম খান। বঙ্গবন্ধুর অত্যন্ত স্নেহের একজন ছিলেন সিরাজুল আলম খান। তিনি যখন বঙ্গবন্ধুর বিরুদ্ধে গিয়ে জাসদ গঠন করলেন, তখনও বঙ্গবন্ধুর সাথে তার একটা যোগাযোগ ছিল।
মোকতাদির চৌধুরী বলেন, পঁচাত্তরে বঙ্গবন্ধু হত্যার পরে জিয়াউর রহমানের শাসনকালে দীর্ঘ দুই বছর কারাগারে আমি এবং ওনি পাশাপাশি ছিলাম। প্রথমে আমরা ফাঁসির সেলে বন্দি ছিলাম। সিরাজ ভাইয়ের দুর্ভাগ্য হলো- স্বাধীন বাংলাদেশে তিনি কারাগারে ডিভিশনটা পর্যন্ত পাননি।
ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা সমিতি ঢাকা’র সভাপতি যুদ্ধাহত বীর মুক্তিযোদ্ধা র আ ম উবায়দুল মোকতাদির চৌধুরী এমপির সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত আলোচনা সভাটি সঞ্চালনা করেন সমিতির সাধারণ সম্পাদক মোঃ খলিলুর রহমান। সভার শুরুতেই সমিতির সহ-সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা মো. মাহবুবর রহমানের মৃত্যুতে শোক প্রস্তাব পেশ করা হয়।
এসময় মো. মাহবুবর রহমানের কর্মজীবন নিয়ে বক্তব্য রাখেন সমিতির সভাপতি র আ ম উবায়দুল মোকতাদির চৌধুরী এমপি, সাধারণ সম্পাদক মোঃ খলিলুর রহমান, সহ-সভাপতি ইঞ্জিনিয়ার কবির আহমেদ ভূঁইয়া, কাজী আবুল বাশার, আলমগীর মিয়া, আবু তাহের, মোশাররফর হোসেন প্রমুখ।
সভা শেষে প্রয়াত মো. মাহবুবর রহমান ও সিরাজুল আলম খানের আত্মার শান্তি কামনা করে মোনাজাত করা হয়।
এদিন সমিতির পক্ষ থেকে বৃত্তি প্রদান অনুষ্ঠান নিয়ে আলোচনা করা হয় এবং ‘শিক্ষা বৃত্তি, স্মরণিকা প্রকাশনা ও সম্পাদনা’ নামে দুটি কমিটি গঠন করা হয়।