সংঘর্ষে জড়িয়ে ছাত্র ইউনিয়নের আলাদা সম্মেলন, পৃথক কমিটি

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিনিধি

বিবদমান দুই পক্ষের মধ্যে দফায় দফায় মারামারির মধ্য দিয়ে বাম ধারার ছাত্রসংগঠন ছাত্র ইউনিয়নের ‘ঐক্যবদ্ধ ৪১তম জাতীয় সম্মেলন’ শেষ হয়েছে। গত ১৬ মার্চ সম্মেলন উদ্বোধন হলেও বিরোধের কারণে সংগঠনটির ঐক্যবদ্ধ কাউন্সিল অধিবেশন পরে স্থগিত করা হয়।

গতকাল শুক্রবার আবার কাউন্সিল অধিবেশন বসলেও পদ ভাগাভাগি নিয়ে সংগঠনটির বিবদমান দুই পক্ষের মারামারিতে ঐক্যের সম্ভাবনা শেষ হয়ে যায়। পণ্ড হয় ঐক্যের সম্মেলন। এরপর দুই পক্ষ আলাদাভাবে কাউন্সিল অধিবেশন করে পৃথক কমিটির ঘোষণা দেয়।

এর আগে মতবিরোধের জেরে দুই বছর বিভক্ত থাকার পর ১৬ মার্চ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অপরাজেয় বাংলায় ঐক্যবদ্ধ সম্মেলনে এক মঞ্চে দেখা যায় ছাত্র ইউনিয়নের দুই অংশের নেতাদের। তারা সেখানে অনৈক্য অবসানের ঘোষণা দেন। যদিও সেই ঘোষণা ফলপ্রসূ হয়নি। পরে কাউন্সিল অধিবেশন স্থগিত করা হয়।

ওই সম্মেলনের প্রায় তিন মাসের মাথায় গতকাল ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র-শিক্ষক কেন্দ্র (টিএসসি) মিলনায়তনে আবারও কাউন্সিল করতে গেলে পূর্ণাঙ্গ কমিটিতে পদের ভাগ নিয়ে কথা-কাটাকাটি থেকে মারামারিতে জড়ায় দুই পক্ষ।

ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী ও ছাত্র ইউনিয়নের নেতাকর্মীদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, গতকালের কাউন্সিল অধিবেশনে কেন্দ্রীয় পূর্ণাঙ্গ কমিটির ৪১টি পদের মধ্যে ২১টি ফয়েজ উল্লাহ ও দীপক শীলপন্থীদের (একাংশের বিদায়ী দুই শীর্ষ নেতা) দিয়ে বাকি ২০টি পদ নিজেরা নিতে চেয়েছিলেন নজির আমিন চৌধুরী ও রাগীব নাঈমপন্থীরা (অন্য অংশের বিদায়ী দুই শীর্ষ নেতা)। কিন্তু ফয়েজ-দীপকপন্থীরা আরও বেশি পদ দাবি করেন।

নেতাকর্মীরা জানান, এ নিয়ে টিএসসি মিলনায়তনে ফয়েজ উল্লাহর সঙ্গে নজির-রাগীবপন্থী অংশের ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সভাপতি শিমুল কুম্ভকারের মতানৈক্য হয়।

একপর্যায়ে দুই পক্ষ কয়েক দফায় মারামারিতে জড়ায়। পরিস্থিতি কিছুটা শান্ত হওয়ার পর ফয়েজ-দীপকপন্থীরা পূর্ণাঙ্গ কমিটিতে আগের চেয়ে বেশি পদ দাবি করলে নজির-রাগীবপন্থীরা আলাদা কাউন্সিল অদিবেশন করার জন্য টিএসসি ছেড়ে ডাকসুতে (ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ) চলে যান। এরপর টিএসসিতে ফয়েজ-দীপকপন্থীদের নিজেদের মধ্যেও পদ ভাগাভাগি নিয়ে মারামারি হয়।

আজ শনিবার গণমাধ্যমে পাঠানো দুটি পৃথক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে আলাদা কমিটি গঠনের কথা জানায় ছাত্র ইউনিয়নের দুই পক্ষ। এর মধ্যে ফয়েজ-দীপকপন্থী অংশ দীপক শীলকে সভাপতি, তাসবিবুল গনিকে সাধারণ সম্পাদক ও রেজোয়ান হককে সাংগঠনিক সম্পাদক করে ৪১ সদস্যের কেন্দ্রীয় কমিটি ঘোষণা করা হয়েছে।

অন্যদিকে রাগীব নাঈমকে সভাপতি, রাকিবুল রনিকে সাধারণ সম্পাদক ও তামজিদ হায়দারকে সাংগঠনিক সম্পাদক করে ৪১ সদস্যের আরেকটি কমিটি ঘোষণা করেছে নজির-রাগীবপন্থী অংশ।

শেয়ার করুন