পার্বত্য জেলা বান্দরবানের দুর্গম পাহাড়ি সীমান্তের একটি বড় অংশজুড়ে নেই বর্ডার গার্ড বাংলাদেশের (বিজিবি) কোনো বিওপি (বর্ডার অবজারভেশন পোস্ট)। এজন্য সেসব এলাকা দিয়ে নির্বিঘ্নে যাতায়াত করতে পারেন উগ্রবাদী সংগঠন কুকি-চিন ন্যাশনাল ফ্রন্টের (কেএনএফ) সদস্যরা।
সম্প্রতি বিভিন্ন যৌথ অভিযানের মুখে কেএনএফ সদস্যরা অন্যত্র চলে যাওয়ার পর তারা যেন সীমান্ত এলাকা দিয়ে আবার যাওয়া-আসা করতে না পারেন সে লক্ষ্যে বিজিবি ফাঁকা অঞ্চলগুলোতে পাঁচটি নতুন বিওপি স্থাপন করবে।
বৃহস্পতিবার (১৫ জুন) দুপুরে বিজিবি সদরদপ্তরে বিজিবি-বিএসএফ মহাপরিচালক পর্যায়ের ৫৩তম সীমান্ত সম্মেলন শেষে সাংবাদিকদের সঙ্গে মতবিনিময় সভায় এ কথা জানিয়েছেন বিজিবি মহাপরিচালক মেজর জেনারেল এ কে এম নাজমুল হাসান। গত ১১ থেকে ১৪ জুন ভারতের নয়াদিল্লিতে চারদিনব্যাপী এ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়।
সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে বিজিবি মহাপরিচালক বলেন, পাহাড় থেকে কেএনএফ সদস্যরা চলে যাওয়ার পর ওই অঞ্চলগুলো কীভাবে রক্ষিত হবে তার অপারেশন পরিকল্পনা করেছি। পাশাপাশি যেসব এলাকা দুর্গম সেখানে এতদিন বিজিবির বিওপি ছিল না। চৈক্ষ্যংপাড়া থেকে দোপানিছড়া পর্যন্ত বিজিবির পাঁচটি বিওপি করার পরিকল্পনা করা হয়েছে। এরই মধ্যে চৈক্ষ্যংপাড়া কেএনএফমুক্ত করেছি আমরা। সেখানে বর্তমানে আমাদের বিজিবি সদস্যরা অবস্থান করছেন।
মতবিনিময় সভায় তিনি আরও জানান, অরক্ষিত জায়গাগুলোগুলোর যথাযথ সুরক্ষা নিশ্চিত করতেই নতুন বিওপি স্থাপন করা হবে। দেশের সীমান্ত এলাকা দিয়ে কোনো কুকি-চিন সদস্য যেন প্রবেশ বা বাইরে যেতে না পারে এ বিষয়ে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিয়েছে বিজিবি।
কেএনএফপ্রধান নাথান বমকে ভারত থেকে ফিরিয়ে দেওয়ার এক প্রশ্নের জবাবে বিজিবি মহাপরিচালক বলেন, এটি সরকারের উচ্চ পর্যায় থেকে আলোচনার বিষয়। নাথান বমের হস্তান্তরের বিষয়ে বিএসএফের সঙ্গে কোনো আলোচনা হয়নি।
কেএনএফ যে অস্ত্র ব্যবহার করছে তা ভারত কিংবা মিয়ানমার থেকে আসছে। চরমপন্থি এ গোষ্ঠীটিকে অস্ত্র সরবরাহ বন্ধের বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমাদের যে তথ্যগুলো ছিল সেগুলো আমরা বিএসএফকে জানিয়েছি। বিএসএফও যেন তাদের সীমানা সিল করে সে বিষয়ে তাদের বলা হয়েছে। তারা আমাদের আশ্বস্ত করেছেন।
মেজর জেনারেল এ কে এম নাজমুল হাসান আরও বলেন, বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর সঙ্গে পার্বত্য চট্টগ্রামে শান্তিরক্ষায় কাজ করছে বিজিবি। কেএনএফের বিরুদ্ধে সেনাবাহিনীর সঙ্গে যৌথভাবে অপারেশন করছি। এরই মধ্যে কেএনএফের একটি ক্যাম্প দখল করা হয়েছে। সেই ক্যাম্প থেকে বেশকিছু আগ্নেয়াস্ত্র, কেএনএফের ইউনিফর্ম ও ওয়াকিটকি উদ্ধার করা হয়েছে।