‘বিদেশি সংস্থার ঋণ আমাদের অধিকার, আমেরিকাও নেয়’

নিজস্ব প্রতিবেদক

পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান
ফাইল ছবি

পরিকল্পনামন্ত্রী ড. এম এ মান্নান বলেছেন, বিদেশি সংস্থা থেকে আমরা ঋণ নিয়েছি। এটা নিয়েও অনেকে সমালোচনা করছেন। ভুলে গেলে চলবে না, পুঁজিবাদী অর্থনীতি ঋণ ছাড়া চলতে পারবে না। আমাদের অনেক বিনিয়োগ প্রয়োজন। সেজন্য আমরা ঋণ নিচ্ছি। এটা কোনো সাহায্য নয়, এটা আমাদের অধিকার। আমেরিকাও ঋণ নেয়।

আজ (১৫ জুন) দুপুরে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে (ঢাবি) ‘বাজেট ২০২৩-২৪: শিক্ষা ও কর্মসংস্থান’ শীর্ষক সেমিনারে প্রধান অতিথির বক্তব্যে মন্ত্রী এ কথা বলেন। বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক মোজাফফর আহমেদ চৌধুরী মিলনায়তনে এ সেমিনার অনুষ্ঠিত হয়। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সেন্টার অন বাজেট অ্যান্ড পলিসি এ সেমিনারের আয়োজন করে।

ড. এম এ মান্নান বলেন, এবারের বাজেটে ভালো-মন্দ দুদিকই আছে। শিক্ষাখাতে বরাদ্দ কমেছে, এটা ঠিক। কিন্তু স্বাস্থ্য, অবকাঠামো, বিদ্যুৎ, সামাজিক সুরক্ষা খাতেও পর্যাপ্ত বরাদ্দ হয়েছে। তা না হলে অন্যদের সঙ্গে বৈষম্য হয়ে যাবে। আমাদের উদ্দেশ্য দারিদ্র্যের হার ও বৈষম্য কমিয়ে সবার জন্য সমান সুযোগ সৃষ্টি করা। আমরা এখনো পুরোপুরি সফল হইনি। পৃথিবীর কোনো দেশই পুরোপুরি বৈষম্য কমাতে পারেনি। আমেরিকাতেও বৈষম্য আছে।

শিক্ষা উপকরণের দাম বৃদ্ধিও বিষয়ে পরিকল্পনামন্ত্রী বলেন, ‘বিষয়টি প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে আমরা আলোচনা করবো। কীভাবে এ সমস্যার সমাধান করা যায়, তা খতিয়ে দেখতে হবে।’

সেমিনারে সভাপতিত্ব করেন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. আখতারুজ্জামান। মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন উন্নয়ন অধ্যয়ন বিভাগের অধ্যাপক ও সেন্টারের পরিচালক ড. এম আবু ইউসুফ।

অধ্যাপক আখতারুজ্জামান বলেন, শিক্ষা ও কর্মসংস্থান পরস্পর আন্তঃনির্ভরশীল। শিক্ষার গুণগত মান ও প্রায়োগিক ক্ষেত্র বৃদ্ধি করা গেলে দক্ষ গ্রাজুয়েট তৈরি করা যাবে। নতুন কর্মসংস্থানও তৈরি হবে। নতুন নতুন গবেষনা ও উদ্ভাবনের মাধ্যমে দেশের উন্নয়নকে আরও এগিয়ে নিতে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের সক্ষমতা বৃদ্ধি করতে হবে। এজন্য জাতীয় বাজেটে শিক্ষা ও গবেষণা খাতে বরাদ্দ আরও বৃদ্ধি করতে হবে।

মূল প্রবন্ধের ওপর আলোচনায় অংশ নেন উন্নয়ন অধ্যয়ন বিভাগের চেয়ারম্যান ড. রাশেদ আল মাহমুদ তিতুমীর ও এটুআই প্রকল্পের পরিচালক ড. দেওয়ান এম হুমায়ুন কবির।

রাশেদ আল মাহমুদ তিতুমীর বলেন, উন্নয়নের গল্প না করে কীভাবে সংগ্রাম করে টিকে থাকতে হবে, সামনে এগিয়ে যেতে হবে, সেটি নিয়ে আমাদের ভাবতে হবে। সেজন্য আগে রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠানগুলোর স্থবিরতা কাটিয়ে সেগুলোকে সচল করতে হবে। দায়বদ্ধতা ও জনকেন্দ্রিক রাজনৈতিক বন্দোবস্ত নিশ্চিত করতে হবে।

সেমিনরে সম্মানিত অতিথি ছিলেন তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সাবেক উপদেষ্টা রাশেদা কে চৌধুরী। বিশেষ অতিথি ছিলেন সামাজিক বিজ্ঞান অনুষদের ডিন অধ্যাপক ড. জিয়া রহমান।

বক্তারা বলেন, ট্যাক্স-জিডিপির রেশিও বিবেচনায় বাংলাদেশ সারাবিশ্বে তলানিতে রয়েছে। কীভাবে আরও বেশি সংখ্যক মানুষকে সংযুক্ত করে এ রেশিও বাড়ানো যায়, সেটি ঠিক করতে হবে। শিক্ষাখাতে বরাদ্দের পরিমাণ আরও বৃদ্ধি করতে হবে।

শেয়ার করুন