ঘূর্ণিঝড় বিপর্যয়: তলিয়ে গেছে বাড়িঘর, বিদ্যুৎ–বিচ্ছিন্ন বহু এলাকা

আন্তর্জাতিক ডেস্ক

ছবি : ইন্টারনেট

ঘূর্ণিঝড় ‘বিপর্যয়’ আঘাত হানার পর ভারত ও পাকিস্তানে কতটা ক্ষয়ক্ষতি হলো, তা স্পষ্ট হতে শুরু করেছে। বাড়িঘর তলিয়ে গেছে। বহু ঘরের চাল উড়ে গেছে। উপড়ে গেছে গাছ, বিদ্যুৎ সঞ্চালনের খুঁটি। এ ছাড়া বিদ্যুৎ–বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছেন হাজার হাজার মানুষ। ঘূর্ণিঝড়ের প্রভাবে হয়েছে ভূমিধস ও ভারী বৃষ্টি। খবর আল-জাজিরার।

অতিপ্রবল ঘূর্ণিঝড় ‘বিপর্যয়’ গতকাল বৃহস্পতিবার ভারত ও পাকিস্তানের উপকূলে আঘাত হানে। ভারতের সরকারি কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, গুজরাট রাজ্যে স্রোতের তোড়ে ভেসে দুজন মারা গেছেন। ‘বিপর্যয়’ নিয়ে কয়েক দিন ধরে সতর্কতা জারি করে রেখেছিল ভারত ও পাকিস্তানের আবহাওয়া দপ্তর।

ক্ষয়ক্ষতির আশঙ্কায় দুই দেশে প্রায় দুই লাখ বাসিন্দাকে নিরাপদ স্থানে সরিয়ে নেওয়া হয়। আবহাওয়া দপ্তরের কর্মকর্তাদের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, বৃহস্পতিবার রাতে গুজরাট রাজ্যের জাখু নামে একটি বন্দর দিয়ে উপকূলে ঢোকে ‘বিপর্যয়’। গুজরাটের এই বন্দর পাকিস্তানের সীমান্তবর্তী।

ভারতের আবহাওয়া দপ্তরের সর্বশেষ বুলেটিনে বলা হয়েছে, উপকূলে প্রবেশ করার পর ঘূর্ণিঝড় বিপর্যয়ের তেজ কমে শুক্রবার সকালে এটি সাধারণ ঘূর্ণিঝড়ে পরিণত হয়। এই সময় এর গতি ছিল ৮৫ থেকে ১০৫ কিলোমিটার। বিকেলের মধ্যে এর গতি আরও কমার কথা বলা হয় ওই বুলেটিনে।

ভারতের ঘূর্ণিঝড় নিয়ন্ত্রণ কক্ষ জানায়, বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় গুজরাটের ভবনগর জেলায় দুজনের মৃত্যু হয়েছে। তারা মেষপালক ছিলেন। ভারী বৃষ্টি থেকে গবাদিপশু বাঁচাতে গিয়ে তাদের মৃত্যু হয়। প্রবল ঝড়ের কারণে গুজরাটের কুচ জেলার অনেক জায়গায় বিদ্যুৎ সরবরাহ ব্যবস্থা বিঘ্নিত হয়। এ কথা জানিয়েছেন কুচ জেলায় উদ্ধার কার্যক্রম দেখভালের দায়িত্বে থাকা এক ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা।

ভারতের আবহাওয়া দপ্তর পূর্বাভাস দিয়েছে, শুক্রবার সারাদিন গুজরাট ও এর পার্শ্ববর্তী রাজস্থান রাজ্যে ভারী থেকে অতিভারী বৃষ্টি হতে পারে। এদিকে পাকিস্তানের দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা কর্তৃপক্ষ আজ শুক্রবার জানায়, আরব সাগরে সৃষ্ট অতিপ্রবল ঘূর্ণিঝড় বিপর্যয়ের গতি আগের চেয়ে বেশ কমেছে।

পাকিস্তানের আবহাওয়া দপ্তরের প্রধান সরদার সরফরাজ আল-জাজিরাকে বলেন, ‘বিপর্যয়ের’ কারণে আজ শুক্র ও আগামীকাল শনিবার পাকিস্তানের উপকূলীয় এলাকায় ভারী বৃষ্টি হতে পারে।

ইউনিসেফ জানিয়েছে, ঘূর্ণিঝড় বিপর্যয়ের কারণে ভারত ও পাকিস্তানের সোয়া ছয় লাখ শিশু ঝুঁকিতে রয়েছে। ইউনিসেফের দক্ষিণ এশিয়া অঞ্চলের পরিচালক নোয়ালা স্কিনার বলেন, ঘূর্ণিঝড় বিপর্যয়ের কারণে পাকিস্তানের সিন্ধু প্রদেশের শিশুরা ও তাদের পরিবার নতুন এক সংকটে পড়েছে। গত বছর পাকিস্তানে প্রাণঘাতী বন্যায় সবচেয়ে বেশি ক্ষতি হয়েছিল এই প্রদেশে।

শেয়ার করুন