সূচকের পতনের সঙ্গে কমেছে লেনদেন-বাজার মূলধন

মত ও পথ ডেস্ক

শেয়ার বাজার
ফাইল ছবি

গত সপ্তাহে শেয়ারবাজারে লেনদেন হওয়া যে কয়টি প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিটের দাম বেড়েছে, কমেছে তার তিনগুণের। এতে সপ্তাহের ব্যবধানে প্রধান শেয়ারবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) সবকয়টি মূল্যসূচকের বড় পতন হয়েছে। একই সঙ্গে কমেছে বাজার মূলধন। কমেছে লেনদেনের গতি।

সপ্তাহের ব্যবধানে ডিএসইতে দৈনিক গড় লেনদেন কমেছে প্রায় ২৯ শতাংশ। ডিএসই’র প্রধান মূল্যসূচক কমেছে এক শতাংশের ওপরে। পাশাপাশি বাজার মূলধন কমেছে ৪ হাজার কোটি টাকার ওপরে বা শূন্য দশমিক ৫৪ শতাংশ।

দাম বাড়ার থেকে দাম কমার তালিকা বড় হলেও গত কয়েক মাসের মতো তালিকাভুক্ত অর্ধেকের বেশি প্রতিষ্ঠানের ক্রেতা সংকট ছিল গত সপ্তাহজুড়েও। ফলে দুই শতাধিক প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিটের দাম ফ্লোর প্রাইসে আটকে রয়েছে। ক্রেতা না থাকায় ফ্লোর প্রাইসে আটকে থাকা এসব প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিট বিক্রি করতে পারছেন না বিনিয়োগকারীরা।

এমন বাজারে সপ্তাহের শেষ কার্যদিবসের লেনদেন শেষে ডিএসই’র বাজার মূলধন দাঁড়িয়েছে ৭ লাখ ৬৯ হাজার ৫২৯ কোটি টাকা। যা তার আগের সপ্তাহের শেষ কার্যদিবসে ছিল ৭ লাখ ৭৩ হাজার ৬৮৮ কোটি টাকা। অর্থাৎ সপ্তাহের ব্যবধানে ডিএসই’র বাজার মূলধন কমেছে ৪ হাজার ১৫৯ কোটি টাকা বা শূন্য দশমিক ৫৪ শতাংশ। বাজার মূলধন কমার অর্থ তালিকাভুক্ত প্রতিষ্ঠানগুলোর শেয়ার ও ইউনিটের দাম সম্মিলিতভাবে ওই পরিমাণ কমেছে।

সবশেষ সপ্তাহজুড়ে ডিএসইতে মোট ৩৯০টি প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিট লেননেদ হয়েছে। লেনদেনে অংশ নেওয়া এসব প্রতিষ্ঠানের মধ্যে ৪২টির শেয়ার ও ইউনিট দাম বাড়ার তালিকায় নাম লিখিয়েছে। বিপরীতে দাম কমেছে ১৪১টির। এছাড়া ২০৭টির দাম অপরিবর্তিত রয়েছে।

এতে ডিএসই’র প্রধান মূল্যসূচক ডিএসইএক্স কমেছে ৭২ দশমিক ৮২ পয়েন্ট বা এক দশমিক ১৫ শতাংশ। আগের সপ্তাহে সূচকটি কমেছে ২ দশমিক ৭১ পয়েন্ট বা শূন্য দশমিক শূন্য ৪ শতাংশ। এর মাধ্যমে টানা দুই সপ্তাহ পতনের মধ্যে থাকলো শেয়ারবাজার।

প্রধান মূল্যসূচকের সঙ্গে কমেছে বাছাই করা ভালো কোম্পানি নিয়ে গঠিত ডিএসই-৩০ সূচক। সপ্তাহজুড়ে সূচকটি কমেছে ১০ দশমিক ৩৯ পয়েন্ট বা শূন্য দশমিক ৪৭ শতাংশ। আগের সপ্তাহে সূচকটি কমে ৮ দশমিক ৪৪ পয়েন্ট বা শূন্য দশমিক ৩৮ শতাংশ।

ইসলামি শরিয়াহ ভিত্তিতে পরিচালিত কোম্পানি নিয়ে গঠিত ডিএসই শরিয়াহ সূচকও গত সপ্তাহে কমেছে। সপ্তাহজুড়ে সূচকটি কমেছে ১৩ দশমিক ২৫ পয়েন্ট বা শূন্য দশমিক ৯৬ শতাংশ। আগের সপ্তাহে সূচকটি এক দশমিক ১৪ পয়েন্ট বা শূন্য দশমিক শূন্য ৮ শতাংশ কমে।

সপ্তাহের প্রতি কার্যদিবসে ডিএসইতে গড়ে লেনদেন হয়েছে ৭৭৩ কোটি ৯২ লাখ টাকা। আগের সপ্তাহে প্রতিদিন গড়ে লেনদেন হয় এক হাজার ৮৮ কোটি ৯১ লাখ টাকা। অর্থাৎ প্রতি কার্যদিবসে গড় লেনদেন কমেছে ৩১৪ কোটি ৯৯ লাখ টাকা। যা আগের সপ্তাহের তুলনায় গড়ে ২৮ দশমিক ৯৩ শতাংশ কম।

গত সপ্তাহে ডিএসইতে মোট লেনদেন হয়েছে ৩ হাজার ৮৬৯ কোটি ৬১ লাখ টাকা। আগের সপ্তাহে মোট লেনদেন হয় ৫ হাজার ৪৪৪ কোটি ৫৬ লাখ টাকা। সে হিসাবে মোট লেনদেন কমেছে এক হাজার ৫৭৪ কোটি ৯৫ লাখ টাকা বা ২৮ দশমিক ৯৩ শতাংশ।

সপ্তাহজুড়ে ডিএসইতে টাকার অঙ্কে সব থেকে বেশি লেনদেন হয়েছে মেঘনা লাইফ ইন্স্যুরেন্সের শেয়ার। এ সময়ে কোম্পানিটির শেয়ার লেনদেন হয়েছে ১৯০ কোটি ৩৩ লাখ ৯ হাজার টাকা, যা মোট লেনদেনের ৪ দশমিক ৯২ শতাংশ। দ্বিতীয় স্থানে থাকা নাভানা ফার্মাসিউটিক্যালসের শেয়ার লেনদেন হয়েছে ১৮১ কোটি ৩২ লাখ ৩৪ হাজার টাকা। ১৩৯ কোটি ৭৯ লাখ ৭৫ হাজার টাকা লেনদেনের মাধ্যমে তৃতীয় স্থানে রয়েছে সি পার্ল বিচ রিসোর্ট।

এছাড়া লেনদেনের শীর্ষ দশ প্রতিষ্ঠানের তালিকায় রয়েছে- সোনালী লাইফ ইন্স্যুরেন্স, ফারইস্ট ইসলামী লাইফ ইন্স্যুরেন্স, ইন্ট্রাকো রিফুয়েলিং স্টেশন, রূপালী লাইফ ইন্স্যুরেন্স, ট্রাস্ট ইসলামী লাইফ, রংপুর ডেইরি অ্যান্ড ফুড প্রডাক্টস এবং পেপার প্রসেসিং।

শেয়ার করুন