হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদ অভিযোগ করে বলেছে, সরকারি দল ধর্মীয় সংখ্যালঘুদের উপেক্ষা করছে। আজ মঙ্গলবার রাজধানীর জাতীয় প্রেসক্লাবে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এ অভিযোগ করে পরিষদ। ‘ধর্ম মন্ত্রণালয়ের বাজেট বৈষম্য’ শিরোনামের এই সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য দেন সংগঠনটির সাধারণ সম্পাদক রানা দাশগুপ্ত।
রানা দাশগুপ্ত বলেন, প্রস্তাবিত ২০২৩-২৪ অর্থবছরের বাজেটে ধর্ম মন্ত্রণালয়ের উন্নয়ন খাতে ধর্মীয় সংখ্যালঘুদের জন্য বরাদ্দ মাত্র ৬ দশমিক ৪ শতাংশ। অন্যদিকে, সংখ্যাগুরুদের জন্য বরাদ্দ ৯৩ দশমিক ৬ শতাংশ। আনুপাতিক হারে সংখ্যালঘুদের জন্য বাজেটে বরাদ্দ কমছে।
হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদের সাধারণ সম্পাদক বলেন, পাঁচ দশক ধরে সংখ্যালঘুরা বৈষম্যের শিকার হচ্ছেন। এই বৈষম্য এখনো চলছে। হিন্দু কল্যাণ ট্রাস্টে ১০ থেকে ৪০ শতাংশ মুসলমান কাজ করেন। হিন্দুধর্মীয় কল্যাণ ট্রাস্টের নামে যে টাকা রয়েছে, তা–ও আবার ৪০ শতাংশ মুসলিম সম্প্রদায়ের জন্য খরচ করা হচ্ছে।
রানা দাশগুপ্ত আরও বলেন, মুক্তিযুদ্ধের নেতৃত্বদানকারী দলের কাছে যদি আজকে তারা উপেক্ষা-অবহেলার শিকার হয়ে থাকেন, হেফাজত ও জামায়াতকে যদি তারা (সরকারি দল) অবলম্বন করে থাকে, তাহলে তারা পরিষ্কার করে বলতে চান, দেশ একটি অন্ধকার জায়গায় চলে যাচ্ছে।
সংবাদ সম্মেলনে এক প্রশ্নের জবাবে রানা দাশগুপ্ত বলেন, সরকারি দল, প্রশাসন, রাজনীতি ও সমাজে সাম্প্রদায়িকতা আছে। সংবিধান সাম্প্রদায়িকতা দিয়ে আচ্ছাদিত।
সংবাদ সম্মেলনে হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদ বেশ কিছু দাবি জানায়। এগুলো হলো- রাজস্ব বাজেট থেকে বার্ষিক বরাদ্দ প্রদান করে হিন্দু, বৌদ্ধ ও খ্রিষ্টধর্মীয় কল্যাণ ট্রাস্টগুলোকে ফাউন্ডেশনে রূপান্তরকরণ; সংখ্যালঘু সুরক্ষা আইন প্রণয়ন; সংখ্যালঘু মন্ত্রণালয় ও জাতীয় সংখ্যালঘু কমিশন গঠন; সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের সঠিক শুমারির উদ্যোগ গ্রহণ; প্রতিটি জেলা-উপজেলা পর্যায়ে মডেল মন্দির/প্যাগোডা/গির্জা ও সাংস্কৃতিক কেন্দ্র স্থাপন; বাজেটে সংখ্যালঘুদের উন্নয়ন ও কল্যাণে পাঁচ হাজার কোটি টাকা থোক বরাদ্দ; সংস্কৃত ও পালি শিক্ষা বোর্ডের অধীন কর্মরত শিক্ষক ও কর্মচারীদের জাতীয় পে-স্কেলভুক্তকরণ।
সংবাদ সম্মেলনে সভাপতিত্ব করেন পরিষদের সভাপতি নিমচন্দ্র ভৌমিক। সঞ্চালনায় ছিলেন পরিষদের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মণীন্দ্র কুমার নাথ। উপস্থিত ছিলেন সংগঠনের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য মিলন কান্তি দত্ত ও ভিক্ষু সুনন্দপ্রিয়।