লোডশেডিং শিগগিরই যাবে না, আরও বেশ কিছুকাল থাকবে: সিপিডি

নিজস্ব প্রতিবেদক

বিদ্যুৎ, গ্যাস ও জ্বালানি তেলের মূল্যবৃদ্ধি, বিদ্যুৎ সাশ্রয়সহ যেসব উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে, সেগুলো সমস্যার সমাধানে কাজে আসেনি বলে মনে করছে বেসরকারি গবেষণা সংস্থা সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগ (সিপিডি)। সংস্থাটি বলছে, বিদ্যুৎ সরবরাহ বাড়েনি। লোডশেডিং শিগগিরই যাবে না। আরও বেশ কিছুকাল থাকবে বলেই শঙ্কা। গ্রামে ১০ ঘণ্টার বেশি লোডশেডিং হলেও তা আমলে নেওয়া হচ্ছে না।

‘বিদ্যুৎ ও জ্বালানি খাতের চ্যালেঞ্জ: প্রস্তাবিত বাজেটে সেসব চ্যালেঞ্জ জায়গা পেয়েছে কি?’ শীর্ষক বিদ্যুৎ ও জ্বালানি সমীক্ষায় এসব কথা বলেছে সিপিডি। আজ বৃহস্পতিবার রাজধানীর একটি হোটেলে সিপিডির পক্ষ থেকে এটি উপস্থাপন করা হয়েছে।

সিপিডির নিবন্ধে বলা হয়, চলমান সংকট থেকে বিদ্যুৎ ও জ্বালানি খাত কোনো শিক্ষা নেয়নি। এটি এখনো ভুল পথে এগোচ্ছে। দেশীয় গ্যাস অনুসন্ধানে জোর না দিয়ে তরলীকৃত প্রাকৃতিক গ্যাস (এলএনজি) আমদানিনির্ভরতা বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ আরও দুর্বল করে দিতে পারে। শুধু আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) পরামর্শ মেনে বিদ্যুৎ ও জ্বালানি খাতের সংকট সমাধান হবে না। এতে শুধু ভর্তুকি সমন্বয়ের নামে ভোক্তার ওপর বাড়তি দাম চাপতে পারে। আইএমএফের পরামর্শের পাশাপাশি আরও অনেক সংস্কার করতে হবে।

ভোক্তা অধিকার সংগঠন কনজ্যুমারস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (ক্যাব) জ্যেষ্ঠ সহসভাপতি এম শামসুল আলম বলেন, আদানির বিদ্যুৎ, আন্তসীমান্ত সঞ্চালন লাইন, এলএনজি, কয়লাসহ সব মিলে বিদ্যুৎ ও জ্বালানি খাত আমদানির বাজারে পরিণত হয়েছে। ভোক্তা বাড়তি দাম দিয়েই যাচ্ছে। সেই টাকায় বড় বাজেট হচ্ছে। অথচ বাজেটে ভোক্তার জন্য কিছু নেই। বিদেশি বিনিয়োগ আনার কথা বলে বিদ্যুৎ ও জ্বালানি খাতে উন্নয়নের নামে কত টাকা পাচার হয়ে গেছে, তা নিয়ে গবেষণা হতে পারে।

ভূতত্ত্ববিদ বদরুল ইমাম বলেন, দেশে জ্বালানির মূল জোগান আসে গ্যাস থেকে। গ্যাস অনুসন্ধান চালিয়ে গেলে বর্তমান সংকট তৈরি হওয়ার কথা নয়। গ্যাস অনুসন্ধানে অবহেলা করা হয়েছে। এমন অবহেলার শাস্তি তো পেতেই হবে। আসলে ইচ্ছাকৃতভাবে এমন গ্যাসসংকট তৈরি করা হয়েছে। এতে এলএনজি আমদানি বাড়তেই থাকবে।

বুয়েটের অবসরপ্রাপ্ত অধ্যাপক ইজাজ হোসেন বলেন, সমস্যা হচ্ছে জ্বালানি খাতে, বাজেটে বরাদ্দ বাড়ছে বিদ্যুৎ খাতে। গত বছর সংকটে পড়ে গ্যাস অনুসন্ধান বাড়ানোর কথা বলা হয়েছিল সরকারের পক্ষ থেকে। এখন বিশ্ববাজারে কয়লা, এলএনজি ও জ্বালানি তেলের দাম কম। তাই সরকার আবার আমদানির দিকেই ঝুঁকছে। জ্বালানির নিশ্চয়তা না নিয়ে একের পর এক বিদ্যুৎকেন্দ্র করা হয়েছে। এগুলো তো যেকোনো আইনে অবৈধ হওয়ার কথা।

শেয়ার করুন