রাজধানীর মিরপুরের জাতীয় চিড়িয়াখানায় হায়েনার কামড়ে ডান হাতের কনুই থেকে নিচের অংশ বিচ্ছিন্ন হয়ে যাওয়া শিশু সাইফ হাসপাতাল থেকে বাড়ি ফিরেছে। এখন সন্তানের ভবিষ্যৎ নিয়ে উদ্বেগে পরিবারটি।
জাতীয় অর্থোপেডিক হাসপাতাল ও পুনর্বাসন প্রতিষ্ঠানে (পঙ্গু হাসপাতাল) ১২ দিন চিকিৎসা নেওয়ার পর গত সোমবার সাইফকে বাসায় নেওয়া হয়। বর্তমানে সাইফ গাজীপুরে নানাবাড়িতে আছে। বুধবার সাইফের বাবা সুমন মিয়া বলেন, সাতদিন পর আবার হাসপাতালে নিতে বলেছেন চিকিৎসকেরা।
চলতি মাসের ৮ তারিখ চিড়িয়াখানায় বেড়াতে গিয়ে হায়েনার কবলে পড়ে ২ বছর ৩ মাস বয়সী সাইফ। তাৎক্ষণিক তাকে রাজধানীর জাতীয় অর্থোপেডিক হাসপাতাল ও পুনর্বাসন প্রতিষ্ঠানে ভর্তি করা হয়।
সুমন মিয়া বলেন, হাসপাতালে যত চিকিৎসা খরচ, সব ওরাই (চিড়িয়াখানা কর্তৃপক্ষ) দিয়েছে। যেহেতু হাসপাতাল থেকে বেরিয়ে এসেছি, ওষুধ কেনা লাগে, অনেক টাকাপয়সা দরকার। চিড়িয়াখানা টাকাপয়সা কিছু দেয়নি, আমরা তো গরিব মানুষ।
গাজীপুরের একটি পোশাক কারখানায় চাকরি করেন সুমন মিয়া। তার স্ত্রী গৃহিণী। বড় হয়ে ছেলে কীভাবে চলবে, তা নিয়ে উদ্বিগ্ন এই বাবা। তিনি বলেন, তথ্যমন্ত্রী এক লাখ টাকা দিয়েছেন। ছেলের জন্য ওই টাকা আমরা রেখে দেব। চিড়িয়াখানা আশ্বাস দিয়েছে, কিছু একটা করে দেবে। কিন্তু কবে করে দেবে, এটা আর বলছে না। যেহেতু ছেলের হাতই নেই, এমন কিছু করে দিক যেন ছেলের জীবনে বাধা না আসে।
তবে চিড়িয়াখানার কর্মকর্তারা বলছেন, মানবিক দিক থেকে ওই শিশুর চিকিৎসার ব্যবস্থা করা হয়েছে। তা চিড়িয়াখানার তহবিল থেকে নয়, কর্মকর্তারা ব্যক্তিগতভাবে করেছেন। মানবিকভাবে চিড়িয়াখানা শিশুর পাশে আছে, থাকবে—এই কথা শিশুর পরিবারকে বলা হয়েছে।
আর্থিকভাবে এই শিশুর জন্য কিছু করার মতো তহবিল চিড়িয়াখানা কর্তৃপক্ষের নেই উল্লেখ করে জাতীয় চিড়িয়াখানার পরিচালক রফিকুল ইসলাম তালুকদার বলেন, বাচ্চাটার হাত গেছে, যা অত্যন্ত দুঃখজনক। ওর চিকিৎসার জন্য যতটুকু করার করেছি। ভবিষ্যতে যদি কখনো ওর জন্য কিছু করার সুযোগ আসে, সেটা আমরা করব।