টাইটানের কেউই বেঁচে নেই

আন্তর্জাতিক ডেস্ক

আটলান্টিক মহাসাগরে টাইটানিকের ধ্বংসাবশেষ দেখতে যাওয়া সাবমেরিন (ডুবোযান) ল টাইটানের সব অভিযাত্রী মারা গেছেন। মার্কিন কোস্টগার্ড আনুষ্ঠানিক প্রেস ব্রিফিং করে এ তথ্য জানিয়েছে। সাবমেরিন টাইটান পরিচালনাকারী সংস্থা ‘ওশেনগেট’র পক্ষ থেকেও একই তথ্য জানানো হয়েছে।

যুক্তরাষ্ট্রের স্থানীয় সময় বুধবার (২২ জুন) বিকেল ৩টার দিকে এ তথ্য জানানো হয়। খবর বিবিসির।

universel cardiac hospital

পাঁচ অভিযাত্রীর মৃত্যুর তথ্য জানিয়ে রিয়ার অ্যাডমিরাল জন মাগার বলেন, ‘মার্কিন কোস্টগার্ডের পক্ষ থেকে সাবমেরিনে থাকা পাঁচ অভিযাত্রীর পরিবারের প্রতি গভীর সমবেদনা জানাচ্ছি। তবে টাইটানের সাব-বোর্ডে থাকা পাঁচ অভিযাত্রীর মরদেহ আমরা উদ্ধার করতে সক্ষম হবো কি না, তা নিশ্চিত করে বলতে পারবো না।’

অন্যদিকে, এক বিবৃতিতে ওশেনগেটের পক্ষ থেকে বলা হয়, ‘আমরা এখন বিশ্বাস করতে বাধ্য হয়েছি যে, আমাদের সিইও স্টকটন রাশ, শাহজাদা দাউদ, তার ছেলে সুলেমান দাউদ, হামিশ হার্ডিং, পল নারজিওলেটকে আমরা হারিয়ে ফেলেছি।’

এতে আরও বলা হয়, ‘তারা সত্যিকারের দুঃসাহসিক অভিযাত্রী ছিলেন, যারা অ্যাডভেঞ্চার, গভীর সমুদ্রে অনুসন্ধান ও বিশ্বের সমুদ্ররক্ষায় স্বতন্ত্র বিশ্বাসে একমত পোষণ করতেন। কঠিন সময়ে তাদের পরিবারের প্রতি আমাদের সমবেদনা। আমরা এ মর্মান্তিক মৃত্যুতে গভীর শোক জানাচ্ছি।’

অন্যদিকে ব্রিফিংয়ে মার্কিন কোস্টগার্ড জানায়, নিখোঁজ সাবমেরিন টাইটানের পাঁচটি বড় টুকরো শনাক্ত করা হয়েছে। শনাক্ত টুকরোগুলোর মধ্যে রয়েছে- একটি ‘নোজ কোন’, প্রেসার হুলের বাইরের অংশবিশেষ ও বড় একটি ধ্বংসাবশেষ ক্ষেত্র। যেখানে টাইটানিক জাহাজ ধ্বংস হয়েছিল, তার ঠিক আশপাশে এগুলো ছড়িয়ে-ছিটিয়ে থাকার তথ্য নিশ্চিত হয়েছে মার্কিন কোস্টগার্ড।

মার্কিন কোস্টগার্ডের রিয়ার অ্যাডমিরাল জন মাগার বলেন, আজ (বুধবার) সকালে রোবটচালিত জলযান ‘রোভ’ সাবমেরিন টাইটানের পেছনের বড় একটি অংশের সন্ধান দিতে সক্ষম হয়। এটি টাইটানিকের ধ্বংসাবশেষস্থলের ১৬০০ ফুট পাওয়া গেছে। পরে আশপাশে আরও তিনটি বড় টুকরো এবং ধ্বংসাবশেষ পাওয়া গেছে।

তিনি বলেন, ‘উদ্ধার অভিযান আরও ফলপ্রসূ করতে আমরা কাজ চালিয়ে যাচ্ছি। এটা অবিশ্বাস্য রকম জটিল পরিবেশ। সমুদ্রের তলদেশে, যা ভূ-পৃষ্ঠের প্রায় দুই মাইল নিচে। রোবটচালিত জলযান রোভ ওই ধ্বংসাবশেষস্থলের চারপাশে কাজ চালিয়ে যাচ্ছে।’

‘এ মুহূর্তে ঘটনাস্থলে ৯টি জাহাজ কাজ করছে। আরও বিস্তারিত জানার এবং অনুসন্ধানের কাজ চলমান। ঘটনাস্থলে আমাদের মেডিকেল টিম, প্রযুক্তিবিদ রয়েছে। আগামী ২৪ ঘণ্টার মধ্যে আমরা ক্রমে উদ্ধারে অংশ নেওয়া কর্মী ও জাহাজগুলোকে সরিয়ে দেবো। এটি কাজ করার জন্য বিপজ্জনক পরিবেশ’ যোগ করেন জন মাগার।

মার্কিন কোস্টগার্ডের শীর্ষ এ কর্মকর্তা বলেন, ‘ঘটনার পর থেকে নানান প্রশ্ন উঠছে। কীভাবে, কেন- এটা ঘটলো? আমি মনে করি, এত দ্রুত এসব প্রশ্নের উত্তর দেওয়া মোটেও সহজ নয়। আমরা কাজ করছি, তদন্ত চালিয়ে যাচ্ছি। যথাযথ কর্তৃপক্ষের সঙ্গে আমরা বিষয়গুলো নিয়ে কথা বলবো।

শেয়ার করুন