বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি এবং ব্রাহ্মণবাড়িয়া-৩ (সদর ও বিজয়নগর) আসনের সংসদ সদস্য যুদ্ধাহত বীর মুক্তিযোদ্ধা র আ ম উবায়দুল মোকতাদির চৌধুরী এমপি বলেছেন, আওয়ামী লীগকে বঙ্গবন্ধুর আদর্শের রাজনীতি ফিরিয়ে আনতে হবে। বাঙালি জাতীয়তাবাদ, ধর্মনিরপেক্ষতা, অসাম্প্রদায়িকতা, শোষনহীন সমাজ এবং গণতন্ত্রের যে আদর্শ সেই দর্শনকে ফিরিয়ে আনতে হবে।
২৩ জুন (শুক্রবার) বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের ৭৪তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে আশুগঞ্জ উপজেলা আওয়ামী লীগ আয়োজিত আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
ছাত্রলীগ নেতাকর্মীদের উদ্দেশ্যে মোকতাদির চৌধুরী বলেন, ১৯৪৮ সালে ছাত্রলীগ প্রতিষ্ঠার পর থেকে প্রতিটি আন্দোলন সংগ্রামের অগ্রভাগে ছিল ছাত্রলীগ। এই সংগঠনের নেতারা কিন্তু অসাম্প্রদায়িক চেতনায় বিশ্বাস করত। ভাষার প্রশ্নেও ছাত্রলীগ ছিল সরব। কিন্তু ফেসবুকে ছাত্রলীগের কিছু ছেলেদের লেখা কিছু শব্দ যখন আমার চোখে পড়ে, তখন মনে হয়- আমি যে অসাম্প্রদায়িক ছাত্রলীগ করেছিলাম, সেটা কোথায় গেলো? বর্তমানে আমরা অনেকেই বঙ্গবন্ধুর রাজনৈতিক দর্শন ও ধারাবাহিকতায় বিশ্বাস করি না। ৭৪ বছরে আওয়ামী লীগের এই প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীতে আশুগঞ্জে দাঁড়িয়ে আমি দায়িত্ব নিয়ে এ কথাটি বলছি।
আগামী জাতীয় সংসদকে কেন্দ্র করে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আসনগুলোতে নৌকা প্রতীক নিয়ে ষড়যন্ত্র হচ্ছে বলে মন্তব্য করে জেলা আওয়ামী লীগ সভাপতি মোকতাদির চৌধুরী বলেন, আমরা যারা আশুগঞ্জ-সরাইলে নৌকা চাই বলে বড় বড় বক্তৃতা দিয়ে বুক ফাটিয়ে সবকিছু শেষ করে দেই, তারা কী আসলেই নৌকা চাই? অনেকেই চায় না। এটি আপনারা জানেন না। এই ষড়যন্ত্রকারীদের চিহ্নিত করতে হবে।
তিনি বলেন, শুধু আশুগঞ্জ-সরাইল না, আমাদের ভিতরে এমন লোক আছে- যারা আরও দুইটা আসন, এমনকি আমার আসনসহ পারলে স্বাধীনতা বিরোধীদের হাতে তুলে দেওয়ার চক্রান্তে লিপ্ত আছে। আমি তাদের নাম জানি এবং তাদের নাম বলার সাহস রাখি। কিন্তু আজকে এটি সঠিক জায়গা নয়, সেজন্য আমি বললাম না।
বর্ষীয়ান এই রাজনীতিবিদ আরও বলেন, কোথায় কোথায় কে কী ষড়যন্ত্র করে, সবকিছু আমি জানি। এই ষড়যন্ত্রকারী কারা তাদেরকে আপনাদের খুঁজে বের করতে হবে এবং তাদের সম্পর্কে সতর্ক থাকতে হবে। ‘মুখে শেখ ফরিদ, বগলে ঈদ’ এই রাজনীতি এখন আর নাই। কথা কাজে মিল রাখতে হবে।
মোকতাদির চৌধুরী বলেন, নৌকার প্রশ্নে কোনো আপোষ নাই। এই ষড়যন্ত্রকারীরা এমন ষড়যন্ত্র করছে যে, যারা মুক্তিযুদ্ধে বিশ্বাস করে না, এমন লোকদেরও জোট করে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার বিভিন্ন জায়গায় প্রার্থী করার জন্য চেষ্টা করছে। আমি তাদেরকে ধিক্কার জানাই। আমি আজকে দৃপ্তকণ্ঠে বলতে চাই- সে যেই হোক, স্বাধীনতার বিরুদ্ধে, মুক্তিযুদ্ধের বিরুদ্ধে, বাংলাদেশের বিপক্ষে এবং আমার সোনার বাংলা আমি তোমায় ভালোবাসি এই সঙ্গীতের বিরুদ্ধে যারা, জয় বাংলা স্লোগান যাদের মুখে উচ্চারিত হয় না, জয় বঙ্গবন্ধু যারা বলতে পারে না- যেখান থেকেই তারা নমিনেশন নিয়ে আসুক না কেন তাদের বিরোধিতায় আমি ঐক্যবদ্ধ থাকব। এখানে কোনো আপোষ হবে না।