ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা আওয়ামী লীগের কার্যালয়ে চুরি এবং কাগজপত্র তছনছ করেছে দুর্বৃত্তরা। শনিবার (২৪ জুন) বিকেল ৫টার দিকে এ ঘটনা ঘটে।
ঘটনার পর জেলা আওয়ামী লীগের কার্যালয়ের অফিস সহকারী দীপ্ত চক্রবর্তী প্রকাশ জনি বাদী হয়ে অজ্ঞাতনামা ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে সদর মডেল থানায় একটি অভিযোগ করেন।
অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, শনিবার (২৪ জুন) বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে শহরের বঙ্গবন্ধু স্কয়ার মাঠে ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা আওয়ামী লীগের আয়োজনে জনসভা অনুষ্ঠিত হয়।
সমাবেশে যোগদানের জন্য শনিবার (২৪ জুন) বিকেলে জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও ব্রাহ্মণবাড়িয়া (সদর)-৩ আসনের সংসদ সদস্য যুদ্ধাহত বীর মুক্তিযোদ্ধা র.আ.ম উবায়দুল মোকতাদির চৌধুরীসহ দলীয় নেতারা শহরের হালদারপাড়ার জেলা আওয়ামী লীগ কার্যালয় ত্যাগ করেন। এরপর যেকোনো সময়ে দুর্বৃত্তরা অফিসকক্ষের পেছন দিয়ে বারান্দার এসএসপাইপ ফাঁক করে অফিসে প্রবেশ করে।
পরে তারা র.আ.ম উবায়দুল মোকতাদির চৌধুরীর ব্যক্তিগত ড্রয়ার ও প্রয়োজনীয় কাগজপত্র তছনছ করে। বিষয়টি আঁচ করতে পেরে অফিস সহকারী জনি বিষয়টি স্থানীয় নেতাদের মাধ্যমে উবায়দুল মোকতাদিরসহ দলীয় নেতাদের অবগত করেন। খবর পেয়ে শনিবার সন্ধ্যায় অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মোহাম্মদ ইকবাল হোছেন,অতিরিক্ত পুলিশ সুপার সদর সার্কেল মো.বিল্লাল হোসেন পিপিএম,সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো.এমরানুল ইসলাম,ওসি অপারেশন সুমন বনিক ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন। জনসভা শেষে র.আ.ম উবায়দুল মোকতাদির চৌধুরী কার্যালয় পরিদর্শন করেন।
চুরির ঘটনার সম্পর্কে ঘটনাস্থলে উপস্থিত জেলা ছাত্রলীগের সিনিয়র সহসভাপতি ও থানায় দায়ের করা অভিযোগের ২ নম্বর সাক্ষী সুজন দত্ত বলেন, ‘এটি একটি পরিকল্পিত ঘটনা। যারা এ ঘটনার সঙ্গে জড়িত আমরা চাই পুলিশ তাদের দ্রুত খুঁজে বের করে আইনের আওতায় নিয়ে আসবে।’
ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ এমরানুল ইসলাম মত ও পথকে বলেন, অসৎ উদ্দেশ্য নিয়ে কেউ জেলা আওয়ামী লীগের কার্যালয়ে প্রবেশ করেছিল। কে বা কারা কেন দলীয় কার্যালয়ে প্রবেশ করেছিল, সেটি আমরা সিসিটিভি ফুটেজ বিশ্লেষণ করে খতিয়ে দেখছি।
তিনি বলেন, জেলা আওয়ামী লীগের কার্যালয়ের অফিস সহকারী দীপ্ত চক্রবর্তী (জনি) বাদী হয়ে একটি অভিযোগ দায়ের করেছেন, অভিযোগটি শিগগিরই মামলা হিসেবে রসাথে সাথে অতীব গুরুত্বের সাথে তদন্তও শুরু হয়েছে।
অতিরিক্ত পুলিশ সুপার সদর সার্কেল মো.বিল্লাল হোসেন পিপিএম মত ও পথকে বলেন,বিষয়টি আমাদের গভীর পর্যবেক্ষণে রয়েছে। খুবই গুরুত্ব দিয়ে আমরা সিটিটিভি ফুটেজ সহ নানান বিষয় পর্যালোচনা করছি।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি যুদ্ধাহত বীর মুক্তিযোদ্ধা র আ ম উবায়দুল মোকতাদির চৌধুরী মত ও পথকে বলেন, দুর্বৃত্তরা সম্পূর্ণ অসৎ উদ্দেশ্যে জেলা আওয়ামী লীগের কার্যালয়ে প্রবেশ করে আমার ব্যক্তিগত ড্রয়ার ভেঙে নথিপত্র তছরুপ করেছে। এ বিষয়ে গতকালই থানায় অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে, শুনেছি এখনও অভিযোগটি মামলায় রুপান্তরিত হয়নি। এতো বড় একটি অপরাধের বিষয়ে অভিযোগ দায়ের করার পরেও পুলিশ কার ইশারায় সেটিকে এখনও মামলা হিসেবে গ্রহণ করেনি, তা পুলিশ প্রশাসনই ভালো বলতে পারবে। তবে এটি পুলিশের ভাবমূর্তির জন্য ভালো দৃষ্টান্ত নয়। এতে করে জনগণের কাছে পুলিশের বিষয়ে ভুল বার্তা পৌছাবে।
তিনি বলেন, ঘটনার একদিন পার হয়ে যাওয়ার পরেও জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও স্থানীয় সংসদ সদস্যের অফিসে হামলায় জড়িতদের চিহ্নিত করতে না পারা এবং গ্রেফতার করতে না পারা স্থানীয় পুলিশ প্রশাসনের ব্যর্থতার দিকটিকে আবারও ফুটিয়ে তুলছে। আমি আশা করব, স্থানীয় পুলিশ প্রশাসন শিগগিরই দুর্বৃত্তদের চিহ্নিত করে আইনের আওতায় নিয়ে এসে প্রকৃত অপরাধীদের মুখোশ উন্মোচন করবে এবং এটি করতে পারলেই পুলিশের ওপর জনগণের আস্থা বাড়বে, অন্যথায় নয়।