ওয়াগনার প্রধানের বিরুদ্ধে মামলা সচল, চলছে তদন্ত

আন্তর্জাতিক ডেস্ক

বিদ্রোহের ঘটনায় রাশিয়ার ভাড়াটে বাহিনী ওয়াগনারের প্রধান ইয়েভজেনি প্রিগোজিনের বিরুদ্ধে দায়ের করা ফৌজদারি মামলা সচল করা হয়েছে ও এটির তদন্ত চলছে।

সোমবার (২৬ জুন) রাশিয়ার দৈনিক কমার্স্যান্ট ও অন্যান্য স্থানীয় বার্তা সংস্থার বরাতে এসব তথ্য জানায় কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল জাজিরা।

দৈনিক কমার্স্যান্ট বলেছে, ইয়েভজেনি প্রিগোজিনের বিরুদ্ধে করা ফৌজদারি মামলাটি সচল করা হয়েছে ও ফেডারেল সিকিউরিটি সার্ভিস (এফএসবি) তদন্ত চালিয়ে যাচ্ছে। এদিকে তাস, আরআইএ ও ইন্টারফ্যাক্সের মতো রাশিয়ার প্রধান তিনটিন সংবাদ সংস্থাও একই তথ্য জানিয়েছে।

প্রসিকিউটরের কার্যালয়ের ঘনিষ্ঠ একটি সূত্রের বরাতে তাস জানিয়েছে, প্রিগোজিনের বিরুদ্ধে দায়ের করা ফৌজদারি মামলাটি প্রত্যাহার করা হয়নি। এটির তদন্ত চলমান। রাশিয়ার আইনে এ ধরনের অপরাধ প্রমাণিত হলে আসামির ১২-২০ বছরের সাজা হতে পারে।

শনিবার রাতের দিকে রোস্তভ শহর ছেড়ে যাওয়ার পর থেকে এখন পর্যন্ত ওয়াগনার প্রধানকে জনসমক্ষে দেখা যায়নি। ক্রেমলিনের সঙ্গে চুক্তির বিষয়েও তিনি এখন পর্যন্ত কোনো মন্তব্য করেননি।

এদিকে, মস্কো থেকে বিবিসির সাংবাদিক ইউলিয়া শাপোভালোভা জানিয়েছেন, প্রিগোজিন এখন কোথায় অবস্থান করছেন, তা এখনো জানা যায়নি। পরিস্থিতি বেশ রহস্যময়। তিনি এ ঘটনাকে রাশিয়ার জাতীয় তদন্ত কমিটি ও গোয়েন্দা সংস্থা এফএসবির অবাধ্যতা বলে আখ্যায়িত করেছেন।

জানা গেছে, সোমবার লুহানস্কে অবস্থানরত রুশ সৈন্যদের সঙ্গে দেখা করেছেন প্রতিরক্ষা মন্ত্রী সের্গেই শোইগু। এর মাধ্যমে স্পষ্ট যে, চরম অস্থিরতা দেখা দিলেও পদত্যাগের দিকে হাঁটছেন না শোইগু।

ওয়াগনার প্রধান ইয়েভজেনি প্রিগোজিনের সঙ্গে কয়েক মাস ধরেই রুশ প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের দ্বন্দ্ব চলে আসছিল। গত শুক্রবার (২৩ জুন) প্রিগোজিন অভিযোগ করেন, তার বাহিনীর ওপর ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালিয়েছে মস্কো। এর কঠিন প্রতিশোধ নেওয়ার প্রতিশ্রুতি দেন তিনি।

এক অডিওবার্তায় প্রিগোজিন ঘোষণা দেন, রুশ নেতৃত্বকে ক্ষমতাচ্যুত করতে প্রয়োজনীয় সবকিছু করবেন তারা। আর এই পথে যারা-ই বাধা হয়ে দাঁড়াবে তাদের ধ্বংস করে দেওয়া হবে।

শুক্রবার তার বাহিনী ইউক্রেন ছেড়ে রাশিয়ার সীমান্তবর্তী শহর রোস্তভ-অন-ডনে প্রবেশ করে ও সেখানকার একটি সেনা সদর দপ্তর দখল করে। সেসময় রুশ বাহিনীর একটি হেলিকপ্টার গুলি করে ভূপাতিত করার দাবিও তোলেন প্রিগোজিন। পরে মস্কোমুখী অভিযান শুরু করে ওয়াগানার।

এ ঘটনাকে ‘পিঠে ছুরিকাঘাত’ উল্লেখ করে বিদ্রোহীদের কঠোর শাস্তি দেওয়ার হুঁশিয়ারি দেন রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন। ফলে পরিস্থিতি ধীরে ধীরে আরও সহিংসতার দিকে এগিয়ে যেতে থাকে।

তবে শনিবার (২৪ জুন) ক্রেমলিনের সঙ্গে সমঝোতার পরিপ্রেক্ষিতে মস্কো অভিমুখে অভিযান বন্ধ করে পিছু হটে প্রিগোজিনের সৈন্যদল। এরই মধ্যে ভাড়াটে বাহিনীর সৈন্যরা রোস্তভ-অন-ডন শহরের সামরিক সদর দপ্তর ত্যাগ করেছে। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া ছবি ও ভিডিওতে ওয়াগনার সৈন্যদের শহর ছাড়তে দেখা গেছে। এরপর থেকেই খোঁজ মিলছে না প্রিগোজিনের।

সূত্র: আল জাজিরা, বিবিসি, রয়টার্স

শেয়ার করুন