সৌদি আরবের জেদ্দায় মার্কিন কনস্যুলেট ভবনের বাইরে গোলাগুলিতে অন্তত ২ জন প্রাণ হারিয়েছেন। এদের মধ্যে একজন নেপালি নিরাপত্তাকর্মী এবং আরেকজন বন্দুকধারী হামলাকারী। সৌদি আরব এবং যুক্তরাষ্ট্রের কর্তৃপক্ষ বুধবার (২৮ জুন) ঘটনাটি নিশ্চিত করেছে। খবর আল-জাজিরার।
মক্কা অঞ্চলের পুলিশের মুখপাত্র জানিয়েছেন, এক ব্যক্তি জেদ্দা গভর্নরেটের মার্কিন কনস্যুলেট ভবনের কাছে গাড়ি থামান এবং হাতে একটি আগ্নেয়াস্ত্র নিয়ে বেরিয়ে আসেন। এসময় নিরাপত্তা কর্তৃপক্ষ ‘প্রয়োজন অনুযায়ী তাকে মোকাবিলার উদ্যোগ নেয়’ এবং গুলি বিনিময়ের ফলে তার মৃত্যু হয়।
রাষ্ট্রীয় সংবাদ সংস্থা সৌদি প্রেস এজেন্সি (এসপিএ) গুলিতে এক নিরাপত্তারক্ষীর মৃত্যুর খবর নিশ্চিত করেছে। তিনি কনস্যুলেটের বেসরকারি নিরাপত্তা সংস্থার সদস্য ছিলেন।
মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তর বলেছে, বন্দুকযুদ্ধে কোনো মার্কিন নাগরিক হতাহত হননি। সৌদি কর্তৃপক্ষ ঘটনার তদন্ত করছে। তাদের সঙ্গে যোগাযোগ রাখছে মার্কিন দূতাবাস এবং কনস্যুলেট।
লোহিত সাগরের তীরে অবস্থিত বন্দর নগরীটিতে মার্কিন কনস্যুলেট লক্ষ্য করে এর আগেও একাধিকবার হামলার চেষ্টা হয়েছিল।
২০১৬ সালে কনস্যুলেটের বিপরীত পাশে ডা. সোলিমান ফকিহ হাসপাতালের পার্কিং লটের কাছে একজন সন্দেহভাজন ব্যক্তিকে শনাক্ত করেন নিরাপত্তা কর্মীরা। তারা এগিয়ে গেলে ওই ব্যক্তি আত্মঘাতী বোমার সাহায্যে নিজেকে উড়িয়ে দেন। এতে হামলাকারী নিহত এবং আরও দুজন আহত হন।
সেদিন (৪ জুলাই) ছিল যুক্তরাষ্ট্রের স্বাধীনতা দিবস, একইসঙ্গে রমজান মাসের শেষ দিন। ওই দিন সৌদি আরবে আরও তিনটি স্থানে বোমা হামলার ঘটনা ঘটেছিল। এর মধ্যে একটি ছিল মদিনার পবিত্র মসজিদে নববী লক্ষ্য করে, বাকি দুটি বোমা বিস্ফোরিত হয়েছিল পূর্বাঞ্চলীয় কাতিফ শহরের একটি মসজিদে।
জেদ্দায় মার্কিন কনস্যুলেট ২০০৪ সালেও হামলার লক্ষ্যবস্তু হয়েছিল। সেদিন পাঁচ ব্যক্তি আগ্নেয়াস্ত্র ও বিস্ফোরকসহ ভবনের ভেতর ঢুকে পড়ে।
ওই হামলায় ভবনের বাইরে সৌদির চার নিরাপত্তাকর্মী এবং ভেতরে আরও পাঁচ কর্মী প্রাণ হারান। শোনা যায়, ওই সময় কনস্যুলেটের ভেতর ১৮ জন কর্মী ও ভিসা আবেদনকারীকে সাময়িক জিম্মি করে রাখা হয়েছিল।
ঘটনাস্থলে পাঁচ হামলাকারীর তিনজন নিহত হন। বাকি দুজনও গুরুতর আহত হন। ওই হামলায় জড়িত থাকার দায়ে ২০১৩ সালে একজনকে মৃত্যুদণ্ড এবং আরও ১৯ জনকে ২৫ বছরের কারাদণ্ড দেন সৌদির আদালত। ভয়াবহ সেই হামলার জন্য জঙ্গিগোষ্ঠী আল-কায়েদাকে দায়ী করা হয়।