ইসলাম ধর্মাবলম্বীদের দ্বিতীয় বৃহৎ ধর্মীয় উৎসব পবিত্র ঈদুল আজহার দ্বিতীয় দিনেও রাজধানী ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে চলছে পশু কোরবানি। মহান আল্লাহর সন্তুষ্টি লাভের জন্য গরু, মহিষ, ছাগলসহ বিভিন্ন পশু কোরবানি করছেন ধর্মপ্রাণ মুসলমানরা। তবে গতকালের তুলনায় এর সংখ্যাটা অনেক কম।
এদিকে এবার এ বছর ঈদুল আজহায় সারাদেশে মোট ১ কোটি ৪১ হাজার ৮১২ টি গবাদিপশু কোরবানি হয়েছে বলে জানিয়েছে মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়।
শুক্রবার মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয় জনসংযোগ কর্মকর্তা মো. ইফতেখার হোসেন সংবাদমাধ্যমকে এ তথ্য জানান।
এছাড়া এবার অনলাইন প্ল্যাটফর্মসহ সারাদেশে পশুর হাটে ৯৪ লাখ ৪৩ হাজারের বেশি কোরবানির পশু বিক্রি হয়েছে। এর মধ্যে ৪৩ লাখ ৬১ হাজার গরু-মহিষ ও ৫০ লাখ ৮১ হাজার ছাগল, ভেড়া ও অন্যান্য পশু বিক্রি হয়েছে।
মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয় জনসংযোগ কর্মকর্তা মো. ইফতেখার হোসেন বৃহস্পতিবার সংবাদমাধ্যমকে এ তথ্য জানান।
তবে এই পশু বিক্রির সংখ্যা দিয়ে সারাদেশে কোরবানি করা পশুর সংখ্যা নিরুপণের সুযোগ নেই জানিয়ে তিনি বলেন, কারণ, এর সঙ্গে গৃহপালিত যেসব পশু বিক্রি হয়েছে সেগুলোও যুক্ত হবে। ফলে সংখ্যাটি আরও বাড়বে।
ঢাকার দুই সিটি করপোরেশনসহ সারাদেশে কোরবানির পশুর হাট ছিল ৩ হাজার ২৪৯টি। ৪৩ লাখ ৬১ হাজার গরু-মহিষ ৪৭ হাজার কোটি টাকার বেশি মূল্যে বিক্রি হয়েছে। ৫০ লাখ ৮১ হাজার ছাগল-ভেড়া ও অন্যান্য পশু ১৩ হাজার কোটি টাকার বেশি দামে বিক্রি হয়েছে।
অধিদপ্তরের পাওয়া তথ্য অনুযায়ী, মোট কোরবানির পশু বিক্রি হয়েছে ৬০ হাজার কোটি টাকার বেশি মূল্যে।
প্রাপ্ত তথ্য অনুযায়ী, এ বছর দেশের আট বিভাগেই অনলাইন প্ল্যাটফর্মের মাধ্যমে কোরবানির পশু বিক্রি হয়। অনলাইনে মোট পশু বিক্রি হয়েছে ৪ লাখ ৬৩ হাজার ৯৬টি। এর মধ্যে চট্টগ্রাম বিভাগে সবচেয়ে বেশি ৮৪ হাজার গরু বিক্রি হয়েছে। এ ছাড়া ঢাকায় সবচেয়ে বেশি ২১ হাজার ৯০২টি ছাগল-ভেড়া বিক্রি হয়েছে।
অনলাইন হাটে ৪ লাখ ৬৩ হাজার ৯৬টি পশু বিক্রি হয়েছে। যার মূল্য ৪ হাজার ২৩১ কোটি ৫৮ লাখ ৯৮ হাজার টাকা।
মাঠপর্যায় থেকে প্রাপ্ত তথ্যানুযায়ী, ঢাকা বিভাগে ২৫ লাখ ৪৮ হাজার ১৮৪ টি, চট্টগ্রাম বিভাগে ২০ লাখ ৫১ হাজার ৭৭৭টি, রাজশাহী বিভাগে ২১ লাখ ৩২ হাজার ৪৬৯টি, খুলনা বিভাগে ৯ লাখ ৪৯ হাজার ৫৮১টি, বরিশাল বিভাগে ৪ লাখ ৩০ হাজার৬৭৩টি, সিলেট বিভাগে ৩ লাখ ৯৪ হাজার ৩৯টি, রংপুর বিভাগে ১১ লাখ ৪৯ হাজার ১৮৭টি ও ময়মনসিংহ বিভাগে ৩লাখ ৮৫ হাজার ৯০২ টি গবাদি পশু কোরবানি হয়েছে।
কোরবানি হওয়া গবাদি পশুর মধ্যে ৪৫ লাখ ৮১ হাজার ৬০ টি গরু, ১ লাখ ৭ হাজার ৮৭৫টি মহিষ, ৪৮ লাখ ৪৯ হাজার ৩২৮টি ছাগল, ৫ লাখ ২ হাজার ৩০৭টি ভেড়া ও এক হাজার ২৪২টি অন্যান্য পশু।
এর মধ্যে ঢাকা বিভাগে ১১ লাখ ৭১ হাজার ২১৭টি গরু, ৬ হাজার ৪৮০টি মহিষ, ১২ লাখ ৬৭ হাজার ৫৯৫টি ছাগল, এক লাখ দুই হাজার ১৬টি ভেড়া ও অন্যান্য ৮৭৬টি পশু। চট্টগ্রাম বিভাগে ১২ লাখ ২৯ হাজার ৬২টি গরু, ৮৭ হাজার ২১৪টি মহিষ, ৬ লাখ ৪১ হাজার ৯৭৮টি ছাগল, ৯৩ হাজার ১৮১টি ভেড়া ও অন্যান্য ৩৪২টি পশু। রাজশাহী বিভাগে ৭ লাখ ১১ হাজার গরু, ৯ হাজার ৪৬৯ মহিষ ও ১২ লাখ ৩১ হাজার ছাগল ও এক লাখ ৮১ হাজার ভেড়া। খুলনা বিভাগে ২ লাখ ৭০ হাজার ২১৯টি গরু, এক হাজার ৪৯২টি মহিষ, ৬ লাখ ৫২ হাজার ৭৩১টি ছাগল, ২৫ হাজার ১২৩টি ভেড়া ও অন্যান্য ১৬টি পশু। বরিশাল বিভাগে ২ লাখ ৭৬ হাজার ৬৩৫টি গরু, ৯৮৯টি মহিষ, এক লাখ ৫১ হাজার ৫৬৪টি ছাগল ও এক হাজার ৪৮৫টি ভেড়া। সিলেট বিভাগে এক লাখ ৯৯হাজার ১৭২টি গরু, এক হাজার ১৫৩টি মহিষ, এক লাখ ৭২ হাজার ৭৪টি ছাগল ও ২১ হাজার ৬৪০টি ভেড়া। রংপুর বিভাগে ৫ লাখ ৩৬ হাজার ৭২০টি গরু, ২৬৯টি মহিষ, ৫ লাখ ৪৬ হাজার ৩৫৭টি ছাগল ও ৬৫ হাজার ৮৩৩টি ভেড়া। ময়মনসিংহ বিভাগে এক লাখ ৮৭ হাজার ৩৫টি গরু, ৮০৯টি মহিষ, এক লাখ ৮৬ হাজার ২৯টি ছাগল ও ১২ হাজার ২৯টি ভেড়া কোরবানি হয়েছে।
এ বছর সারাদেশে কোরবানিযোগ্য গবাদি পশুর সংখ্যা ছিল ১ কোটি ২৫ লাখ ৩৬ হাজার ৩৩৩টি।