যান্ত্রিক ত্রুটির কারণে বন্ধ রয়েছে বাগেরহাটের রামপাল তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রের উৎপাদন। শুক্রবার (৩০ জুন) রাতে যান্ত্রিক ত্রুটি ধরা পড়লে বিদ্যুৎ উৎপাদন বন্ধ করে দেওয়া হয়। কেন্দ্রটিতে এক সপ্তাহ বিদ্যুৎ উৎপাদন বন্ধ থাকতে পারে বলে জানিয়েছে কর্তৃপক্ষ।
ভারত-বাংলাদেশ যৌথ মালিকানায় নির্মিত কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্রটি গত বছরের ডিসেম্বরে একটি ইউনিট উৎপাদনে আসার পর কয়েক দফায় বন্ধ হয়েছে। দেড় মাস আগে কয়লার অভাবে একবার বন্ধ হয় বিদ্যুৎকেন্দ্রটি। তবে আপাতত কেন্দ্রটিতে কয়লা সরবরাহের ঘাটতি নেই।
রামপাল বিদ্যুৎকেন্দ্র সূত্র বলছে, এটি পুনরায় চালু করতে কারিগরি ত্রুটি সারানোর কাজ চলছে। একই সঙ্গে নিয়মিত রক্ষণাবেক্ষণের কাজও করা হচ্ছে। টানা এক সপ্তাহ বৃষ্টি কম থাকায় বর্তমানে বিদ্যুতের চাহিদা কম। তাই এ সময় এটি বন্ধ থাকায় তেমন ঘাটতি তৈরি হবে না বলেও মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।
এর আগে গত ১৫ এপ্রিল বিদ্যুৎকেন্দ্রটি যান্ত্রিক ত্রুটির কারণে বন্ধ হয়ে যায়। চার দিন পর চালু হয়। কিন্তু ডলার-সংকটে কয়লা আমদানি করতে না পারায় ২৪ এপ্রিল আবার বন্ধ করা হয়। ২৩ দিন পর ১৬ মে রাতে ফের বিদ্যুৎ উৎপাদন শুরু হয়।
বিদ্যুৎকেন্দ্রটি পরিচালনাকারী প্রতিষ্ঠান বাংলাদেশ-ইন্ডিয়া পার্টনারশিপ পাওয়ার কোম্পানি লিমিটেডের (বিআইএফপিসিএল) ব্যবস্থাপনা পরিচালক সাঈদ একরাম উল্লাহ বলেন, বিদ্যুৎকেন্দ্রটি দেড় মাস ধরে টানা চলছিল। রক্ষণাবেক্ষণের জন্য এখন নিয়মিত পরিদর্শনের সময় হয়েছে। এর মধ্যে ছোটখাটো কিছু যান্ত্রিক ত্রুটিও ধরা পড়েছে। এক সপ্তাহের মধ্যে এটি আবার চালু করা হতে পারে।
চুক্তির প্রায় ১০ বছর পর গত বছরের ২৩ ডিসেম্বর রামপাল বিদ্যুৎকেন্দ্রের প্রথম ইউনিট থেকে বাণিজ্যিকভাবে বিদ্যুৎ সরবরাহ শুরু হয়। কিন্তু কয়লার অভাবে ১৪ জানুয়ারি বন্ধ হয়ে যায় উৎপাদন। মূলত ডলার-সংকটে ঋণপত্র খুলতে না পারায় কয়লা আমদানি নিয়ে জটিলতা দেখা দেয়।
একপর্যায়ে কয়লার অভাবে বিদ্যুৎকেন্দ্রটি বন্ধ হয়ে যায়। এক মাস পর আবার উৎপাদনে ফেরে বিদ্যুৎকেন্দ্রটি। বিদ্যুৎকেন্দ্রটির একটি ইউনিট থেকে বিদ্যুৎ উৎপাদন করতে দিনে পাঁচ হাজার টন কয়লা লাগে। একটি জাহাজ এলে এক সপ্তাহের মতো বিদ্যুৎকেন্দ্রটির উৎপাদন সচল রাখা যায়।
রামপাল বিদ্যুৎকেন্দ্রে ৬৬০ মেগাওয়াট ক্ষমতার দুটি ইউনিট আছে। এরপর প্রথমটি চালুর পর এ পর্যন্ত দুই দফা কয়লার কারণে এবং দুই দফা কারিগরি কারণে বন্ধ করা হয়েছে। আর গত ২৯ জুন দ্বিতীয় ইউনিট বিদ্যুৎ সঞ্চালনের জাতীয় গ্রিডের সঙ্গে যুক্ত হয়েছে। এটি থেকে বাণিজ্যিকভাবে বিদ্যুৎ সরবরাহ শুরু হতে আরও অন্তত দুই মাস লাগতে পারে।