অবৈধ ইসরায়েলি সেনাবাহিনীর সামরিক আগ্রাসনের মুখে জেনিন শরণার্থী শিবির থেকে পালিয়ে গেছে হাজার হাজার ফিলিস্তিনি।
গতকাল সোমবার (৩ জুলাই) দখলকৃত পশ্চিম তীরের জেনিনে কথিত সন্ত্রাসবিরোধী অভিযান শুরু করে ইসরায়েল। এতে ভারী অস্ত্রসস্ত্রসহ এক থেকে দুই হাজার সেনা অংশ নেন। এ সময় ফিলিস্তিনি সশস্ত্র যোদ্ধাদের সঙ্গে ব্যাপক গোলাগুলি হয় ইসরায়েলি বাহিনীর। সর্বশেষ তথ্য অনুযায়ী, ইসরায়েলিদের হামলায় শরণার্থী শিবিরে অন্তত ১০ জন নিহত হয়েছেন। যার মধ্যে শিশুও রয়েছে। অপরদিকে আহত হয়েছেন ১০০ জনেরও বেশি মানুষ।
জেনিনের উপগভর্নর কামাল আবু আল-রব বার্তাসংস্থা এএফপিকে বলেছেন, ‘এখন পর্যন্ত ৩ হাজার মানুষ শরণার্থী শিবির ছেড়েছেন।’
তিনি জানিয়েছেন, পালিয়ে যাওয়াদের জেনিনের স্কুল ও অন্যান্য আশ্রয় কেন্দ্রে আশ্রয় দেওয়া হচ্ছে। এ শরণার্থী শিবিরে প্রায় ১৮ হাজার মানুষ বসবাস করেন।
ফিলিস্তিন রেড ক্রিসেন্টও ৩ হাজার মানুষ পালিয়ে যাওয়ার খবর জানিয়েছে। সংস্থাটি আশঙ্কা প্রকাশ করেছে, পালিয়ে যাওয়াদের সংখ্যা আরও বাড়বে। কারণ ইসরায়েলিরা জানিয়েছে, তারা আরও কয়েকদিন তাদের অভিযান চালাতে পারে।
সোমবার মধ্যরাত থেকে ড্রোন, বিমান ও স্থল সেনাদের দিয়ে জেনিনে হামলা শুরু করে ইসরায়েল। গত ২০ বছরের মধ্যে এটি দখলদার ইসরায়েলি বাহিনীর সবচেয়ে বড় আগ্রাসন বলে জানিয়েছেন ফিলিস্তিনি কর্মকর্তারা।
জেনিন শহরের উপকণ্ঠে ১৯৫০ সালের দিকে এ শরণার্থী শিবিরটি স্থাপন করা হয়। সাম্প্রতিক সময়ে এটি ফিলিস্তিনি প্রতিরোধ যোদ্ধাদের প্রধান কেন্দ্র ও শক্তিশালী ঘাঁটিতে পরিণত হয়েছে। এই প্রতিরোধকে ইসরায়েলিরা জঙ্গি কার্যক্রম হিসেবে দেখে।
গত কয়েকদিন ধরে ইসরায়েলিদের ওপর হামলা চালাচ্ছেন সশস্ত্র ফিলিস্তিনিরা। যারা হামলা চালিয়েছেন তাদের সবাই জেনিনের বাসিন্দা ছিলেন। ইসরায়েল এখন শহরটির শরণার্থী শিবিরে কথিত অভিযানের নামে ফিলিস্তিনি যোদ্ধাদের নির্মূলের চেষ্টা চালাচ্ছে।
এদিকে জেনিনে হামলা করার আগে দখলদার ইসরায়েলি সরকার যুক্তরাষ্ট্রের সম্মতি নিয়ে নেয়।
জেনিনে হামলা চালানোর বিষয়টি এখন বড় একটি সংঘর্ষে পরিণত হতে পারে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করেছে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়।
সূত্র: দ্য গার্ডিয়ান