সাফিয়ান শরিফের বলে তেন্দাই চাতারা বোল্ড হতেই পুরো বুলাওয়ে কুইন্স স্পোর্টস ক্লাব মাঠ স্তব্ধ হয়ে যায়। পিনপতন নিরবতা নেমে আসে স্টেডিয়ামজুড়ে। আরও একবার তীরে এসে তরি ডুবলো তাদের। ভারতে অনুষ্ঠিতব্য বিশ্বকাপে যোগ্যতা অর্জনের ক্ষেত্রে আগেরবারের মত এবারও শেষ ম্যাচে এসে থমকে যেতে হলো তাদেরকে।
২০১৮ বিশ্বকাপ বাছাই পর্বেও শেষ ম্যাচে এসে আরব আমিরাতের কাছে হেরে বিশ্বকাপ খেলার স্বপ্ন জলাঞ্জলি দিতে হয়েছিলো। এবারও শেষ ম্যাচে এসে স্কটল্যান্ডের কাছে ৩১ রানে হেরে বিশ্বকাপের চূড়ান্ত পর্ব থেকে ছিটকে যেতে হলো জিম্বাবুয়েকে।
সর্বশেষ স্কটল্যান্ডের কাছে হেরেই বিশ্বকাপের চূড়ান্ত পর্বে খেলার যোগ্যতা হারিয়েছে দুইবারের বিশ্বচ্যাম্পিয়ন ওয়েস্ট ইন্ডিজ। সেই স্কটল্যান্ড এবার ভারতে অনুষ্ঠিতব্য বিশ্বকাপে যোগ্যতা অর্জন করা থেকে বঞ্চিত করে দিলো জিম্বাবুয়েকেও।
আজ বুলাওয়েতে কুইন্স স্পোর্টস ক্লাব মাঠে অনুষ্ঠিত বাছাই পর্বে সুপার সিক্সে নিজেদের শেষ ম্যাচ খেলে জিম্বাবুয়ে। প্রতিপক্ষ স্কটল্যান্ড। ঘরের মাঠেও স্কটিশদের কাছে ৩১ রানের ব্যবধানে হেরে গেছে জিম্বাবুইয়ানরা।
টস জিতে প্রথমে স্কটল্যান্ডকে ব্যাট করতে পাঠায় জিম্বাবুয়ে। ব্যাট করতে নেমে জিম্বাবুয়ে বোলারদের নিয়ন্ত্রিত বোলিংয়ের সামনে ৮ উইকেট হারিয়ে ২৩৪ রান সংগ্রহ করে স্কটিশরা।
জবাব দিতে নেমে রায়ান বার্ল ছাড়া জিম্বাবুয়ের আর কোনো ব্যাটারই দাঁড়াতে পারেনি স্কটিশ বোলারদের সামনে। যার ফলে ৪১.১ ওভারেই ২০৩ রান তুলে অলআউট হয়ে যায় তারা। ফলে ৩১ রানে পরাজয় বরণ করে জিম্বাবুয়ে। সে সঙ্গে বিশ্বকাপের চূড়ান্ত পর্বে খেলার আগেই বিদায় হয়ে গেলো তাদের। এ নিয়ে টানা দুটি বিশ্বকাপ খেলা হচ্ছে না জিম্বাবুয়ের।
জিম্বাবুয়েকে হারিয়ে শ্রীলঙ্কার পর দ্বিতীয় দল হিসেবে ভারত বিশ্বকাপে মোটামুটি নাম লিখে ফেলেছে স্কটল্যান্ড। আয়ারল্যান্ড, ওয়েস্ট ইন্ডিজের পর এবারের বিশ্বকাপ বাছাই পর্বে আইসিসির পূর্ণ সদস্য দেশ জিম্বাবুয়েকেও হারালো তারা। জিম্বাবুয়ের বিদায় ঘটিয়ে স্কটল্যান্ডই এখন বিশ্বকাপে প্রায় নাম লিখে ফেলেছে।
স্কটিশদের সামনে বাধা কেবল নেদারল্যান্ডস। ডাচদের পয়েন্ট ৪ ম্যাচে ৪। শেষ ম্যাচে নেদারল্যান্ডসেরই মুখোমুখি হবে স্কটিশরা। এই ম্যাচে যদি ডাচরা অবিশ্বাস্যভাবে বড় কোনো ব্যবধানে জিতে রানরেট বাড়িয়ে নিতে পারে, তাহলে হয়তো তাদের সম্ভাবনা থাকবে। না হয় স্কটল্যান্ডই বিশ্বকাপে।
তবে নেদারল্যান্ডসের জন্য কাজটা একপ্রকার অসম্ভবই। কারণ, ৪ ম্যাচে এমনিতে ৬ পয়েন্ট নিয়ে দ্বিতীয় স্থানে রয়েছে তারা। রান রেট ০.২৯৬। অন্যদিকে ৪ ম্যাচে ৪ পয়েন্ট নিয়ে চতুর্থ স্থানে রয়েছে নেদারল্যান্ডস। তাদের রান রেট -০.০৪২ পয়েন্ট। ডাচদের রানরেট এতটাই ঋণাত্মক যে, বিশাল ব্যবধানে জিতলেও রান রেটে স্কটল্যান্ডকে পেছনে ফেলা প্রায় অসম্ভব।
টস হেরে ব্যাট করতে নেমে স্কটল্যান্ডের কোনো ব্যাটার বড় ইনিংস খেলতে পারেননি। সর্বোচ্চ ৪৮ রান করেন মাইকেল লিস্ক। ৩৮ রান করে ম্যাথিউ ক্রস। ৩৪ রান করেন ব্রেন্ডন ম্যাককালাম। ৩১ রান করেন জর্জ মুনসে এবং ২৮ রান করেন ক্রিস্টোফার ম্যাকব্রাইড। ৮ উইকেট হারিয়ে ২৩৪ রান সংগ্রহ করে তারা। জিম্বাবুয়ের হয়ে ৩ উইকেট নেন শন উইলিয়ামস এবং ২ উইকেট নেন তেন্দাই চাতারা।
জবাব দিতে নেমে শুরু থেকেই উইকেট হারাতে থাকে জিম্বাবুয়ে। তবে মিডল অর্ডারে রায়ান বার্ল একাই হাল ধরেন। ৮৪ বলে ৮৩ রান করেন তিনি। ওয়েসলি মাধভিরে করেন ৪০ রান এবং ৩৪ রান করেন সিকান্দার রাজা। কিন্তু শেষ পর্যন্ত ৪১.১ ওভারে ২০৩ রানে অলআউট। স্কটল্যান্ডের হয়ে ক্রিস সোল ৭ ওভারে ৩৩ রান দিয়ে নেন ৩ উইকেট। ২টি করে উইকেট নেন ব্রেন্ডন ম্যাককালাম এবং মাইকেল লিস্ক।