আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচন অংশগ্রহণমূলক, অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষভাবে একটি মডেল নির্বাচন হবে বলে প্রত্যাশা ব্যক্ত করেছেন জাতীয় সংসদের বিরোধী দলীয় নেতা ও জাতীয় পার্টির প্রধান পৃষ্ঠপোষক রওশন এরশাদ।
বৃহস্পতিবার (৬ জুলাই) জাতীয় সংসদের বাজেট অধিবেশনের সমাপনী বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
এর আগে স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরীর সভাপতিত্বে সংসদের বৈঠক শুরু হয়। পরে প্রধানমন্ত্রী ও সংসদ নেতার বক্তব্যের পর সংসদের অধিবেশন সমাপ্তি সংক্রান্ত রাষ্ট্রপতির আদেশ পড়ে শোনান স্পিকার।
বিরোধী দলীয় নেতা বলেন, আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচন অবাধ ও সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন করার আহ্বান জানিয়ে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রসহ বিভিন্ন রাষ্ট্র বক্তব্য দিয়েছে। বিপরীতে বাংলাদেশের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে- অবাধ, সুষ্ঠু ও বিশ্বাসযোগ্য নির্বাচন করার ব্যাপারে সরকার বদ্ধপরিকর। সব দলকে নির্বাচনমুখী করাই হবে নির্বাচন কমিশনের মূল লক্ষ্য। এক্ষেত্রে তারা কতটা সফল হন, এটাই এখন দেখার বিষয়।
রওশন বলেন, আগামী জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠানের জন্য নতুন নির্বাচন কমিশনের হাতে খুব বেশি সময় নেই। এর মধ্যেই সব ধরনের প্রস্তুতি শেষ করতে হবে। দশকের পর দশক ধরে দেশে নির্বাচন কেন্দ্রিক সহিংসতা, সংঘাত ও প্রাণহানির পুনরাবৃত্তি ঘটতে থাকুক, আমরা তা চাই না।
‘অংশগ্রহণমূলক, অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষভাবে অনুষ্ঠানের মাধ্যমে নির্বাচন কমিশন দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনকে একটি ‘মডেল নির্বাচনে’ পরিণত করবে, এটাই প্রত্যাশা।’
তিনি বলেন, গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র ব্যবস্থায় রাষ্ট্র পরিচালিত হবে জনগণের প্রত্যক্ষ মতের ভিত্তিতে। নির্বাচন কমিশন সম্মানিত নাগরিকদের মতামত গ্রহণ করবে। নাগরিকদের মতপ্রকাশের মাধ্যম হচ্ছে ভোট। এই ভোট ব্যবস্থার আয়োজন, গ্রহণ, ভোটগণনা, ফল প্রকাশ করার সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠান হচ্ছে ইসি। এক্ষেত্রে নির্বাচন কমিশনকে নির্বাচনকালীন অনেক ক্ষমতাও দিয়েছে রাষ্ট্র। অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচনের স্বার্থে কমিশন সরকারের কাছে যেকোনো সহায়তা চাইতে পারে এবং সরকার তা দিতে বাধ্য। অতএব ইসি নির্ধারিত দায়িত্ব পালনে সচেষ্ট থাকলেই নির্বাচন অবাধ ও সুষ্ঠু করা যায়।
জাতীয় নির্বাচনের এখনও পাঁচ মাস বাকি উল্লেখ করে তিনি এখনই মাঠ পর্যায়ে নাগরিকদের ভোট প্রদান বিষয়ে সচেতন করে তুলতে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণের অনুরোধ জানান।
বিরোধী দলীয় নেতা বলেন, এবারের বাজেট তিনটি কারণে খুবই গুরুত্বপূর্ণ। করোনা মহামারি এবং ইউক্রেন-রাশিয়া যুদ্ধের কারণে সৃষ্ট বিশ্ব পরিস্থিতিতে জ্বালানি তেলের মূল্যবৃদ্ধি এবং আন্তর্জাতিক নানাবিধ বিধি-নিষেধ আরোপের ঘটনা ঘটেছে। সরকার বাধ্য হয়ে আইএমএফ’র ঋণ গ্রহণ করেছে। এখন আইএমএফের সংস্কারের শর্ত পূরণ একটা নতুন চ্যালেঞ্জ সৃষ্টি করেছে।
তিনি বলেন, দেশের মূল্যস্ফীতির পেছনে ভূ-অর্থনৈতিক প্রভাব যতটা না কাজ করছে, এরচেয়ে বেশি কাজ করছে অসাধু সিন্ডিকেটদের নৈরাজ্য। প্রতিদিনের রান্নায় ব্যবহৃত কাঁচা মরিচ, আলু, ডিম-তো আর ইউক্রেন বা রাশিয়া থেকে আসে না। তাহলে এগুলোর দাম বাড়ায় কে?
বিরোধী দলীয় নেত্রী বলেন, সরকারের সুষ্ঠু নজরদারি আর দৃঢ় পদক্ষেপের অভাবে খুচরা ব্যবসায়ীরাও অযৌক্তিক দামে পণ্য বিক্রি করছেন। অতি মুনাফা লোভী ব্যবসায়ীদের কারসাজির কারণে প্রতিটি ভোগ্যপণ্য মানুষের ক্রয়ক্ষমতার বাইরে চলে গেছে।
মূল্যস্ফীতি কমিয়ে আনতে সরকার আরও আন্তরিক হবে বলেও তিনি প্রত্যাশা করেন।