ওয়াগনারের ভয়: সীমান্তে নিরাপত্তা বাড়াচ্ছে পোল্যান্ড

আন্তর্জাতিক ডেস্ক

রাশিয়ার বিরুদ্ধে বিদ্রোহ করা ভাড়াটে সেনাদল ওয়াগনারের সদস্যরা চুক্তি অনুযায়ী বেলারুশে চলে যাওয়ার প্রস্তুতি নিতে শুরু করেছে। এতে বেশ উদ্বিগ্ন প্রতিবেশী দেশ পোল্যান্ড। এরই পরিপ্রেক্ষিতে সীমান্তে নিরাপত্তা বাড়াতে শুরু করেছে দেশটি। ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, পোলান্ডের যে সীমান্তে একসময় মাত্র কয়েকটি পিলার আর কাঠের ফাঁড়ি ছিল, সেখানে এখন মাইলের পর মাইল এলাকাজুড়ে দেওয়া হয়েছে ধাতব বেড়া। বসানো হচ্ছে থারমাল ক্যামেরা ও স্পটলাইট। বাড়ানো হচ্ছে টহলদার নিরাপত্তাকর্মীর সংখ্যা।

বিবিসি বলছে, কেবল ওয়াগনারই নয়, বেলারুশ থেকে শরণার্থী প্রবেশ নিয়ন্ত্রণও পোল্যান্ডের সীমান্ত শক্তিশালী করার একটি উদ্দেশ্য। বেলারুশ দুইবছর আগে থেকেই হাজার হাজার শরণার্থীকে সীমান্ত পেরিয়ে পোল্যান্ডে যেতে উৎসাহতি করে আসছে, যাকে ‘হাইব্রিড যুদ্ধ’ তৎপরতা বলছে আসছে ওয়ারশ।

universel cardiac hospital

এরমধ্যেই যোগ হয়েছে ওয়াগনার শঙ্কা। এ সপ্তাহে লিথুনিয়ায় ন্যাটো সম্মেলনে পোলিশ সরকার সতর্ক করে বলেছে, সমস্যা আরও বাড়াতে ওয়াগনার বাহিনীকে কাজে লাগানো হতে পারে। তাই নিরাপত্তা বাড়াতে সীমান্ত অঞ্চলে অতিরিক্ত পুলিশ কর্মকর্তা পাঠাচ্ছে তারা।

পোল্যান্ড-বেলারুশ সীমান্তের প্রহরী মাইকল বুরা বলেন, বেলারুশের কার্যকলাপ আগে থেকে আঁচ করা কঠিন, আর এটিই আমাদের সবচেয়ে বড় হুমকি। নতুন যেকোনো পরিস্থিতির জন্য আমাদের প্রস্তুত থাকতে হবে। কেউই আসলে জানে না ওয়াগনার বাহিনী কেন বেলারুশে ঢুকছে ও কীসের প্রস্তুতি নিচ্ছে।

গত বছর ২৪ ফেব্রুয়ারি থেকে শুরু হওয়া ইউক্রেইন যুদ্ধে রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের সবচেয়ে মারাত্মক অস্ত্র হয়ে উঠেছিল ইয়েভজেনি প্রিগোজিনের ওয়াগনার বাহিনী। কিন্তু গত ২৩ জুন হঠাৎ করেই রুশ সেনাবাহিনীর নেতৃত্বের বিরুদ্ধে বিদ্রোহ ঘোষণা করে বসেন প্রিগোজিন। রাতারাতি রাশিয়ার দক্ষিণাঞ্চলের একটি নগরী দখল করে ও মস্কো অভিমুখী যাত্রা শুরু করে ওয়াগনার।

পরদিন এক হাজার কিলোমিটারেরও বেশি দূরত্ব ‍অতিক্রম করে মস্কোর ২০০ কিলোমিটারের মধ্যে পৌঁছে যায় প্রিগোজিনের অনুসারীরা। তবে শেষ পর্যন্ত বেলারুশের প্রেসিডেন্ট আলেক্সান্ডার লুকাশেঙ্কোর মধ্যস্থতায় ওই বিদ্রোহের অবসান হয়। বিদ্রোহীদের কোনো সাজার মুখে পড়তে হবে না ও রাশিয়া ছেড়ে বেলারুশে চলে যেতে দেওয়া হবে এমন শর্তে একটি চুক্তি হয় ওয়াগনার ও পুতিন প্রশাসনের মধ্যে।

বিদ্রোহের পর থেকেই প্রিগোজিন ও তার বাহিনী ঠিক কোথায় অবস্থান করছে, তা নিয়ে নিশ্চিত কোনো তথ্য এখনো জানা যায়নি। গত বৃহস্পতিবার (৬ জুলাই) প্রেসিডেন্ট লুকাশেঙ্কো বলেছিলেন, প্রিগোজিন ও তার যোদ্ধারা এখনো রাশিয়ায় অবস্থান করছেন। শনিবার (৮ জুলাই) ওয়াগনারের এক শীর্ষ কমান্ডার বলেন, বেলারুশে যাওয়ার আগে প্রিগোজিনের নির্দেশে ওয়াগনার যোদ্ধারা এখন ছুটি কাটাচ্ছেন।

সূত্র: বিবিসি

শেয়ার করুন