মঙ্গলবার থেকে শুরু হচ্ছে রুপিতে লেনদেন

অর্থনৈতিক প্রতিবেদক

প্রতিবেশী দেশ ভারতের সঙ্গে রুপিতে লেনদেন আনুষ্ঠানিকভাবে উদ্বোধন হতে যাচ্ছে আগামীকাল মঙ্গলবার। এরইমধ্যে সরকারি সোনালী ও বেসরকারি ইস্টার্ন ব্যাংক রুপিতে লেনদেনে বিশেষ অ্যাকাউন্ট খোলার জন্য ভারতীয় রিজার্ভ ব্যাংক থেকে অনুমোদন পেয়েছে। আর ভারতের স্টেট ব্যাংক অব ইন্ডিয়া ও আইসিআইসিআই ব্যাংক উভয় দেশের মধ্যে রুপিতে বাণিজ্য করার দায়িত্বপ্রাপ্ত ব্যাংক।

মঙ্গলবার আনুষ্ঠানিকভাবে এই লেনদেন প্রক্রিয়া উদ্বোধন করবেন দুই দেশের কেন্দ্রীয় ব্যাংকের গভর্নর।

প্রাথমিকভাবে দুইটি ব্যাংকে লেনদেন হলেও পরে অন্যান্য ব্যাংক যুক্ত হবে এই প্রক্রিয়ায়। এছাড়াও উভয় দেশের বাণিজ্য ব্যবধান কমে এলে রুপির পাশাপাশি বাংলাদেশি মুদ্রা টাকাতেও হবে এ বাণিজ্য।

টাকার বিপরীতে রুপিতে বিনিময় হার ব্যাংকগুলোকে সরবরাহ করে থাকে বাংলাদেশ ব্যাংক। এ হার ধরে পণ্য আমদানি ও রপ্তানি খরচ নির্ধারণ করবে ব্যাংকগুলো। গত রবিবার প্রতি ডলারের বিপরীতে টাকার বিনিময় হার ১০৯ টাকা। অন্যদিকে গত এপ্রিল শেষে ভারতের রুপির বিপরীতে টাকার বিনিময় হার ছিল ১ টাকা ২৬ পয়সা।

রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের জেরে সৃষ্ট চলমান ডলারের সংকটের মধ্যে কয়েকমাস ধরেই টাকা ও রুপিতে দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্যের লেনদেনের বিষয়ে আলোচনা চলছিলো বাংলাদেশ-ভারতের মধ্যে। যদিও আরও আগে থেকেই এই আলোচনা চলছিলো। তবে সংকটকালীন সময়ে ফলপ্রসু আলোচনা হয়।

এদিন বাংলাদেশ ব্যাংক ও ভারতীয় হাইকমিশনের যৌথ আয়োজনে রাজধানীর লা মেরিডিয়ান হোটেলে একটি অনুষ্ঠানের মাধ্যমে বাণিজ্যের এই নতুন পদ্ধতি চালু করা হবে। অনুষ্ঠানে বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর আব্দুর রউফ তালুকদার, ডেপুটি গভর্নর, বিভিন্ন ব্যাংকের এমডি এবং ভারতীয় হাইকমিশমনের বিভিন্ন পর্যায়ের কর্মকর্তারা অংশ নেবেন।

অর্থনৈতিক বিশ্লেষকরা বলছেন, রুপিতে লেনদেন নতুন সম্ভাবনার দুয়ার খুলে দেবে। এতে ডলারের ওপর নির্ভরতা কমে গিয়ে উদ্যোক্তাদের খরচও কমে যাবে।

জানা যায়, এই লেনদেন শুরু হওয়ার পর রপ্তানি আয় বাবদ যে পরিমাণ রুপি আসবে, সমপরিমাণ আমদানি দায় নিষ্পত্তি করতে পারবে ব্যাংক। আবার স্বল্পমেয়াদি রুপির ঋণ নিয়ে আমদানি করা যাবে। এতে ডলারের ওপর সৃষ্ট চাপ সাময়িকভাবে কমবে।

বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, বর্তমানে ভারতে বছরে প্রায় ২ বিলিয়ন ডলারের পণ্য রপ্তানি করে বাংলাদেশ। এর বিপরীতে দেশটি থেকে আমদানি হয় প্রায় ১৪ বিলিয়ন ডলারের পণ্য। এই চিত্র থেকে এটা স্পষ্ট, বাংলাদেশ রপ্তানি করে ২ বিলিয়ন ডলারের সমপরিমাণ রুপি পাবে, যা এত দিন ডলারে পেয়ে আসত। আর আমদানির ক্ষেত্রেও দুই বিলিয়ন ডলারের বেশি আমদানি মূল্য রুপিতে পরিশোধের সক্ষমতা এই মুহূর্তে বাংলাদেশের নেই। ফলে আমদানি বাবদ বাকি অর্থ ডলারেই শোধ করতে হবে।

শেয়ার করুন