ভারতের উত্তরাঞ্চলে ভারী বৃষ্টি-বন্যায় গত তিন দিনে ৩৭ জনের বেশি মানুষ প্রাণ হারিয়েছে বলে খবর পাওয়া গেছে। রাজধানী দিল্লিতে যমুনা নদীর পানি বিপৎসীমা ছাড়িয়ে গেছে। গত রাতে যমুনা নদীর পানি ২০৫ দশমিক ৩৩ মিটারে পৌঁছায়।
অপরদিকে মঙ্গলবার সকালে যমুনার পানি ২০৬ দশমিক ২৪ মিটার রেকর্ড হয়েছে। স্থানীয় কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, নিচু এলাকা থেকে লোকজনকে সরিয়ে নেওয়া হচ্ছে। শহরের বিভিন্ন অস্থায়ী আশ্রয়কেন্দ্রে তাদের নেওয়া হবে বলে জানানো হয়।
বন্যাকবলিত এলাকায় ১৬টি কন্ট্রোল রুম স্থাপন করেছে দিল্লি সরকার। এদিকে জলাবদ্ধতার সমস্যা মোকাবিলায় বেশ কয়েকটি পদক্ষেপের কথা ঘোষণা করেছেন মুখ্যমন্ত্রী অরবিন্দ কেজরিওয়াল।
এক সংবাদ সম্মেলনে কেজরিওয়াল বলেন, গত ৪০ বছরের মধ্যে প্রথমবারের মতো দিল্লিতে এত বৃষ্টি হয়েছে। এর আগে ১৯৮২ সালে একই ধরনের পরিস্থিতি দেখা যায়। সে সময় ২৪ ঘণ্টায় ১৬৯ মিলিমিটার বৃষ্টি হয়েছিল। এবারও নজিরবিহীন বৃষ্টিপাত দেখছে দিল্লিবাসী।
শুক্রবার সন্ধ্যা থেকে দিল্লিতে বৃষ্টি শুরু হয়। সারারাত বৃষ্টি হওয়ার পর শনিবার সকালেও পরিস্থিতির কোনও পরিবর্তন হয়নি। ফলে সকাল থেকেই রাজধানীর অধিকাংশ এলাকা জলমগ্ন হয়ে পড়ে। শনিবার বৃষ্টি থামার পরিবর্তে তা আরও তীব্র হয়। গত কয়েকদিন ধরেই একই রকম পরিস্থিতি বিরাজ করছে।
এই পরিস্থিতিতে দিল্লিতে সরকারি কর্মীদের সাপ্তাহিক ছুটি বাতিল করা হয়। মুখ্যমন্ত্রী অরবিন্দ কেজরিওয়াল সরকারি কর্মীদের পরিস্থিতি খতিয়ে দেখার নির্দেশ দিয়েছেন।
আবহাওয়া অফিস জানিয়েছে, আরও কয়েকদিন দিল্লিসহ উত্তর ভারতের অধিকাংশ এলাকায় ভারী বৃষ্টি হবে। যদিও বৃষ্টির কারণে ভ্যাপসা গরমের হাত থেকে রেহাই পাচ্ছে রাজধানী। কয়েকদিন ধরে সেখানে তাপমাত্রা কিছুটা কমেছে।
প্রবল বৃষ্টিতে প্রায় পুরো উত্তর ভারতেই নাজেহাল অবস্থা। সেনাবাহিনী এবং জাতীয় বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনী ক্ষতিগ্রস্ত রাজ্যগুলোতে ত্রাণ ও উদ্ধার তৎপরতা জোরদার করতে পদক্ষেপ নিয়েছে।
এই অঞ্চলের বেশ কয়েকটি নদীর পানি উপচে পড়ছে। শহরের অনেক রাস্তা-ঘাট এবং বাড়ি-ঘর হাঁটু পানিতে ডুবে গেছে। রাজস্থান, পাঞ্জাব এবং হরিয়ানার বিভিন্ন স্থানে ভারী বৃষ্টিপাতের কারণে নিচু এলাকায় জলাবদ্ধতা তৈরি হয়েছে এবং বন্যা পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে।