অভিনয় ক্যারিয়ারে অর্ধশতকেরও বেশি সময় পার করে ফেলেছেন বর্ষীয়ান অভিনেতা আবুল হায়াত। শুধু অভিনেতা পরিচয়েই নিজেকে সীমাবদ্ধ রাখেননি, কাজ করেছেন পরিচালক, চিত্রনাট্যকার হিসেবেও। অথচ এই অভিনেতাকেই নাকি কাজে নেন না বর্তমান সময়ের পরিচালকেরা।
সম্প্রতি সংবাদমাধ্যমের সঙ্গে আলাপকালে এমনটাই জানালেন বরেণ্য এ অভিনেতা। তিনি বলেন, ‘এখনকার পরিচালকেরা আমাকে কাজে নেয় না। তারা আমাকে নেয় না বলেই অভিনয়ে দেখা যায় না। তারপরও টুকটাক কাজ করি। আর অবসর সময় আমার কাজের কোনো শেষ নেই। বই পড়ি, যা মনে আসে সেটা লিখি। এছাড়া বাড়ির বাগানে কাজ করেই সময় কেটে যায়।’
নাটকে বাজেট সমস্যা ও সময় সীমাবদ্ধতার কথাও জানান তিনি। আবুল হায়াত বলেন, ‘এখনো আমরা (প্রতি নাটকে) আড়াই/তিন লাখের মধ্যেই আছি। সেখানে ২৪ ঘণ্টা নির্ধারিত। এরমধ্যে আমাদের ৪৫-৬০ মিনিটের একটি নাটক করতে হয়। আমি অসুস্থ হই বা মরে যাই তাদের কিছু যায় আসে না। অনেকভাবে আমাদের হাত-পা বাঁধা।’
আগেরকার নাটকের সঙ্গে এখনকার নাটকের পার্থক্য আছে জানিয়ে এ অভিনেতা বলেন, ‘এখন আমরা টেলিভিশন নাটক যেটা করি সেটা আমার কাছে নাটক মনে হয় না। আমরা ফিল্ম বানাই। টেলিভিশন নাটক বলতে আমরা যেটা বুঝতাম সে কাজটি আমরা এখন করি না। আমাদের স্ক্রিপ্ট, শট ও নাটকের প্রবাহ দেখলে সেটা বোঝা যায়। আমাদের উত্তরণটা ঘটেছে- আগে টেলিভিশন নাটক বানাতাম এখন আমরা ফিল্ম বানাই।’
উল্লেখ্য, ১৯৬৯ সালে ‘ইডিপাস’ নাটকে অভিনয়ের মধ্য দিয়ে প্রথমবারের মতো টিভি পর্দায় অভিষেক ঘটে আবুল হায়াতের। এরপর কাজ করেছেন অসংখ্য নাটক ও বিখ্যাত চলচ্চিত্রে। তার অভিনীত উল্লেখ্য চলচ্চিত্রগুলো হলো- ‘তিতাস একটি নদীর নাম’, ‘অরুণোদয়ের অগ্নিসাক্ষী’, ‘কেয়ামত থেকে কেয়ামত’, ‘পালঙ্ক’, ‘মহা গ্যাঞ্জাম’, ‘স্বপ্নের ঠিকানা’, ‘সূর্য সন্তান’, ‘বাবা কেন চাকর’, ‘আগুনের পরশমণি’ প্রভৃতি।
এছাড়া এ অভিনেতার জনপ্রিয় নাটকগুলো হচ্ছে- ‘এই সব দিন রাত্রি’, ‘একা একা’, ‘দ্বিতীয় জন্ম’, ‘অয়োময়’, ‘বহুব্রীহি’, ‘হিমু’, ‘নক্ষত্রের রাত’, ‘আজ রবিবার’, ‘ঘটনা সামান্য’, ‘অতিথি’, ‘মিলিনিয়াম বোম্ব’, ‘হাউসফুল’, ‘ফ্ল্যাশ ব্যাক’, ‘হাউস ৪৪’, ‘মিস শিউলি’, ‘দ্বিতীয় কৈশোর’ ইত্যাদি।