গাজীপুরের টঙ্গীতে সন্ত্রাসী হামলায় নিহত শ্রমিকনেতা শহিদুল ইসলামের পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে দেখা করেছেন তৈরি পোশাকশিল্পের মালিকদের সংগঠন বিজিএমইএর সভাপতি ফারুক হাসান। আজ শুক্রবার বেলা ১১টায় তিনি গাজীপুরের শ্রীপুরের রাজাবাড়ি ইউনিয়নের মিটালু গ্রামে শহিদুলের বাড়িতে পৌঁছান।
এ সময় শহিদুলের কবর জিয়ারত করেন বিজিএমইএ সভাপতি ফারুক হাসান। পরে তিনি শহিদুলের অসুস্থ স্ত্রী কাজলী আক্তার ও তার দুই সন্তানের হাতে তিন লাখ টাকার অর্থ সহযোগিতার চেক হস্তান্তর করেন। শহিদুলের শোকসন্তপ্ত পরিবারের সঙ্গে প্রায় এক ঘণ্টা সময় কাটান এবং তাদের সঙ্গে বিভিন্ন বিষয় নিয়ে আলোচনা করেন ফারুক হাসান।
স্থানীয় সূত্রে জানায়, বিজিএমইএর সভাপতি ফারুক হাসানের সঙ্গে শহিদুলের বাড়িতে যান গার্মেন্টস অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রিয়াল ওয়ার্কার্স ফেডারেশনের সভাপতি কল্পনা আক্তার, সাধারণ সম্পাদক বাবুল আক্তারসহ দেশের বিভিন্ন শ্রমিক সংগঠনের কয়েকজন প্রতিনিধিও। বিজিএমইএর সভাপতিকে দেখে ঘর থেকে কাঁদতে কাঁদতে বের হয়ে আসেন শহিদুলের ক্যানসার আক্রান্ত স্ত্রী কাজলী আক্তার। শহিদুল হত্যাকাণ্ডের বিচার নিশ্চিত করা হবে জানিয়ে ফারুক হাসান বলেন, যারা এ ঘটনা ঘটিয়েছে, তারা যত শক্তিশালী লোকই হোক, তাদের ছাড় দেওয়া হবে না।
সন্ত্রাসী হামলায় নিহত শহিদুলের ছেলে সাদিকুল ইসলাম জানায়, বিজিএমইএর সভাপতি ও অন্যান্য নেতা তাদের বাড়িতে এসেছিলেন। তারা হত্যাকারীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি নিশ্চিত করার আশ্বাস দিয়েছেন। অর্থ সহযোগিতাও দিয়ে গেছেন।
গার্মেন্টস অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রিয়াল ওয়ার্কার্স ফেডারেশন গাজীপুরের সভাপতি ছিলেন শহিদুল ইসলাম। তিনি গাজীপুরের শ্রীপুরের রাজাবাড়ি ইউনিয়নের ২ নম্বর ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের যুগ্ম সম্পাদকও ছিলেন। গত ২৫ জুন টঙ্গীর সাতাইশ বাগানবাড়ি এলাকার প্রিন্স জ্যাকার্ড সোয়েটার লিমিটেড কারখানায় শ্রমিকদের ঈদ বোনাস ও জুন মাসের বেতন আদায় করতে গিয়ে সন্ত্রাসীদের হামলায় নিহত হন শহিদুল।
এ ঘটনায় ২৬ জুন টঙ্গী পশ্চিম থানায় ছয়জনের নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাতনামা সাতজনের বিরুদ্ধে মামলা করেন সংগঠনটির কেন্দ্রীয় সভাপতি কল্পনা আক্তার। এখন পর্যন্ত এ মামলায় আটজনকে গ্রেপ্তার করেছে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী।
শহিদুল ছিলেন পরিবারের একমাত্র উপার্জনক্ষম ব্যক্তি। তার স্ত্রী কাজলী আক্তার ক্যানসার আক্রান্ত। স্বামীকে হারিয়ে দুই শিশুসন্তানকে নিয়ে কাজলী আক্তার চরম অর্থকষ্টে ভুগছেন। এর আগে ১১ জুলাই স্থানীয় সংসদ সদস্য ইকবাল হোসেন শহিদুলের বাড়িতে এসে পরিবারটিকে অর্থসহায়তা করেন।