গণপ্রতিনিধি আদেশের (আরপিও) সংশোধনী নিয়ে আলোচনা-সমালোচনার মধ্যে নির্বাচন বিশেষজ্ঞ, সুশীল সমাজ ও গণমাধ্যম প্রতিনিধিদের নিয়ে বসছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)।
আগামী বৃহস্পতিবার (২০ জুলাই) মতবিনিময়ে সভায় আসার জন্যে অংশীজনদের আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে। ওইদিন সকাল ১১টায় অনুষ্ঠেয় এ মতবিনিময় সভায় সভাপতিত্ব করবেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার কাজী হাবিবুল আউয়াল।
নির্বাচন কমিশন সচিব জাহাংগীর আলমের স্বাক্ষরিত আমন্ত্রণপত্র এরই মধ্যে (১৩ জুলাই) সংশ্লিষ্ট অংশীজনদের কাছে বিতরণও করা হয়েছে।
ইসির অতিক্তি সচিব অশোক কুমার দেবনাথ বলেন, ‘আরপিও সংশোধন পাস হয়েছে। ৯১ অনুচ্ছেদের একটি ধারা নিয়ে অনেকে নানা ধরনের আলোচনা-সমালোচনা করছে, অনেকে ভিন্নতর ব্যাখ্যা দিচ্ছেন। এটা নিয়ে যে অস্পষ্টতা, তা দূর করতে এ মতবিনিময় সভায় অংশীজনদের কাছে ব্যাখ্যা তুলে ধরা হবে।’
তিনি জানান, আমন্ত্রিত ব্যক্তিদের মতামত ও পরামর্শ নেওয়া হবে। সেই সঙ্গে যাদের ভুল ধারণা রয়েছে কমিশনের ব্যাখ্যা পেয়ে তা নিরসন হবে।
আরপিও ৯১ অনুচ্ছেদের সংশোধনী এনে অনিয়মের অভিযোগে ভোট বন্ধে নির্বাচন কমিশনের ক্ষমতা কমানো হয়েছে দাবির মধ্যে ৪ জুলাই বিরোধীদের আপত্তির মুখে সংসদে পাস হয় গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশের (আরপিও) সংশোধনী বিল, ২০২৩।
তবে আইনমন্ত্রী এসব অভিযোগ নাকচ করে দাবি করেছেন, বিদ্যমান আইনের ৯১ এ অনুচ্ছেদে ভোট বন্ধের ক্ষমতা নির্বাচন কমিশনের রয়েছে। ইসির ক্ষমতা কমানো হয়নি বরং এ নিয়ে বিরোধীরা জনগণকে বিভ্রান্ত করছে।
সবশেষ ১০ জুলাই সিইসি কাজী হাবিবুল আউয়াল ব্রিফিংয়ে এসে দাবি করেছেন, আরপিও সংশোধনের ফলে নির্বাচন কমিশনের ক্ষমতা ‘আরও বেড়েছে ও সুসংহত হয়েছে’। ভোট বন্ধে ইসির কোনও ক্ষমতা ‘রহিত হয়নি’, বরং আরপিও সংশোধন নিয়ে জনগণকে ‘বিভ্রান্ত করা হচ্ছে, ইসিকে হেয় করা হচ্ছে’।
৯১ অনুচ্ছেদের এ ধারায় ‘ইলেকশন’ শব্দের পরিবর্তে ‘পোলিং’ শব্দটি ব্যবহারে ভোটে ইসির ক্ষমতা কমেছে বলে নির্বাচন বিশ্লেষকরা বলে এসেছেন। তবে সিইসি দাবি করছেন, এটা ‘অপব্যাখ্যা’ করা হচ্ছে, যা ‘দুঃখজনক’।
সিইসির মতে, ‘৯১ এ ধারায় কোনও পরিবর্তন যদি হতো, তাহলে আমাদের ক্ষমতা হেরফের হত। সেখানে কিছু করা হয়নি। এটা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ধারা- যেখানে পোলিং পিরিয়ডে আমরা যে কোনও একটি, দুটি কেন্দ্র বা সমস্ত কন্সটিটিউয়েন্সির আমরা বাতিল করে দিতে পারবো। সে ক্ষমতা হুবহু আগের মতো রয়েছে।’
সংশোধনে নতুন দফা ‘৯১ এ’ সংযোজনের বিষয়ে তিনি জানান, নির্বাচন হয়ে যাওয়ার পর তার ফল সরকারিভাবে পাঠানোর পরে ইসির গেজেট করা ছাড়া আর কোনো কাজ থাকে না।… এখন অভিয়োগ থাকলে গেজেট উইথহেল্ড করতে পারব, সেক্ষেত্রে কন্সটিটিউয়েন্সির নির্বাচনটা বাতিল না করে যে যে কেন্দ্রে ফলাফল বাধাগ্রস্ত হয়েছে মনে করবে সেসব কেন্দ্রে ফলাফল বাতিল করতে পারবে।