প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান সবসময় বিজ্ঞান ও কারিগরি শিক্ষার ওপর গুরুত্ব দিয়েছেন। আমাদের জনসংখ্যা হিসাব করে, মানুষের কর্মদক্ষতা যেন বৃদ্ধি পায়, সেদিকে তিনি দৃষ্টি দিতেন। ১৯৭৩ সালে সংসদে বিশ্ববিদ্যালয় আইন পাস করেন। বিশ্ববিদ্যালয়গুলোকে স্বায়ত্তশাসনও দিয়েছেন বঙ্গবন্ধু।
আজ রোববার সকালে বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে অধ্যক্ষ সম্মিলন ও বৃত্তি প্রদান অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় এ সম্মিলনের আয়োজন করে।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ১৯৯১ সালে যখন আমাদের এ অঞ্চলে, দক্ষিণ এশিয়ার বিভিন্ন দেশে যখন সাবমেরিন ক্যাবল সংযুক্ত হচ্ছে। তখন একটি প্রস্তাব আমরা পেয়েছিলাম, বাংলাদেশ বিনা পয়সায় সাবমেরিন ক্যাবলে সংযুক্ত হতে পারবে। সেসময় ক্ষমতায় খালেদা জিয়া। তিনি বলে দিলেন সংযুক্ত করা যাবে না। দেশের সব সিক্রেসি নাকি আউট হয়ে যাবে। সিক্রেসি টা কী, আউট বা কীভাবে হবে, সেটা আমরা জানি না। এরকম মানসিকতা নিয়ে আমাদের দেশ চলছে। কত পেছনে আমরা পিছিয়ে ছিলাম।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি বলেন, আমি উদ্যোগ নিলাম যেভাবে হোক, যেখান থেকে হোক কিছু কম্পিউটার যোগাড় করে স্কুলে স্কুলে আমাদের শিক্ষার্থীদের এ শিক্ষাটা দিতে হবে। আমরা ১০ হাজার স্কুল খুঁজে ঠিক করলাম। এজন্য উন্নয়ন সহযোগীদের সহযোগিতা নিতে হলো। ১০ হাজার কম্পিউটার কেনার জন্য আমি পদক্ষেপ নিলাম। নেদারল্যান্ড সরকার একটা অনুদান দিলো। তারা কম্পিউটারের অর্ধেক দাম দিল, বাকি অর্ধেকটা আমাদের দিতে হবে। আমরা সেই সুযোগ নিয়ে ১০ হাজার কম্পিউটার কেনার সব পদক্ষেপ নিলাম। টাকা-পয়সা দেওয়া হয়ে গেলো। এর মধ্যে আসলে আওয়ামী লীগের পাঁচ বছর সময় শেষ হয়ে গেলো। আমরা ২০০১ সালের নির্বাচনে ক্ষমতায় আসতে পারিনি। বিএনপি-জামায়াত জোট আসল।
সরকারপ্রধান বলেন, খালেদা জিয়ার কাছে যখন এ কথাটা গেলো, তিনি জানলেন- কোম্পানির নাম টিউলিপ। টিউলপ হচ্ছে নেদারল্যান্ডসের জাতীয় ফুল। এ ফুলের নামে কোম্পানিটার নাম। আমাদের কম্পিউটার চলে আসবে। টিউলিপ নাম শুনেই তিনি খুব রেগে গেলেন। কারণ আমার ছোট বোন রেহানা। তার মেয়ের নাম টিউলিপ। তার নামে নাম কেন? এটা তাকে (খালেদা জিয়া) কে বোঝালে বা তিনি কী বুঝলেন, খোদাই জানে। তখন তিনি বললেন, ওই টিউলিপ নিশ্চয় শেখ রেহানার কোম্পানি। শেখ রেহানা তখন লন্ডনে। তার তো প্রশ্নই আসে না। ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্টের পর আমরা তো দেশে আসতে পারিনি। আমাদের তো রিফিউজি হিসেবে থাকতে হয়েছে বিদেশে। ছোট বোন রেহানার পাসপোর্টের সময়টা শেষ হয়ে গিয়েছিল। জিয়াউর রহমান পাসপোর্টটাও রিনিউ করে দেয়নি। তাকে লন্ডনে থেকে যেতে হয়। সেখানেই সে নাগরিকত্ব পায়।
শেখ রেহানা নেদারল্যান্ডসের ঘুরতে গিয়ে টিউলিপ দেখে মুগ্ধ হয়ে মেয়ের নাম টিউলিপ রাখেন উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আর সেটাই হয়ে গেলো আমাদের কাল। আপনার শুনলে অবাক হবেন। ওটা বাতিল হওয়ার পর ওই টিউলিপ কোম্পানি আমাদের বিরুদ্ধে মামলা করেছে। এ মামলার খরচ ও পেনাল্টি দিতে হলো বাংলাদেশকে। ৬০ কোটি টাকা গচ্চা গেলো। পরে ক্ষমতায় এসে দেন-দরবার করে কিছু টাকা কমাতে পেরেছিলাম। এরকম চিন্তার লোক ও বাংলাদেশের ক্ষমতায় ছিল। যা হোক পরবর্তীতে আমরা ডিজিটাল বাংলাদেশ করলাম।