চট্টগ্রাম নগরের কোতোয়ালি থানার কোরবানীগঞ্জ এলাকায় এক ভবনেই চলছে পাঁচ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শ্রেণি কার্যক্রম। প্রাথমিক, মাধ্যমিক ও কলেজ মিলিয়ে প্রায় সাড়ে তিন হাজার শিক্ষার্থীর শ্রেণি কার্যক্রম চলছে সেখানে। এতে গাদাগাদি করে ক্লাস করার সমস্যাসহ শৌচাগার ব্যবহারেও বেশ ভোগান্তিতে পড়তে হচ্ছে শিক্ষার্থীদের। শিক্ষকেরাও বলছেন, তারাও পাঠদানে হিমশিম খাচ্ছেন।
২০১৭ সালের শেষ দিকে কোরবানীগঞ্জ এলাকায় বলুয়ারদীঘি সিটি করপোরেশন বালিকা উচ্চবিদ্যালয় এবং লামাবাজার আছদ আলী সওদাগর সিটি করপোরেশন উচ্চবিদ্যালয়ের জরাজীর্ণ ভবন ভেঙে নতুন ভবন নির্মাণের উদ্যোগ নেওয়া হয়। এ দুই বিদ্যালয়ের ভবনে বলুয়ারদীঘি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় এবং লামাবাজার সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়েরও ক্লাস হতো। ভবন ভেঙে ফেলায় ২০১৮ সাল থেকে এ চার প্রতিষ্ঠানের শ্রেণি কার্যক্রম চলছে চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন কায়সার–নিলুফার কলেজ ভবনে। অথচ সাড়ে পাঁচ বছরে নতুন ভবন নির্মাণে মাত্র পাইলিংয়ের কাজ শুরু হয়েছে।
চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন কায়সার–নিলুফার কলেজ ভবনটি ছয়তলা। দ্বিতীয় ও তৃতীয় তলায় প্রায় এক হাজার শিক্ষার্থী নিয়ে কলেজের শ্রেণি কার্যক্রম চলছে। আর চতুর্থ, পঞ্চম ও ষষ্ঠ তলায় চলছে বাকি চারটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শ্রেণি কার্যক্রম। সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানের শিক্ষকেরা বলছেন, একই ভবনে পাঁচ প্রতিষ্ঠান হওয়ায় একাডেমিক ও প্রশাসনিক কার্যক্রম চালাতে ভোগান্তি হচ্ছে। ছুটির পর সিঁড়ি দিয়ে নামার সময় শিক্ষার্থীদের ভিড় লেগে যায়। কলেজ ভবনটি বৃহত্তর পাইকারি বাজার খাতুনগঞ্জ এলাকার পাশে হওয়ায় প্রায়ই সড়কে যানজট লেগে থাকে। এতে ব্যস্ত সড়কে চলাচলেও শিক্ষার্থীদের অসুবিধা হয়।
কলেজের অধ্যক্ষ ওমর ফারুক বলেন, বিদ্যালয়গুলোর স্থায়ী ভবনগুলো ভেঙে নতুন করে করা হচ্ছে। ২০১৭ সালের শেষ দিকে বিদ্যালয় ভবনগুলো ভেঙে ফেলা হলে তারা কলেজ ভবনে স্থানান্তরিত হয়।
গত বুধবার সরেজমিনে ভবনটিতে গিয়ে দেখা গেছে, কক্ষ–সংকটের কারণে স্থান সংকুলান করতে পারছেন না শিক্ষকেরা। বেলা সাড়ে ১১টায় প্রাথমিকের ক্লাস শেষ হলে একই কক্ষে মাধ্যমিকের ক্লাস বসে। পর্যাপ্ত কক্ষ না থাকায় সিঁড়ির মুখেই রাখা হয়েছে অতিরিক্ত বেঞ্চ-টেবিল।
চতুর্থ, পঞ্চম ও ষষ্ঠ তলায় প্রতিটিতে ৬টি করে কক্ষ ও ২টি করে শৌচাগার রয়েছে। এর মধ্যে একটি স্কুল ৮টি ও অন্যটি ৯টি কক্ষ পায়। তাদের মোট শিক্ষার্থী ১ হাজার ৫৬৬। রয়েছেন শিক্ষকেরা। এ ছাড়া চতুর্থ ও পঞ্চম তলায় থাকা ছোট স্টোর রুমগুলো শিক্ষকেরা বসার কক্ষ হিসেবে ব্যবহার করছেন। প্রতিটি শ্রেণিকক্ষে ৯০–৯৫ শিক্ষার্থীকে বসতে হয়। অথচ কক্ষগুলোতে বসার সুযোগ রয়েছে ৫০–৬০ জনের।