রাজধানীর মুগদা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালটি ৫০০ শয্যার। অথচ সেখানে ভর্তি আছেন ১ হাজার ২০৯ জন। এর মধ্যে ডেঙ্গু রোগীর সংখ্যাই হাসপাতালটির মোট শয্যাসংখ্যা ছাড়িয়ে গেছে। আজ মঙ্গলবার পর্যন্ত ডেঙ্গু রোগী আছেন ৫৪০ জন। বিপুল রোগীর চাপ সামলাতে চিকিৎসক আর নার্সরা হিমশিম খাচ্ছেন। এ কারণে ভালো চিকিৎসার পরিবেশ বজায় নেই হাসপাতালটিতে।
মুগদা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ভারপ্রাপ্ত পরিচালক মো. নিয়াতুজ্জামান আজ বললেন, প্রতি ঘণ্টায় নতুন ডেঙ্গু রোগীর চাপ বাড়ছে। ডেঙ্গু নিয়ে ভর্তি হওয়া ৫৪০ জনের মধ্যে প্রাপ্তবয়স্ক ৪১৭ জন এবং শিশু ১২৩টি। চলতি মাসে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ১৬ জন ডেঙ্গু রোগী মারা গেছেন। গত মাসে (জুন) মারা গেছেন ১৫ জন। নতুন রোগী তারা আর নিতে পারছেন না। কিন্তু রোগী আসার কমতি নেই।
আজ সরেজমিনে দেখা যায়, মুগদা হাসপাতালের তৃতীয় তলায় নারী, অষ্টম তলায় শিশু এবং নবম ও দশম তলায় পুরুষ ডেঙ্গু রোগীদের চিকিৎসা চলছে। ওয়ার্ডের ভেতরে জায়গা নেই। সামনের বারান্দা ও খোলা জায়গা দিয়ে সারি করে বিছানা পাতা হয়েছে। ছাদে অনেক দূরে দূরে লাগানো ফ্যান ঘুরতে থাকলেও বহু লোকের উপস্থিতিতে পরিবেশে ভ্যাপসা গরম। সবাই হাতপাখা দিয়ে বাতাস নিচ্ছেন।
এক–দুটি ব্যতিক্রম ছাড়া প্রতিটি বিছানায় রোগীর মাথার কাছে স্যালাইন ঝোলানোর স্ট্যান্ড থেকে ঝুলছে স্যালাইনের ব্যাগ। রোগীর সঙ্গে আছেন তাদের আত্মীয়স্বজন। বিশেষ করে নারী ও শিশুদের সঙ্গে মা–বাবাসহ একাধিক লোক আছেন দেখভাল করার জন্য। ফলে ওয়ার্ডগুলোতে বলতে গেলে পা ফেলার জায়গা নেই। দুই সারি বিছানার মাঝখান দিয়ে জমির আলের মতো একচিলতে সরু জায়গা। সেখান দিয়েই চিকিৎসক-নার্সদের চলাচল করতে হচ্ছে। নির্ধারিত জায়গার পাশাপাশি ওয়ার্ডের ভেতর সুবিধামতো জায়গায় টেবিল পেতে তার ওপর স্যালাইনের ব্যাগের স্তূপ সাজিয়ে বসেছেন অতিরিক্ত দায়িত্ব পালন করতে আসা নার্সরা।
মুগদা হাসপাতালে ডেঙ্গু রোগীদের চিকিৎসার জন্য আলাদা কোনো ওয়ার্ড নেই। বাড়তি রোগীর চাপ সামলানোর জন্য চারটি তলায় সুবিধামতো জায়গায় ডেঙ্গু রোগীদের শয্যা পাতা হয়েছে।