লক্ষ্মীপুরে আওয়ামী লীগ-বিএনপির সংঘর্ষের ঘটনায় সজীব নামে একজন নিহত হয়েছেন। নিহত ব্যক্তিকে যুবদল কর্মী বলে দাবি করেছে বিএনপি। তিনি উপজেলার চন্দ্রগঞ্জ এলাকার বাসিন্দা। সংঘর্ষে জেলা ছাত্রদলের সভাপতিসহ অর্ধশতাধিক নেতাকর্মী গুলিবিদ্ধ হয়েছে।
আজ মঙ্গলবার বিকাল ৪টা থেকে ৫টা পর্যন্ত ঘণ্টাব্যাপী সংঘর্ষে এ ঘটনা ঘটে। আহতদের লক্ষ্মীপুর সদর হাসপাতালসহ বিভিন্ন ক্লিনিকে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে। পরে পুলিশ কাঁদানী গ্যাস ও টিয়ারসেল নিক্ষেপ করে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।
প্রত্যক্ষদর্শী ও পুলিশ জানায়, বিএনপি ও আওয়ামী লীগ এই দুই দলের পূর্বনির্ধারিত পৃথক কর্মসূচি পালন করার উদ্দেশ্যে দলীয় নেতাকর্মীরা শহরে খণ্ড খণ্ড মিছিল নিয়ে সমবেত হতে শুরু করেন। বিকাল ৪টার দিকে বিএনপি ও সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীরা দলের কেন্দ্রীয় প্রচার সম্পাদক এ্যানি চৌধুরীর নেতৃত্বে শহরের গোডাউন রোড থেকে পদযাত্রায় মিছিল নিয়ে বের হন। এ সময় শহরের সামাদ একাডেমির মোড়ে আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীদের ব্যানার ফেস্টুন ছেঁড়া শুরু করে বিএনপির কর্মীরা। মিছিলের মাঝামাঝি স্থান থেকে বিএনপির ৩০-৪০ জন নেতাকর্মী হঠাৎ করে কলেজ রোডের দিকে আওয়ামী লীগের শান্তি সমাবেশ আসা ১৫-২০ জনকে ধাওয়া করে। এ সময় দুটি অটোরিকশা ও একটি অ্যাকুরিয়ামের দোকানে হামলা চালায় তারা। এতে দোকানি ও পথচারীসহ পাঁচজন আহত হন। এ সময় গুরুতর আহত অবস্থায় মদিনউল্যাহ হাউজিংয়ের একটি ভবনের দ্বিতীয় তলায় আশ্রয়ের জন্য দৌড়ে গিয়ে লুটিয়ে পড়ে এক যুবক। এর কিছুক্ষণ পর ওই যুবক প্রচুর রক্তক্ষরণে মারা যায় বলে জানান বাড়ির মালিক। বাড়ির মালিক তার নাম সজিব বলে জানান। খবর পেয়ে পুলিশ মরদেহ উদ্ধার করে হাসপাতাল মর্গে পাঠান।
এদিকে বিএনপির মিছিলটি ঝুমুর এলাকায় পৌঁছালে পেছন থেকে ছাত্রলীগের লোকজন তাদের ধাওয়া করে। একইভাবে শহরের বাগবাড়ী এলাকায়ও সংঘর্ষ জড়ায় বিএনপি ও আওয়ামী লীগ। এদিকে ঝুমুর এলাকায় বিএনপির নেতাকর্মীরা মিছিল নিয়ে হাইওয়ে সড়কে উঠতে গেলে পুলিশ বাধা দেয়। এ সময় পুলিশকে লক্ষ্য করে ইট-পাটকেল ছোড়ে তারা। পরে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে পুলিশ কয়েক রাউন্ড ফাঁকা গুলি, টিয়ারসেল ও কাঁদানে গ্যাস নিক্ষেপ করে। এতে পুলিশসহ উভয়পক্ষের কমপক্ষে আরও ২০ জন আহত হন।
লক্ষ্মীপুরের পুলিশ সুপার মো. মাহফুজ্জামান আশরাফ জানান, বিএনপি মিছিল নিয়ে নাশকতার উদ্দেশ্যে হাইওয়ে সড়কে উঠতে চাইলে পুলিশ বাধা দিলে তারা পুলিশের ওপর হামলা চালায়। এ সময় পুলিশ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে কয়েক রাউন্ড ফাঁকা গুলি ছোড়ে। বিএনপির হামলায় সদর থানার ওসি মোসলেহ উদ্দিনসহ পুলিশের ১০ জন আহত হন বলে জানান তিনি।
তবে নিহতের ঘটনায় পুলিশের কোনো বক্তব্য পাওয়া যায়নি।