ভারতে বিরোধী ২৬ দলের নতুন জোটের নাম যে সময় ঘোষণা হলো, তার কিছুক্ষণ পরেই মিত্র ৩৮ দলকে নিয়ে বৈঠকে বসলেন ভারতীয় প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। বিজেপির পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, এই বৈঠকের লক্ষ্য ‘জাতীয় অগ্রগতি ও আঞ্চলিক আকাঙ্ক্ষা পূরণ’। তবে ভারতীয় কংগ্রেসের দাবি, বিরোধীদের ঐক্যবদ্ধ হতে দেখে ভয় পেয়েছেন নরেন্দ্র মোদি। এ জন্যই ‘ছোটখাটো’ দলগুলোকে একসঙ্গে করার চেষ্টা করছেন তিনি।
ভারতীয় সংবাদমাধ্যম এনডিটিভির খবর অনুসারে, মঙ্গলবার (১৮ জুলাই) যে ৩৮টি দলের বৈঠক হয়েছে, তার বেশিরভাগই ছোট মিত্র। আঞ্চলিক পর্যায়ে এদের হয়তো প্রভাব রয়েছে, তবে কোনো এমপি নেই অথবা থাকলেও খুব কম। ছোটখাটো এই দলগুলো আশা করছে, প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠক তাদের আগামী নির্বাচনে আরও বেশি আসনের আকাঙ্ক্ষা পূরণের সুযোগ করে দেবে।
২০২৪ সালের লোকসভা নির্বাচন ঘিরে বেশ মেপে মেপে পা ফেলছে বিজেপি। তারা এরই মধ্যে ভারতের উত্তরাঞ্চলের বেশিরভাগ রাজ্যে শক্তিশালী। এবার দক্ষিণ, পশ্চিম ও উত্তর-পূর্বে শক্তি বাড়ানোর পরিকল্পনা নিয়েছে দলটি।
উত্তর প্রদেশ এবং বিহারের মতো গুরুত্বপূর্ণ রাজ্যগুলোতে বিজেপি পশ্চাদপদ শ্রেণি, তফসিলি জাতি ও উপজাতিদের মধ্যে প্রভাব বিস্তারকারী দলগুলোর সঙ্গে হাত মিলিয়ে নিজেদের পদচিহ্ন প্রসারিত করতে চাইছে।
বিহারের মুখ্যমন্ত্রী নীতিশ কুমার স্থানীয় বেশিরভাগ দলকেই বিরোধী মহাজোটে যুক্ত করে নিয়েছেন। এর ফলে বিজেপির জন্য পড়ে রয়েছে কেবল দুর্বল জনশক্তি পার্টি। কেন্দ্রে ক্ষমতাসীন দলটি এখন চিরাগ পাসওয়ান ও তার চাচার মধ্যে পুনর্মিলন কাজে লাগানোর চেষ্টা করছে। এটি সফল হলে ছয় শতাংশ পাসোয়ান ভোট অন্তত তাদের পকেটে যাওয়ার সুযোগ তৈরি হবে।
বিহারের আরও তিনটি দল- রাষ্ট্রীয় লোক সমতা পার্টির উপেন্দ্র সিং কুশওয়াহা, বিকাশশীল ইনসান পার্টির মুকেশ সাহানি এবং হিন্দুস্তানি আওয়াম মোর্চার জিতিন রাম মাঞ্জি নরেন্দ্র মোদির নেতৃত্বাধীন এনডিএ-তে যোগ দেবেন বলে আশা করা হচ্ছে।
দক্ষিণে অভিনেতা পবন কল্যাণের জনসেনা এবং কেরালা কংগ্রেসের বিচ্ছিন্ন অংশকে জোটে টানার চেষ্টা করছে বিজেপি।
আগামী বছরের সাধারণ নির্বাচন সামনে রেখে নরেন্দ্র মোদির জাতীয় গণতান্ত্রিক জোটের (এনডিএ) এ ধরনের প্রথম বৈঠক এটি। যদিও কয়েকদিন আগেই এই বৈঠকের কথা ঘোষণা করা হয়েছিল। তবে কংগ্রেস প্রধান মল্লিকার্জুন খাড়গে দাবি করেছেন, এটি বিজেপি-বিরোধীদের ঐক্যবদ্ধ হওয়ারই প্রতিক্রিয়া।
তিনি বলেছেন, তারা (বিজেপি) আগে কখনোই (শরিকদের) পাত্তা দেয়নি। কখনো কথা বলেনি… টুকরো টুকরো হয়ে গিয়েছিল (এনডিএ)… এখন প্রধানমন্ত্রী তাদের একত্রিত করার চেষ্টা করছেন। এটিই দেখিয়ে দিচ্ছে, তিনি বিরোধীদের ভয় পাচ্ছেন।
এনডিএ জোটের বৈঠকে অংশ নেওয়া দলগুলো সম্পর্কে কংগ্রেস সভাপতির মন্তব্য, তারা কারা জানি না। যদি তারা নিবন্ধিত দল হয়, আমি কোনোদিন শুনিনি যে ভারতে এত দল রয়েছে।